প্রয়োজন, স্রেফ এই এক নিরিখে টি-টোয়েন্টি দলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কিন্তু আদোতে সাইফউদ্দিনের প্রয়োজনীয়তা কি আছে দলে? অধিনায়ক লিটন দাসের বক্তব্যের রেশ ধরেই বলা যায় যে সেই অর্থে সাইফউদ্দিনের প্রয়োজনীয়তা শূন্যের কাছাকাছি। তানজিম হাসান সাকিব চাইলেই সে জায়গা পূরণ করতে পারতেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে, লিটন বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশ অনেকদিন ধরেই একজন অলরাউন্ডার (পেস বোলিং) মিস করতেছিল। যদিও বা আমরা চেষ্টা করছি সাকিবকে (তানজিম সাকিব) সে জায়গায় অলরাউন্ডার হিসেবে ব্যবহার করা, এবং সে বেশ কিছু ম্যাচে ভাল ব্যাটিং করেছে।’
এইটুকুই বলে দেয় বাংলাদেশ দলের চাহিদা মেটানোর জন্যে তানজিম সাকিবই ছিলেন যথেষ্ট। তবুও সাইফউদ্দিনকে সুযোগ দেওয়া হল। সেই সুযোগ দিতে গিয়ে একাদশ থেকে কর্তন করা হল একজন জাত বোলারকে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মুস্তাফিজুর রহমানকে অগ্রাহ্য করার উপায় কি আদোতে আছে? তাছাড়া সাইফউদ্দিন দলে জায়গা পাওয়ার জন্যে ধারাবাহিকভাবে পারফরম কি করেছেন?
তবুও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুস্তাফিজকে ছাড়াই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। বেশ হঠকারী সিদ্ধান্ত! তার পরিবর্তে যে সাইফউদ্দিনকে নেওয়া তিনি তিন ওভারে ২২ রান খরচায় নিয়েছেন একটি উইকেট। সেই উইকেট প্রাপ্তি কৃতীত্ব অবশ্য শামীম হোসেন পাটোয়ারির বেশি প্রাপ্য। দারুণ ক্যাচ ধরে সাইফের দুর্বিষহ শুরুটাকে আড়াল করেছেন তিনি। টানা তিন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সাইফকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পাথুম নিসাঙ্কা।
বাংলাদেশ এক মধ্যবিত্ত মানসিকতার বলি হয়েছে প্রতিবার। দলের ব্যাটিং অর্ডার হরহামেশাই বিপর্যস্ত হয়ে যায়। তার সমাধান হিসেবে দলে অতিরিক্ত ব্যাটার খেলানোর প্রবণতা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনা বাংলাদেশ দল। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ইনিংসের হাল ধরার সময় কই? এই ফরম্যাটে সাত-আটজন ব্যাটার ব্যাটিং করবেন কখন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজে না বাংলাদেশ। ব্যাটিং বিপর্যয়ের ভয় কুড়েকুড়ে খায় তাদের। অথচ একাদশে থাকা চার ওপেনার মিলে ৭৯ বল গিলে ফেলেন চোখের পলকে। রান তোলেন স্রেফ ৯২টি। এরপরে সাত বা আট নম্বরে কেউ একজন ব্যাটিং করতে পারবেন- এমন খেলোয়াড়কে দলে নেওয়ার যৌক্তিক কারণ দাঁড় করানো ভীষণ কষ্টকর।
কোন একদিন ব্যাটিং করবেন সাইফউদ্দিন, সে দিনের আশায় দলের বোলিং ডিপার্টমেন্টকে খর্বশক্তিতে রুপান্তরিত করবার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত স্রেফ বাংলাদেশের পক্ষেই নেওয়া সম্ভব। এমন নিরর্থক সব সিদ্ধান্তের নিচে চাপা পড়ে পিষ্ট হচ্ছে দেশের ক্রিকেটের অগ্রগতি। কারণ পারফরম্যান্স নয়, প্রয়োজনীয়তাই মুখ্য!