নির্বাচকদের সাথে যুদ্ধ, কুম্বলের ঢাল হয়েছিলেন গাঙ্গুলি

তখন ২০০৩ সাল। ভারতের অধিনায়ক হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলির সময়টা তখন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল। সামনে অস্ট্রেলিয়া সফর—বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি।

তখন ২০০৩ সাল। ভারতের অধিনায়ক হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলির সময়টা তখন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল। সামনে অস্ট্রেলিয়া সফর—বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি।

ঠিক সেই সময়েই বিসিসিআই নির্বাচকদের সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন প্রিন্স অব ক্যালকাটা। প্রশ্নটা ছিল একটাই—দলে কি থাকবেন অনিল কুম্বলে?

২০০১ সালের ঐতিহাসিক ভারত–অস্ট্রেলিয়া সিরিজে কাঁধের চোটের কারণে খেলতে পারেননি কুম্বলে। তবে চোট কাটিয়ে ফেরার পর আবার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ভারতের প্রধান স্পিনার হিসেবে। তবুও নির্বাচকরা ভাবছিলেন, অস্ট্রেলিয়া সফরে কুম্বলেকে বাদ দিয়েই দল গড়া যায়। তাদের যুক্তি ছিল, এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করা বাঁহাতি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরির সাফল্য।

কিন্তু সৌরভ গাঙ্গুলির কাছে এই চিন্তাধারা ছিল একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। গাঙ্গুলি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কুম্বলে ছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন না। এমনকি নিজের অধিনায়কত্ব ঝুঁকির মুখে ফেলতেও রাজি ছিলেন তিনি। পরে হার্শা ভোগলের সঙ্গে ‘দ্য ক্যাপ্টেন’স কাম’ অনুষ্ঠানে সেই রাতের কথা স্মরণ করেন সৌরভ।

তিনি বলেন, ‘হায়দ্রাবাদে সেমিফাইনালের পর আমাকে বলা হয়েছিল, দল ভালো না করলে হয়তো আমি আর অধিনায়ক থাকব না। আমি বলেছিলাম—সিরিজ শেষ হলে দেখা যাবে।’

শেষ পর্যন্ত গাঙ্গুলির সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণিত হয়। তিনটি টেস্টে ২৪ উইকেট নিয়ে সিরিজের অন্যতম নায়ক হয়ে ওঠেন অনিল কুম্বলে। সিডনিতে তাঁর ৮ উইকেট আজও ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলিং হিসেবে স্মরণীয়। সেই সিরিজ ড্র করে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি ধরে রাখে ভারত।

অস্ট্রেলিয়া সফরের সাফল্যের পর পাকিস্তান সফরেও ইতিহাস গড়ে গাঙ্গুলির দল। ১৫ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে—দুটো সিরিজই জেতে ভারত। সেই সফর গাঙ্গুলিকে আরও শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। তিনি হয়ে ওঠেন ভারতের অন্যতম সাহসী ও প্রভাবশালী অধিনায়ক।

Share via
Copy link