শততম টেস্টে স্টার্কের রেকর্ড, বোল্যান্ডের হ্যাট্রিক, লজ্জায় লাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

একশোতম টেস্ট, গোলাপি বল হাতে প্রস্তুত মিশেল স্টার্ক। যেন তারায় তারায় রটিয়ে দেয়ার মত খবর, এই সন্ধ্যায় কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু স্যাবাইনা পার্কে যে পাগলামি রচিত হলো, তা রটিয়ে দেয়ার সময় পাওয়া গেল কই!

স্টার্কের প্রথম বলেই উইকেট, প্রথম ওভারে তিনখানা! ৪ নাম্বার উইকেট যখন তুলছেন, তখনও রান দেন নি একটিও। এদিকে পূর্ণ হয়ে গেছে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৪০০ তম উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এই অর্জন কেবল চারজনের: ওয়ার্ন, ম্যাকগ্রা, লায়ন- আর এখন স্টার্ক। নামগুলো একে একে পড়লে মনে হয়, যেন কোনও মহাকাব্যের চরিত্র।

২ রানে এসেছে উইকেট নাম্বার ৫। মাত্র ১৫ বলে! টেস্ট ইতিহাসে এত দ্রুত ৫ উইকেট পাওয়া হয় নি কারোই। ইয়ান বিশপ তখন ধারাভাষ্যকক্ষে বলছেন, ‘He is a great. We are lucky to see him.’ ভাগ্যিস শাই হোপ দুটো রান করেছিলেন, ০ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেয়ার গ্রেটনেস দেখা ব্যাটারদের জন্য খুব একটা স্বস্তিকর হত না।

অজি পাগলামির শেষ কি এখানেই? না, স্কট বোলান্ড যে তখনও বাকি। যেন তিনি অপেক্ষা করছিলেন মহড়ার পর মূল নাটকে প্রবেশের জন্য। গ্রিভসকে স্লিপে, শামারকে এলবিডব্লু, তারপর হ্যাট্রিক বলেই ওয়ারিকান। এক নিখুঁত সিম, এক নিঃশব্দ বাউন্স, টপ অব অফ স্ট্যাম্প, আর এক জয়োল্লাস। হ্যাট্রিক! দশম অজি ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ইতিহাসে হ্যাট্রিকের মালিক বোলান্ড। অথচ নিয়মিত খেলার সুযোগই পান না।

চোখের পলকে উইন্ডিজের স্কোর ২৬/৯। ১৯৫৫ সালের নিউজিল্যান্ডের সেই লজ্জার রেকর্ড ছুয়ে দাঁড়িয়ে, টেস্টে সর্বনিম্ন রানের ইনিংস। লজ্জা বাচাতে তখনও চাই ১ রান।

সেই এক রানও হলো ভুলবশত, স্যাম কন্সটাসের গালিতে এক দৃষ্টিকটু মিসফিল্ডিংয়ের কারণে। পরের বলেই স্টার্কের শেষ আঘাত। ৯ রানে ৬ উইকেট, ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অল আউট মাত্র ১৪.৩ ওভারে।

অথচ শুরুতে লক্ষ্যটা খুব বড় ছিলো না, মাত্র ২০৪ রান। কিন্তু স্টার্ক যেন ক্যারিবীয় সুরের মাঝে ঢুকে পড়া এক ঝড়ের নাম। তার বলের আঁচড়ে সব ছিড়ে ছারখার। ১৭৬ রানের হারের ব্যবধানটাও তখন পাহাড় সমান। ৩-০ তে সিরিজ জয় যেন কেবলই সেই গ্রেটনেসের স্বীকৃতি।

Share via
Copy link