শ্রীলঙ্কা বড় অদ্ভুত এক জায়গা। কখন কার সাথে কোথায় দেখা হয়ে যায়, বলা মুশকিল। এই যেমন পাথুম নিশাঙ্কার সাথে দেখা হয়ে গেল গ্রামের ধারে একটা ডাবের দোকানে।
ক্যান্ডি থেকে ডাম্বুলার দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। আঁকাবাকা পথ বেয়ে ছুটে চলছে গাড়ি। এই বিশাল যাত্রাপথে ডাব না হলে কি চলে। শ্রীলঙ্কার ডাব আবার সুবিখ্যাত। সেই সন্ধানে নাউলা নামের একটা জায়গায় গাড়ি থামল। গোল বাঁধল, মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে। দোকানিকে ইংরেজিতে কিছু বোঝানো গেল না।
তখন কালো টি-শার্ট পরা এক লঙ্কান পাশেই বসে পরিবারের সাথে ডাব খাচ্ছিলেন। চোখে রোদ চশমা, দেখে মনে হল তিনি নিশ্চয়ই ইংরেজি বুঝবেন। তাঁর শরণাপন্ন হতে হল। অনুরোধ করা হল, অনুবাদ করে দেওয়া সম্ভব কি না? পাশ থেকে রাকিব হোসেন রুম্মান বললেন, আরে ওকে দেখতে তো নিশাঙ্কার মত লাগে।
সত্যিই তাই। তিনি সত্যি পাথুম নিশাঙ্কা। চেহারা দেখে চেনা না গেলেও হাতে ট্যাটু কি করে মিথ্যা বলে। আগের দিন রাতেই ১৬ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে পিটিয়ে ছাতু বানিয়েছেন। সেই তিনি স্ত্রী এষা কুমারাসিংহে আর ৮ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে এক অঁজপাড়াগায়ে ডাব খেতে বসে গেলেন। পাশেই দাঁড়ানো তাঁর অডি গাড়ি। গন্তব্য দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির ভেন্যু ডাম্বুলা। মাঝে একটু যাত্রাবিরতি।
ইন্টারভিউ দেওয়া বারণ, সিরিজের মাঝ পথে কোনো ভাবেই না। কিন্তু আড্ডা দেওয়া আটকায় কে। তাই সই। নির্মল মিনিট বিশেকের আড্ডা হল। আড্ডায় খুব একটা ক্রিকেট নেই। তাঁর স্ত্রী এষাও যোগ দিলেন আড্ডায়।
মজার ব্যাপার হল, ডাবের দোকানির ক্রিকেট নিয়ে তেমন কোনো ধারণাই নেই। পাথুম নিশাঙ্কা কত বড় ক্রিকেটার, সেটা তিনি জানেনই না। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে এরকম দৃশ্য সম্ভবত কল্পনাও করা যাবে না।
দল ডাম্বুলায় যাবে বিকালে, নিশাঙ্কা আলাদা করে চলে যাচ্ছেন পরিবারের সাথে। যাওয়ার সময় গাড়িতে উঠে বললেন, ডাম্বুলায় দেখা হবে। সেই দেখায় এবার কোনো বড় ইনিংস না হলেই হয়!