কিছু কিছু চরিত্র থাকে, রাজ্য জয়ের পরও তারা থেকে যান আড়ালে। এমন এক চরিত্র উর্ভিল প্যাটেল। ভারতের গুজরাটের ক্রিকেটার। আসন্ন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে, চেন্নাই সুপার কিংসের একাদশে কারা কারা জায়গা পাবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে উর্ভিল প্যাটেলের নাম নিয়েছেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তার জন্য একাদশের একটি স্থান নির্দ্বিধায় ছেড়ে দেবে চেন্নাই।
এই উর্ভিল প্যাটেল কে? এমন প্রশ্ন আসতেই পারে মাথায়, যারা কি-না খুব নিবিড়ভাবে ক্রিকেটের খুঁটিনাটি ঘাটাঘাটি করেন না তাদের। এই প্রশ্নের খোরাক মেটাতে পারে একটিমাত্র রেকর্ড- সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে ২৮ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে উর্ভিল প্যাটেলের। যৌথভাবে এই রেকর্ডের মালিক তিনি। যা কি-না ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।
২০২৪ সালে গুজরাটের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকানোর সেই মৌসুমে, তিনি ৬ ম্যাচে করেছিলেন ৩১৫ রান। তার স্ট্রাইকরেট ছিল সবচেয়ে চমকপ্রদ, প্রায় ২৩০। অথচ, এমন বিধ্বংসী ব্যাটার ২০২৫ সালের আইপিএলের নিলামে ছিলেন অবিক্রীত। টুর্নামেন্টের মাঝপথে তাকে স্রেফ ৩০ লাখ রুপিতে দলে ভিড়িয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস, অন্য এক খেলোয়াড়ের বদলি হিসেবে।

এরপর চেন্নাইয়ের জার্সিতে তিনি তিনটি ম্যাচ খেলেছেন গত মৌসুমে। সেই তিন ম্যাচের একটিতে ১৯ বলে ৩৭ রান করেছিলেন তিনি। আর সেই তিন ম্যাচ মিলিয়ে তার স্ট্রাইকরেট ছিল প্রায় ২১২। সদ্য সমাপ্ত মুশতাক আলী ট্রফিতেও তার বিধ্বংসী ব্যাটিং ছিল অব্যাহত। প্রায় ২৪৪ স্ট্রাইকরেটে তিনি ব্যাট চালিয়েছেন সাত ম্যাচে। তার ব্যাটে রান এসেছে ১৯৫।
এমনকি ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিকও এই উর্ভিল প্যাটেল। ৩১ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে তার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এমন একজন আক্রমণাত্মক ব্যাটার পর্দার আড়ালেই রয়ে গেছেন। আলোচনার কেন্দ্রে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি কখনোই।
কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন আইপিএলে উর্ভিল বনে যেতে পারেন অন্যতম টপ পারফরমার। তার সাথে সাঞ্জু স্যামসনের উদ্বোধনী জুটি ভয়ংকর রুপ ধারণ করতে পারে যে কোন মুহূর্তে। সেই রসদ আছে উর্ভিলের মাঝে। গত আসরের আগে গুজরাট টাইটান্সের দলে ছিলেন তিনি, কিন্তু খেলার সুযোগ তার মেলেনি।

এবার স্বাভাবিকভাবেই তার উপর বাজি ধরছেন ভারতের ক্রিকেট বিশারদের একটা বড় অংশ। সবাই মিলে অপ্রাপ্তির খেরোখাতা বন্ধ করে তার জন্য প্রস্তুত করছে মঞ্চ। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে উর্ভিলকেই প্রমাণ করতে হবে নিজের সামর্থ্য। নতুবা প্রদীপের নিচের অন্ধকার থেকে আর কখনোই প্রদীপ হওয়া হবে না উর্ভিল মুকেশ প্যাটেলের।











