বিগ ব্যাশে রিশাদ ‘দ্য গেম চেঞ্জার’

রিশাদ হোসেনের বন্দনায় মেতেছে গোটা অস্ট্রেলিয়া। শুধু উইকেটের সংখ্যা কিংবা কিপটে বোলিংয়ের হিসেব-নিকেশের নিরিখে রিশাদের পারফরমেন্স যাচাই করা কঠিন।

রিশাদ হোসেনের বন্দনায় মেতেছে গোটা অস্ট্রেলিয়া। বিগ ব্যাশ মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড়ের তালিকায় তিনি আছেন সেরা দশে, বোলারদের মধ্যে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার তালিকায় তিনি আছেন এক নম্বরে। শুধু উইকেটের সংখ্যা কিংবা কিপটে বোলিংয়ের হিসেব-নিকেশের নিরিখে রিশাদের পারফরমেন্স যাচাই করা কঠিন। তিনি মূলত গেমচেঞ্জার। যা সাধারণ দর্শকদের চোখে পড়ে না, সেসব গুরুত্বপূর্ণ কর্ম সম্পাদন করেন বলেই রিশাদকে নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বুকে।

এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট শিকার করেছেন রিশাদ হোসেন।  বিগ ব্যাশে তার ইকোনমি ৭.৭২। যৌথভাবে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। ইকোনমিতে তৃতীয় সেরা বাংলাদেশের লেগ স্পিনার। কিন্তু ওই যে প্রথমেই বলা সংখ্যা তত্ত্বের হিসেবে রিশাদের কার্যকারিতা হয়ত পুরোপুরি বোঝানো সম্ভবত নয়।

উদাহরণ হিসেবে, নিজের খেলা পঞ্চম ম্যাচে রিশাদের গেম চেঞ্জিং গুণের প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে আসা যায়। প্রথমে ব্যাট করতে থাকা মেলবোর্ন রেনেগেডস, ছয় ওভারেই স্কোরবোর্ড তুলে ফেলে ৬৭ রান। যে গতিতে তারা এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে করে ২০০ ছাড়ানো একটা লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত ছিল বলা চলে।

আধুনিক ক্রিকেটের ডিফেন্সিভ বোলিং এখন আর সেই অর্থে কাজে আসে না। ব্যাটারদের আক্রমণ থামানোর একটা মাত্র উপায়, উইকেট তুলে নেওয়া। রিশাদ ইনিংসের সপ্তম ওভারে এলেন বোলিং প্রান্তে। এসেই মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফেরালেন। সেখানে একটা ধাক্কা খায় রেনেগেডস।

এরপর রিশাদ তার ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে, জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ককে আউট করেন। এই দুই ওভারেই রান তোলার গতিতে প্রবল ধাক্কা দিয়ে গতিপথ পরিবর্তন করে দেন রিশাদ হোসেন। বলা বাহুল্য সেই দুই ওভারে ২১ রান হজম করেছিলেন রিশাদ। তবুও শেষ অবধি ১৬২ রানে থামে মেলবোর্ন রেনেগেডসের সংগ্রহ।

এই যে মুহূর্তের মধ্যে তিনি ম্যাচের মোমেন্টাম পরিবর্তন করে দিলেন, গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে নড়বড়ে করে দিলেন- এই কাজগুলো বিগ ব্যাশের মঞ্চে ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছেন রিশাদ হোসেন। মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড়ের তালিকায় এখন দশ থেকে সাত নম্বরে উঠে এসেছেন রিশাদ। চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে তার উপরে নেই কোন বোলার। ২০৪ ইম্প্যাক্ট পয়েন্ট নিয়ে বোলারদের মধ্যে রয়েছে সবার উপরে।

পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে, রিশাদের আসল কার্যকারিতার একটা পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায়। সেসব বিবেচনায় রিশাদকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন- তার সতীর্থ থেকে শুরু করে ধারাভাষ্যকার এমনকি অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তিরাও। এ যাত্রা আরও সুদীর্ঘ হোক- সেটাই এখন প্রত্যাশা সকলের।

 

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link