চাইলেই কি আর মনের জোরে বয়স লুকিয়ে রাখা যায়? না যায় না, সেটা সম্ভবও না। আর সম্ভব না বলেই বিরাট কোহলি নামক অখণ্ড উপন্যাসের শেষ পাতা পড়তে হচ্ছে ক্রিকেট ভক্তদের। চোখেমুখে বয়সের ছাপ, পাক ধরেছে চাপ দাড়িতে, আর এজন্যই ধীরে ধীরে বিরাট গুটিয়ে নিচ্ছেন নিজেকে।
২০২৫ সালের ১২ মে, ক্ষমতা থাকলে হয়তো অনেক ক্রিকেট ভক্তরা ক্যালেন্ডারের পাতায় এই তারিখটি আসতে দিত না।
এই দিনে আবেগঘন এক পোস্টের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান কোহলি। লিখেছিলেন, সিদ্ধান্তটা নেওয়া তার জন্য খুব কঠিন ছিল, তবে সময়টা উপযুক্ত মনে হয়েছিল। বিরাট টেস্ট ক্রিকেট সবসময় সবার উপরেই রাখতেন, তিনি জানান, টেস্ট ক্রিকেট তাকে যা দিয়েছে, তা কল্পনারও ঊর্ধ্বে।
প্রায় দুই মাস হতে চললো বিরাটের টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণার। এরপর আর এ নিয়ে সরাসরি কথা বলেননি তিনি। অবশেষে প্রকাশ্যে অবসর নিয়ে মুখ খুললেন এই ক্রিকেট কিংবদন্তি।
২০২৫ সালের ৮ জুলাই লন্ডনে যুবরাজ সিংয়ের ইউ উই ক্যান ফাউন্ডেশনের আয়োজিত একটি চ্যারিটি ইভেন্টে অংশ নেন কোহলি। কেভিন পিটারসেন, ক্রিস গেইল, রবি শাস্ত্রীসহ ক্রিকেট তারকাদের একটা নস্টালজিক মুহূর্ত ফিরে এসেছিল সেখানে।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে হাসিমুখে নিজের অবসরের প্রসঙ্গ টেনে কোহলি বলেন, ‘মাত্র দুই দিন আগে দাড়িতে রং করলাম। যখন প্রতি চার দিনে একবার দাড়িতে রং দিতে হয়, তখনই বোঝা যায় সময় হয়েছে থামার।’
কোহলি অবলীলায় তীক্ষ্ণ একটা ব্যথা দিয়ে গেলেন সবাইকে। টি-টোয়েন্টি ছাড়ার পর টেস্ট ছেড়েছেন, এবার একটা ইঙ্গিত হয়তো দিলেন— সময়ের কাটা যে সবকিছু গুছিয়ে ফেলার তাড়া দিচ্ছে।
সময় এভাবেই হয়তো ফুরিয়ে যাবে, শেষ ট্রেনে প্রিয় মাঠ ছেড়ে কোহলি ফিরে যাবেন। প্রিয় গ্যালারি, বাইশ গজ কিংবা সেই স্বপ্নের ড্রেসিংরুমের সাথে সব লেনাদেনা মিটিয়ে চলে যাবেন। সুযোগ পেলে যখন ভারতের খেলা দেখতে আসবেন, মাঠটা হয়তো তাকে মনে করাবে, একদিন তুমি এসেছিলে, একদিন ভালোবেসেছিলে।