ক্রিকেট মানেই এখন তারুণ্যের জয়গান। জাতীয় দলে অভিষেক হওয়ার পরেই নবীন অবস্থায় সবাই থাকেন ফর্মের শিখরে, আর বয়স টা বাড়তে বাড়তেই যেন ক্রমশই ভাটা পড়ে। কিন্তু সে যে রোহিত শর্মা, তাঁর কি আর বাকি আট-দশটা খেলোয়াড়ের মতো হলে হয়?
অধিকাংশ ব্যাটার যখন কুড়ির ঘরের মাঝামাঝি সময়ে নিজের সেরাটা খুঁজে পান। সেখানে দ্যা হিটম্যান যেন স্রোতের বিপরীতে নৌকা বেয়ে চলা এক ব্যাতিক্রমী নাবিক। বয়সটা ত্রিশ পার হবার পরেই বরং নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরিকে জাগিয়ে তুলেছেন রোহিত।
ত্রিশ পেরোনোর পর তথা ২০১৭ সালের পর থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১২৬ ম্যাচে ৫৮.০৭ গড়ে ৬৩৮৫ রান করেছেন জার্সি নাম্বার ফোরটি ফাইভ। তিন অঙ্কের সংখ্যা ছুঁয়েছেন ২৩টি বার। স্ট্রাইকরেইটও দারুণ, ১০০.৯৪!

এ পরিসংখ্যান গুলো কেবল সংখ্যা নয়, বরং রোহিতের পুনর্জন্মের গল্প। আর এ দ্বিতীয় জন্মের মূল চাবিকাঠি হলো ওপেনার হিসেবে আবির্ভাব হওয়া। মিডল অর্ডার থেকে ওপেনিংয়ে উন্নীত হওয়ার পর রোহিতের ইনিংসের ধর্মটাই বদলে যায়।
রান তোলার চাপ থেকে সরে এসে ফিরে পান ইনিংস গড়ার পূর্ণ স্বাধীনতা। সেখানে তাঁর স্ট্রোকপ্লে হয়ে ওঠে আরও ঝরঝরে, আরও মার্জিত, আরও নির্মম। ২০১৭ সালে মাত্র ২১ ম্যাচে ৭১.৮৩ গড়ে ১২৯৩ রান করেন। এ সংখ্যা গুলোই জানিয়ে দেন বর্ষ জুড়েই কতটা ভয়ংকর ছিলেন রোহিত। এরপর ২০১৮ এবং ২০১৯ সালেও বছর প্রতি ৫০ গড়ে এক হাজারের অধিক রান করেন।
পরবর্তীতে চোট কিংবা ফর্মের কারণে সাময়িক ওঠানামা হলেও পিছনের সারিতে হারিয়ে যাননি কখনোই। ২০২৩ সালে অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব নিয়েই হয়ে উঠেছেন আরও অনবদ্য। ২৭ ম্যাচে করেছেন ১২৫৫ রান। সাম্প্রতিক সময়েও ব্যাট হাতে দূর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন রোহিত। পরিসংখ্যান যা বলে রোহিতের গল্পটার তার থেকেও বেশ বড়। এটা ধৈর্যের গল্প। এটা সুসময়ের জন্য অপেক্ষা করার গল্প। এটা প্রমাণ করার গল্প যে মহানতা কখনো মেয়াদোত্তীর্ণ হয় না।











