প্রশ্ন যাই হোক, উত্তর তাঁর ‘ফিক্সড’

প্রশ্ন হল, কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সালাহউদ্দিন অধ্যায়, জানতে সময়ের অপেক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ই কেবল হতে পারে তাঁর জন্য পরম আরাধ্য এক লাইফ লাইন।

এক বুক ভরা অভিমান নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসলেন কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এই মুহূর্তে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের আলোচিত-সমালোচিত চরিত্র তিনি। দলের ভেতরে ও বাইরে অনেক রকম অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।

নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর শুরু হল সংবাদ সম্মেলন। টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবাল এসেই ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। সালাহউদ্দিন জানালেন নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা। তাঁর মতে, বাংলাদেশ দলে চাইলেই সব করা যায় না। এখানে ‘বিকল্প’ কম, কোচরা তো বটেই – এখানে নির্বাচকরাও অনেক সময় নিরুপায়।

সাম্প্রতিক সময়ে সালাহউদ্দিনের বিপক্ষে জমে উঠেছিল অভিযোগের পাহাড়। একাদশ নির্বাচন, খেলোয়াড়দের ব্যাটিং অর্ডার নির্ধারণ – এসব কিছু নাকি সালাহউদ্দিনই করেন। এমনকি দল নির্বাচনে তাঁর নিজস্ব একটা ‘পছন্দের তালিকা’ও আছে। অভিযোগ আছে—সালাউদ্দিন নাকি নিজের পছন্দের ক্রিকেটারদের সুযোগ দিচ্ছেন।

সালাহউদ্দিন অবশ্য নিজে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দেননি। বরং, তিনি অভিযোগগুলো বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে। আর সেখানেই তাঁর কণ্ঠে ছিল অভিমান ও অনুযোগের সুর।

তিনি বলেন, ‘বলা হয়েছে কোচ সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়। কিন্তু, অভিযোগগুলা কি সেগুলাও লিখে দিলে ভাল হত।’

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের চেয়ে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলা সহজ। দাবি করলেন, সেসব জায়গায় খেলোয়াড়রা অনেক উপভোগ করে খেলতে পারেন। বাংলাদেশে সেই সুযোগ নেই।

বললেন, ‘বাংলাদেশে খেললে সমালোচনা হবেই। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় খেলোয়াড়রা অনেক উপভোগ করতে পারে। এখানে সেই সুযোগ নেই। ওখানে ক্রিকেট না খেললেও অন্য চাকরি করা যায়, চাকরি না থাকলে ভাতা পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সেই ‍সুযোগ নেই। এখানকার ক্রিকেটারদের জন্য তাই ক্রিকেট খেলাটাই শেষ কথা।

সালাহউদ্দিনের সংবাদ সম্মেলন শুনে মনে হল, প্রশ্ন যাই হোক না কেন – উত্তরগুলো আগের থেকেই ভেবে এসেছেন তিনি। কারণ, সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের সাথে তাঁর উত্তরের তেমন কোনো মিল নেই।

বোর্ড সালাহউদ্দিনের ব্যাপারে দলের ভেতরে খোঁজ খবর নিচ্ছে। সেই দায়িত্ব নিয়েই শ্রীলঙ্কায় এসেছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। যদিও বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল একদিন আগেই জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিনকে সরানোর কোনো ইচ্ছা এই মুহূর্তে বোর্ডের নেই।

আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ব্যাটিং কোচকে আমরা লম্বা সময়ের জন্য রাখি। কারণ এটা লং প্রোসেস। সালাউদ্দিন ভালো করছে, সিরিজের মাঝখানে কমেন্ট করব না। এই মুহূর্তে তাকে পরিবর্তনের চিন্তা নেই।’

অবশ্য, সালাহউদ্দিন চাকরি হারানোর ভয় করছেন না। তিনি জানালেন, তাঁর করার অনেক কিছু আছে। বললেন, ‘আমার চাকরি হারানোর ভয় নেই। আমি নিজে থেকে এখানে আসিনি। আমাকে ডেকে আনা হয়েছে। আমাকে সরানো হলেও আমার করার অনেক কিছুই আছে।’

প্রশ্ন হল, কোন দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সালাহউদ্দিন অধ্যায়, জানতে সময়ের অপেক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ই কেবল হতে পারে তাঁর জন্য পরম আরাধ্য এক লাইফ লাইন।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link