টি-টোয়েন্টিতে মেহেদী হাসান মিরাজ চলনসই নয়। বিশেষ করে পাঁচ নম্বরের ব্যাটিংয়ে যেমন মারকাটারি ইনিংস খেলার প্রয়োজন হয়, সেটা আদৌ সম্ভব নয়। কারণ, তিনি প্লেসমেন্ট নির্ভর ক্রিকেটার নন, পাওয়ার হিটারও নন। তিনি স্লগার হতে পারেন চাইলে। এটা কোনোদিন কাজে আসবে, কোনো দিন কাজে আসবে না।
তিনি ধীরেসুস্থে ইনিংস বিল্ড আপ করতে পারবেন। কিন্তু, টি-টোয়েন্টির মিডল অর্ডারে তার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। যেটা হয়, তিনি বরাবর এমন একটা ইনিংস খেলে দিয়ে যান, যার ফলে বাকিদের ওপর চাপ পড়ে।
ডাম্বুলায় যেমন, দুই বলে এক রান করে একটা চিকি শট খেলতে গিয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে। এরকম ইনিংস পরের ব্যাটারদের ওপর অহেতুক চাপ সৃষ্টি করে। অন্যদিকে শামিম হোসেন পাটোয়ারি টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ ব্যাটার, তিনি আরেকটু বেশি প্লেয়িং টাইম ডিজার্ভ করেন।
এমনকি মিরাজের বোলিংয়েও কোনো এক্স ফ্যাক্টর নেই, যা তাকে টি-টোয়েন্টিতে অবধারিত করে তুলতেই পারে। টি-টোয়েন্টিতে যদি মিরাজকে অলরাউন্ডার রোল দেওয়াই হয়, তাহলে মিরাজকে খেলাতে হবে টপ অর্ডারে। ওপেনিংয়ে বা তিন নম্বরে। স্লগ করতে পারেন বলে, কেবল পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই মিরাজের ব্যাটিং কাজে লাগানো যেতে পারে।
কিন্তু, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন কিংবা লিটন দাস থাকতে সেটা সম্ভব নয়। তাহলে সমাধান কি? সমাধান হল, মিরাজকে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ দিতে হবে। মিরাজ নিজেও কিছুদিন আগে বলেছেন, দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তিনি খেলতে চান না।
তাহলে বিসিবি কেন তাঁকে বারবার অল ফরম্যাট ক্রিকেটার বানানোর ঝুঁকি নিচ্ছে! আর জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখ এক গাদা মিনি অলরাউন্ডার। মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন কিংবা তানজিম হাসান সাকিব – সবাই মোটামুটি এক ক্যালিবারের ব্যাটার। এদের সবাই এক দিনে ক্লিক করবে – এই প্রত্যাশা করা যাবে না।
তাঁদের কাছ থেকে প্রতিদিন ব্যাট হাতে ইমপ্যাক্ট রাখার আশা করা যাবে না। মিরাজ চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাঁর সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা আছে। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তিনি ২৩ বলে ২৯ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১২৬।
মিরাজ এটাকে কোনোদিন বাড়িয়ে ১৪০-এ নিতে পারবেন, কিন্তু চাইলেই একদিন ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে তিনি ২০০ স্ট্রাইক রেটে মিডল ওভারে রান তুলতে পারবেন না। টি-টোয়েন্টিতে মিরাজের ব্যাটিং অচল ঠিক এই জায়গাতেই।
মিরাজ ডাম্বুলাতে মাত্র দুই বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। কার্যত তিনি আউট হওয়াতে বাংলাদেশের উপকারই হয়েছে। তিনি যত বেশি সময় উইকেটে থাকবেন, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা তত কমবে।