খেলোয়াড় সামনে চলে যাচ্ছেন কিন্তু বল যাচ্ছে না। কাদায় আটকে যাচ্ছে বল, ভাসছে পানিতে। গ্রামের মাঠে বিকালের ফুটবল ম্যাচের চিত্রনাট্য হলেও, মঞ্চ এবার কিংস এরেনা স্টেডিয়াম। অনূর্ধ্ব ২০ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এমন মাঠেই খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ এবং ভুটানের মেয়েরা।
প্রথমার্ধে খেলা যতটুকু হলো, কাদা মাখামাখি হলো যেন আরো বেশি। জয়-পরাজয়, গোল ছাপিয়ে তখন সবথেকে বড় দুশ্চিন্তা খেলোয়াড়দের নিরপত্তা। মূহুর্তের ব্যবধানে ঘটে যেতে পারে দূর্ঘটনা। কোচ পিটার বাটলারও এমনটাই জানিয়েছেন ম্যাচ শুরুর আগে। সত্যতাও মিলেছে বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচনে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের নয়জন খেলোয়াড়ই ছিলেন না ভুটানের বিপক্ষের একাদশে। অধিনায়ক আফিদা কিংবা তারকা খেলোয়াড় সাগরিকা, কাকে নিয়ে ঝুঁকি নেবে বাংলাদেশ?
তবুও এই কাদা-বৃষ্টির মধ্যের শান্তি মার্ডির ৭ মিনিটের গোলে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। হাফ টাইমের বিরতি পর্যন্ত জলকেলিতেই ব্যস্ত থাকতে হয় দুই দলের ফুটবলারদের।
অবশেষে টনক নড়ে ম্যাচ অফিসিয়ালদের। দুই দুইবার মাঠ পরিদর্শনের পরে তারা বুঝতে পারেন, এই মাঠে আসলেই ফুটবল খেলা সম্ভব নয়। ৩ ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকার পরে অবশেষে ম্যাচের মধ্যেই পরিবর্তিত হয় ভেন্যু। পার্শ্ববর্তী ট্রেনিং গ্রাউন্ডে শুরু হয় দ্বিতীয়ার্ধের ম্যাচ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ভুটান সমতায় ফিরলেও, শান্তি মার্ডির হ্যাট্রিক এবং মুনকির সলো গোলে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধান নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই অবশ্য স্বস্তি পায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ভুটানের বিপক্ষে খেলা শুরু না করা গেলে, করতে হত পয়েন্ট ভাগাভাগি। রাউন্ড রবিন লিগের এই টুর্নামেন্টে নেই কোন নক আউট, সেমি ফাইনাল কিংবা ফাইনাল। নিজেদের ৬ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে থাকা দলই হবে চ্যাম্পিয়ন। ফলে প্রতিটা ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। ভুটানের মত দলের সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি হতে পারতো ট্রফি হারানোর কারণ।
তবে বাংলাদেশের স্বস্তির জয় ছাপিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বৃষ্টির সিজনে আন্তঃমহাদেশীয় একটা টুর্নামেন্ট এমন মাঠে কেন আয়োজন করা হবে, যেখানে ‘ড্রেনেজ’ সিস্টেমের এমন বেহাল দশা? কিংস এরেনার প্রাকটিস গ্রাউন্ড খটখটে, অর্থাৎ ড্রেনেজ সিস্টেম চমৎকার। এত টাকা ব্যয়ে নির্মিত কিংস এরেনারই বা এমন বেহাল দশা কেন?