আকিলের স্বপ্ন পূরণ করলো চেন্নাই সুপার কিংস

কিছু স্বপ্ন সময় নেয়। বছর পেরোয়, পরিস্থিতি বদলায়, কিন্তু স্বপ্ন থেমে থাকে না। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আকিল হোসেনের গল্পটাও যেন ঠিক তেমনই।

কিছু স্বপ্ন সময় নেয়। বছর পেরোয়, পরিস্থিতি বদলায়, কিন্তু স্বপ্ন থেমে থাকে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাঁহাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার আকিল হোসেনের গল্পটাও যেন ঠিক তেমনই- দীর্ঘ প্রতীক্ষার, অনুপ্রেরণার আর শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ নেওয়ার।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ২০২৬ নিলামে চেন্নাই সুপার কিংস দুই কোটি রুপির বিনিময়ে দলে নিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারকে। সম্প্রতি রবীন্দ্র জাদেজা রাজস্থান রয়্যালসে ট্রেড হয়ে যাওয়ার পর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিলো, তা পূরণের অংশবিশেষেই আকিল হোসেনকে দলে নেয় চেন্নাই। এ যাত্রা কেবল ক্রিকেটীয় সিদ্ধান্ত নয়, বরং এক আবেগঘন বৃত্তের পূর্ণতা।

আজ থেকে প্রায় এক যুগ আগে, তৎকালীন তরুণ আকিল হোসেন রবীন্দ্র জাদেজাকে নিজের আদর্শ হিসেবে দেখতেন। ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে জাদেজা যখন সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করে ‘গোল্ডেন বল’ জিতেছিলেন, আকিল তখন সদ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফার্স্ট ক্লাস অভিষেক করা ২০ বছর বয়সী এক তরুণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছিলেন ‘একদিন আমিও তাঁর মতো (জাদেজা) একজন খেলোয়াড় হতে চাই’।

সময় গড়িয়েছে। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে। চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে যেই ভূমিকাটি এতদিন জাদেজার হাত ধরে গড়ে উঠেছিল, ঠিক সেই জায়গাতেই এবার পা রাখতে চলেছেন আকিল।

আইপিএল ২০২৬ এর নিলামের পর আকিলের সেই পুরনো পোস্টের প্রতিক্রিয়া জানাতে ভোলেনি চেন্নাই। ফ্র‍্যাঞ্চাইজিটি নিজেদের অফিসিয়াল ফেইজবুক পেইজে ‘চল এটাকে বাস্তবে রূপ দিই’ মর্মে পোস্ট করে।

অভিজ্ঞতার দিক থেকে আকিল হোসেন কোনো অংশেই পিছিয়ে নন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ তিনি। ২৫০ এর বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন, যার মধ্যে ৮৭টি আন্তর্জাতিক। এই ফরম্যাটে তাঁর উইকেট সংখ্যা ২৩৭, গড় ২৫.০২ – যা তাঁর ধারাবাহিকতা ও কার্যকারিতার পরিচায়ক।

বিশ্বের প্রায় সব টি-টোয়েন্টি লিগেই নিজের দক্ষতার ছাপ রেখেছেন আকিল। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি), পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), আইএল টি-টোয়েন্টি কিংবা বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) – সবখানেই তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে আইপিএলে তাঁর উপস্থিতি এখনো সীমিত। ২০২৩ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলেছিলেন মাত্র একটি ম্যাচ।

সেই হিসেবে চেন্নাই সুপার কিংসে যোগ দেওয়া মানে আইপিএলের মঞ্চে আকিল হোসেনের নতুন যাত্রা শুরু হওয়া। আর এই অধ্যায় যে শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং স্বপ্ন পূরণের এক নীরব অতঃপর গভীর গল্প – তা বলাই বাহুল্য।

লেখক পরিচিতি

ক্রীড়াচর্চা হোক কাব্য-কথায়!

Share via
Copy link