ইতালি নাকি আর্জেন্টিনা!

প্রায় কাছাকাছি সময়ে শেষ হয়েছে ইউরো ২০২০ ও কোপা আমেরিকা কাপের আসর। দুই স্বাগতিক দেশ ব্রাজিল ও ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে শেষ হাসি হেসেছে আর্জেন্টিনা ও ইতালি। এখনো চলছে উৎসবের আমেজ। আর খেলোয়াড়রা পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছেন। আর প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরের মৌসুমের জন্য।

যারা লিওনেল মেসির মতো ফ্রি খেলোয়াড় রয়েছেন তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন দলের মধ্যে চলছে টানাটানি। এরই মধ্যে ডি পলকে দলে ভিড়িয়ে শুরুর চমকটি দেখিয়েছে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। মেসি যদি বার্সেলোনায় থাকেন আর্জেন্টাইন সতীর্থকে এখন প্রতিপক্ষ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। মাঠের লড়াইয়ে কোন ছাড় যে কেউ পাবেন না সেটা বলাই যায়।

যারা ইউরো ও কোপা আমেরিকায় নজর কেড়েছেন তাদেরকে নিয়ে আলাদা ভাবনা থাকবে। এই অবস্থার মধ্যেই নতুন একটি ম্যাচ নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। সেটি দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা-ইতালীর মধ্যে। ’সুপার কাপ’ নাম নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। তবে কবে এই ম্যাচটি আয়োজন করা হবে সেটি এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে আলোচনা যেহেতু শুরু হয়েছে সেখানে কিছু একটা তো হতে যাচ্ছে!

ইতালি-আর্জেন্টিনার মধ্যকার ম্যাচটি যদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে তাহলে ইউরো-আমেরিকার ফুটবলে নতুন অধ্যায়ের যে সূচনা হবে সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ‘সুপার কাপ’ নামে মহাদেশীয় সেরাদের লড়াইয়ে লিওনেল মেসির নেতৃত্বাধীন লা আলবি সেলেস্তাদের মুখোমুখি হতে পারে জর্জিও চিয়েলিনির আজ্জুরিরা। আর্জেন্টাইন পত্রিকা দিয়েরো ওলে মূলত এই ম্যাচটি আয়োজনের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

জানা গেছে, খুব শিগগিরই ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও লাতিন আমেরিকার সেরা দল আর্জেন্টিনার মধ্যে একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল পরিচালন সংস্থা কনমেবল এবং উয়েফার মধ্যে এ নিয়ে বেশ কিছু সময় কথাবার্তা চলার পর এখন প্রায় সিদ্ধান্ত পাকা হওয়ার পথে রয়েছে। মূলত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার কর্মক্ষেত্র ন্যাপলস এই ঐতিহাসিক লড়াইয়ের সাক্ষী থাকতে পারে বলে আলোচনা চলছে। আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জেতার পাশপাশি ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলিতে খেলে ইতিহাস রচনা করে দলকে সিরি এ জেতানোর জন্য আজও বন্দর শহরে আলোচনায় থাকে ম্যারাডোনা।

অনেকে তো আবার গত নভেম্বরে প্রয়াত এই তারকাকে দুই দেশের ফুটবলার বলে থাকেন। আর্জেন্টিনায় জন্ম নিলেও ইতালীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় কাটিয়েছেন ম্যারাডোনা। সেই কারণেই দুই দলের ম্যাচ ইতালির এই শহরে করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে। তবে ফুটবলের ব্যস্ত সূচি ও করোনার কথা মাথায় রেখে এই মুহূর্তেই সেই ম্যাচ আয়োজন সম্ভব নাও হতে পারে বলে কেউ কেউ মত দিয়েছেন। যদিও চলতি মাসে কোন ম্যাচই নেই ইউরোপ-আমেরিকার ক্লাব ফুটবলে।

তবুও করোনা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান উর্ধ্বগতিই দুশ্চিন্তার বড় কারণ এখন। এমন বড় ম্যাচ আয়োজনের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে সেটি নাকি এখনো নিতে পারেনি দুই মহাদেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা দুটি। সে কারণে কিছুটা ধীরে হলেও আয়োজনটা করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চায় কনমেবল ও ইউরো। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগেই সুবিধাজনক কোনো সময়ে ম্যাচটি আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানা গেছে। এরই মধ্যে প্রস্তাব এসেছে ম্যাচটার নাম ‘ম্যারাডোনা সুপার কাপ’ রাখার। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনো কিছু জানায়নি সংস্থা দুটি।

আলোচনা শুরু হওয়ার পর অনেক সংবাদ মাধ্যম নানারকম সংবাদ প্রকাশ করছে। অনেকে আবার দুই মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দুই দলের ম্যাচ নিয়ে এখন থেকেই আলাদা উত্তেজনা অনুভব করছেন। কেউ কেউ তো আবার এখন থেকেই অপেক্ষা করা শুরু করে দিয়েছেন। সে কারণেই দুই মহাদেশের সেরাদের নিয়ে যদি একটি টুর্নামেন্ট করা যায় তাহলে কেমন হতো? তখন সেরাদের সেরা হওয়ার চেয়ে জমজমাট ম্যাচ দেখার দিকেই বেশি মনযোগ থাকত।

এরই মধ্যে দুই মহাদেশের শিরোপাজয়ী দুই দেশ ইতালি এবং আর্জেন্টিনার মধ্যে সুপার কাপের ম্যাচ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে ২০১৯ সালে ফিফা কনফেডারেশনস কাপ বাতিল ঘোষণা করে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। যেখানে দেখা মিলতো সব মহাদেশের সেরা দল এবং বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ নিয়ে একটি অন্যরকম টুর্নামেন্টের। এ কারণেই সব মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দলগুলোর মধ্যে আর দেখা মেলে না সেই পরিচিত লড়াইয়ের।

তবে, ফিফা টুর্নামেন্টটি বাতিল করলেও নতুন প্রত্যাশা নিয়ে ইউরোপের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা আর লাতিন আমেরিকার সর্বোচ্চ সংস্থা কনমেবল বসেছে আলোচনার টেবিলে। দুই মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন দুই দলের মধ্যে এক প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ আয়োজন সামনে নিয়েই এগুচ্ছেন তারা।

তবে বিষয়টি যে খুব সহজ হবেনা সেটি আলোচনায় নেমেই বোঝা হয়ে গেছে তাদের। আলোচনা থেকে আরও জানা গেছে, ম্যারাডোনা-স্মৃতিকে এ ম্যাচে না ফেরালেও সুপার কাপের ভাবনাটা ভালোভাবেই আলোচনার টেবিলে রয়েছে। এরইমধ্যে ইএসপিএন, মার্কা ছাড়াও ডেইলি মেইলও এই গুঞ্জন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। সব গুঞ্জন সত্যি হলে ইতালি আর আর্জেন্টিনার মধ্যকার একটা ধ্রুপদী লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছে ফুটবলপ্রেমীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link