শচীন টেন্ডুলকারের পথেই হাঁটছিলেন শুভমান গিল। দলের বোঝা নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই করলেন তিনি ম্যানচেস্টারে। পরাজয়ের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে নিজের ব্যাটিংয়ে ছিল যার সমস্ত মনোযোগ। অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে শুভমান গিল সামনে থেকেই দিয়ে যাচ্ছেন নেতৃত্ব।
সিরিজের চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংস শেষে ৩১১ রানে পিছিয়ে ছিল ভারত। ইংল্যান্ডের জন্যে তখন জয়ের রাস্তা সহজ। তবে সেই রাস্তায় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন শুভমান গিল। তুলে নিলেন আরও একটি সেঞ্চুরি। চলমান ইংল্যান্ড সিরিজে এটি তার চতুর্থ শতক। এশিয়ান কোন ব্যাটার হিসেবে ইংল্যান্ডের বুকে শুভমান ছাড়িয়েছেন এক সিরিজে ৭০০ রানের মাইলফলক।
এছাড়াও অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে চারটি সেঞ্চুরি করার বিরল রেকর্ডেও যুক্ত হয়েছেন তরুণ এই ব্যাটার। তিনি ছাড়াও যে তালিকায় আছেন সুনীল গাভাস্কার ও স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। এতসব রেকর্ড গড়েও মলিন বদনে মাঠ ছেড়েছেন গিল। শতক করেও ছিলেন ভাবলেশহীন। যেন কিছুই করেননি।
এই ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেষ ভারতীয় সেঞ্চুরি ছিল শচীন টেন্ডুলকারের। ১৯৯০ সালের সেই টেস্ট ম্যাচে টেন্ডুলকার অবশ্য সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচ বাঁচাতে পেরেছিলেন। ১১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ভারতীয় এই কিংবদন্তি। সেই শচীনের সাথেই তো তুলনা হয় শুভমানের। তিনি তাইতো সেই শচীনই যেন হতে চেয়েছিলেন।
দলের পক্ষে নূন্যতম ফলাফল নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। ১০৩ রানে জোফরা আর্চারের শিকারে পরিণত হয়েছে ভারতের নয়া টেস্ট কাপ্তান। তাতে করে যেন বিষাদ ছেয়ে গেছে তার চোখেমুখে। দলের জন্যে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে না পারার আক্ষেপ বিমর্ষ করে দিয়েছিল তাকে।
একেই সম্ভবত বলে নিবেদন। একেই বলে লড়াকু মানসিকতা। সকল প্রতিকূলতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে দলের জন্যে লড়ে যাওয়া এই শুভমান বরং ভারতকে দিচ্ছেন ভরসার জোগান। ভুল হাতে নেই টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং লিগ্যাসি। অধিনায়কত্বের প্রথম অধ্যায়ের অপ্রাপ্তি থেকে হতেও তো পারে কোন এক মহাকাব্য।