লিটন দাস এখন আর ব্যাটের রান দিয়ে নয়, টিকে আছেন বোর্ডের দয়ায়, কিংবা অধিনায়কত্বের কোটায়। তাঁকে একাদশে রাখতে বারবার আপস করছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারতে, আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে। সেখানেই এই দলে অধিনায়ক লিটন দাস! এর আগে তিনি রান করছেন গুণে গুণে, দলের ওপর কোনো প্রভাব নেই।
সাতটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন — হেরেছেন ছয়টাতেই। এই পরিসংখ্যানেই বোঝা যায়, নেতৃত্ব দিচ্ছেন না, তাঁর ওপর নেতৃত্ব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাটিংয়ের অবস্থা আরও করুণ। দু’বার চল্লিশের ঘরে গেছেন, তবে সেটাতে দলের উপকার হয়নি। গত এক বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিং যত হতাশার গল্প উপহার দিয়েছে, সেখানে খলনায়ক বনে গেছেন লিটন।
আর ওয়ানডেতে অবস্থা আরও ভয়াবহ। ২০২৪ থেকে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ছয় ওয়ানডে। সেখানে রান মাত্র ছয়টি। ডাক চারটি। সর্বশেষ হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২০২৩ সালের অক্টোবরে। ওয়ানডে একাদশ থেকে জায়গাও হারিয়েছেন।
তারপরও তিনি টি-টোয়েন্টি দলে খেলে যাচ্ছেন, কারণ তিনি অধিনায়ক। বিশ্বের বাকি দলগুলো যখন ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির পরিকল্পনা করে একই সাথে, তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) হাঁটে ভিন্ন পথে।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে দাবি করেছিলেন ৫০ লাখ টাকা! মানে ম্যাচপ্রতি ৩ লাখ ৩০ হাজার। কোনো ক্লাবই তাকে নিতে রাজি হয়নি। পরে তামিম ইকবালের দ্বারস্থ হয়ে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবে আশ্রয় পান। সেখানে ছয় ম্যাচে করেন ২৩৭ রান, গড় ৩৯.৫০, স্ট্রাইক রেট ৯৪!
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে জায়গা হারানো লিটনকে আবারও ফিরিয়ে আনা হয় ওয়ানডে সেট-আপে। কিন্তু, লিটনের অধারাবাহিকতা অব্যহত রয়েছে। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি দলেও সেই নেতিবাচকতা ছড়িয়ে পড়ছে। বারবার তিনি ম্যাচ হারের কারণে পরিণত হচ্ছেন।
শ্রীলঙ্কার পাল্লেকেলের প্রথম ওয়ানডেতে দুই ওপেনারের দারুণ শুরুর পর নামেন লিটন। ১১ বলে করলেন ৬ রান। সেখানেই ম্যাচের লাগাম হারায় বাংলাদেশ। এমন উদাহরণ আরও আছে, যেমন লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ। ওপেনিংয়ে তামিম-ইমন গড়লেন ১০০ রানের জুটি। এরপর এলেন লিটন, ১৮ বলে ২২ রান করলেন। বিশুদ্ধ ব্যাটিং উইকেটে এভাবে ব্যাট করা যায় না।
এই পরিস্থিতিতে লিটনের অধিনায়ক হিসেবে টিকে যাওয়ার অর্থ হল, তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংকে বোর্ডের পক্ষ থেকে বৈধতা দেওয়া। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যখন আরেকটা সিরিজ হারের দুয়ারে বাংলাদেশ, তখন বোর্ডের এই বৈধতা প্রদান ইস্যু প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বারবার।