শিরোপার লড়াইয়ে থাকলো প্রাইম ব্যাংক

ম্যাচ একবার গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের দিকে হেলে পড়ে তো একটু পরই প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের দিকে যায়। কখনো আবার সমান তালে দুলতে থাকে। একটু পর পর ম্যাচের রঙ বদলায়। এর মাঝেই নাহিদুল ইসলামের ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখে প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু চাপের মধ্যে বাজে শটে নাহিদুল আউট হয়ে গেলে আবার ম্যাচে ফেরে গাজী গ্রুপ।

এভাবেই নানা উত্তেজনা পেরিয়ে ম্যাচ গড়ায় শেষ ওভারে। শেষ ৬ বলে প্রাইম ব্যাংকের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ১০ রান। ঠাণ্ডা মাথায় শেষের সমীকরণ মিলিয়ে প্রাইম ব্যাংকে জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসায় অলক কাপালি। নাটকীয় এই জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে টিকে রইলো এনামুল হক বিজয়ের দল।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সুপার লিগের মাঝপথে এসে বোঝা যাচ্ছে না এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ান হবে কোন দল। আজ গাজী গ্রুপকে ২ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয়ের দৌড়ে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো প্রাইম ব্যাংক। প্রাইম ব্যাংকের সাথে শিরোপার লড়াইয়ে রয়েছে শুধু মাত্র আবাহনী।

আজ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান মজবুত করেছে প্রাইম ব্যাংক। ১৪ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে তারা। ১৩ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রয়েছে আবাহনী। তবে বোলারদের নৈপুণ্যে জয়ের জন্য সহজ লক্ষ্য পেলেও জয়টা সহজে পায়নি প্রাইম ব্যাংক।

টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় জেতা ম্যাচ প্রায় হেরেই গিয়েছিল প্রাইম ব্যাংক। এই ম্যাচ হারলে শিরোপার লড়াই থেকে অনেকটাই ছিটকে যেত এনামুল হক বিজয়ের দল। প্রাইম ব্যাংককে এই যাত্রায় বাঁচিয়ে দিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম ও অলক কাপালি। নাহিদুল করেন ২৫ বলে ৩৯ রান ও কাপালি অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ২১ রান করে।

গাজী গ্রুপের দেওয়া ১২৫ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। ইনিংসের প্রথম বলেই আগের ম্যাচের নায়ক রুবেল মিয়া শূন্য হাতে ফিরে যাওয়ার দুই ওভার পর বিদায় নেন এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ মিঠুন। বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে ৫ বলে ৯ রান ও মিঠুন করেন ১ রান।

১৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন রনি তালুকদার ও রাকিবুল হাসান। কিন্তু এই দুজনও বেশি দূর যেতে পারেননি। জোড়া আঘাতে দুজনকেই ফিরিয়ে দেন মুমিনুল হক। রনি করেন ১১ রান ও রাকিবুলের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। এরপর নাঈম ইসলাম ১৬ রান করে ফিরে গেলে ৮৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় প্রাইম ব্যাংক।

কিন্তু তখনো নাহিদুল ইসলামের ব্যাটে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু ২৫ বলে ৩৯ রান করে নাহিদুল ফিরে যাওয়ার পর আবার ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় প্রাইম ব্যাংক। তবে শেষে কাপালির ২১ রানে ভর করে ১ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে প্রাইম ব্যাংক। গাজী গ্রুপের পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ ও মুমিনুল হক।

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা গাজী গ্রুপের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারে শরিফুল ইসলমের প্রথম শিকার হয়ে শূন্য হাতে ফিরে যান সৌম্য সরকার। ১ রানে প্রথম উইকেট হারানো গাজী গ্রুপের হাল ধরেন মেহেদী হাসান ও মুমিনুল হক। দ্বিতীয় উইকেটে দুজন যোগ করেন ৪০ রান।

১০ রান করে মুমিনুল রুবেল হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙে এই জুটি। এই জুটি ভাঙার পরই পথ হারায় গাজী গ্রুপের ইনিংস। একে একে ফিরে যান ইয়াসির আলী রাব্বি (৯), মেহেদী হাসান (৩৩), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২) ও জাকির আলী (৩)। ৬৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর আকবর আলী ও আরিফুল হকের ব্যাটে লড়াই করার পুঁজি পায় গাজী গ্রুপ।

এই দুজনের ছোট দুটি কার্যকরী ইনিংসে ভর করে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান সংগ্রহ করে গাজী গ্রুপ। আরিফুল করেন ২৮ বলে ৩১ রান ও আকবরের ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ২৪ রান। প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে অলক কাপালি তিনটি ও শরিফুল ইসলাম দুটি উইকেট শিকার করেন।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ১২৫/৯ (ওভার: ২০; মেহেদী- ৩৩, আরিফুল- ৩১, আকবর- ২৪) (কাপালি- ৪-১-১৬-৩, শরিফুল- ৪-০-৩৪-২)

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ১২৯/৮ (ওভার: ১৯.৫; রাকিবুল- ২০, নাহিদুল- ৩৯, নাঈম- ১৬, কাপালি- ২১*) (মেহেদী- ৪-০-১২-২)

ফলাফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ২ উইকেটে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link