টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বর্তম্যান চ্যাম্পিয়ন ক্যারিবীয় দলে আছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নামকরা সব ক্রিকেটাররা। ক্যারিবীয়রা এমনিতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য বিখ্যাত। ক্রিস গেইল, অ্যান্ড্রু রাসেল কিংবা কাইরন পোলার্ডরা একেকজন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মহাতারকা। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও তাঁদের দলের ভেড়ানোর জন্য রীতিমত লড়াই করে দলগুলো।
ফলে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে বেশ বড় আশাই ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে বিশ্বকাপটা একেবারেই নিজেদের মত করে শুরু করতে পারেনি তাঁরা। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দলটি। পরের ম্যাচেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আট উইকেটে হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে বিশ্বকাপ থেকে মোটামুটি ছিটকেই যাচ্ছে ক্যারিবীয়রা।
তবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এই অসহায় আত্মসমর্পন কেই বা দেখতে চায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও নিশ্চই চাইবে বাংলাদেশের বিপক্ষে পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে। ওদিকে বাংলাদেশেরও শুরুটা ভালো না হলেও দুই দলের লড়াইটা সাম্প্রতিক কালে বেশ হাড্ডাহাড্ডিই হয়। ফলে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করতে হলে দুটি পরিবর্তন নিয়ে আসা উচিৎ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তাঁদের ব্যাটিং লাইন আপে একটি পরিবর্তন নিয়ে আসা দরকার। সেটি হচ্ছে লেন্ডল সিমন্সের জায়গায় তাঁরা একাদশে রোস্টন চেজকে নিয়ে আসতে পারে। রোস্টন চেজকে একাদশে নিয়ে আসলে ক্রিস গেইলও নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিংটা করতে পারবেন। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারের বড় কারণ ছিলেন লেন্ডল সিমন্স।
সেই ম্যাচে ৩৫ বল খেলে সিমন্স করেছিলেন মাত্র ১৬ রান। এমনকি তাঁর ইনিংসে সিমন্স একটি বাউন্ডারিও বের করতে পারেননি। ফলে অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা চাপে পড়েছেন। দলও লড়াই করার মত স্কোর দাঁড় করাতে পারেনি। ফলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে সিমন্সকে বাদ দেয়াটাই ভালো সিদ্ধান্ত হবে। তাঁর বদলে একাদশে আসতে পারেন রস্টন চেজ। রোস্টন চেজ একাদশে থাকলে গেইলকে হয়তো ওপেন করতেও দেখা যেতে পারে। এছাড়া একাদশেও একটা ভারসম্য তৈরি হবে।
এছাড়া আগের দুটি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের খুব বেশি কিছু করার ছিল না। কেননা কোন ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা লড়াই করার মত স্কোর বোর্ডে জমা করতে পারেননি। তবুও জেতার জন্য মরিয়া টিম ম্যানেজম্যান্ট বোলিং ডিপার্টমেন্টে কিছু পরবির্তন আনতে পারে।
মূলত প্রতিপক্ষ ও ভেন্যুর উপর নির্ভর করেই এই পরিবর্তন করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে খুব ভালো বোলিং করতে পারেননি হেইডেন ওয়ালশ। এছাড়া বাংলাদেশ যেহেতু স্পিন মোটামুটি ভালো খেলে ফলে একাদশে একজন বাড়তি পেসারই রাখতে চাইবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেক্ষেত্রে একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারেন হেইডেন ওয়ালশ।
হেইডেন ওয়ালশের বদলে একাদশে আসতে পারতেন ওবেদ ম্যাককয়। যদিও, ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে। এসেছেন জেসন হোল্ডার। হোল্ডারের পেস বোলিং বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যবহার করতে চাইবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোল্ডারের ব্যাটিংটাও কাজে লাগবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে এইসব পরিবর্তন করার পরেও বাংলাদেশের সাথে ম্যাচ জিততে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের আরো বেশি দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে হবে। সেটা করতে পারলেই আবার জয়ের ধারায় ফিরতে পারে ক্যারিবীয়রা।
বাংলাদেশের ব্যাপারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সতর্ক করে রেখেছেন দেশটির হয়ে দু’টি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। তিনি অবশ্যই বাংলাদেশের সাথে শ্রীলঙ্কাকেও টানলেন। বললেন, ‘বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা, এই দুটি দল নিয়ে আমি কথা বলছিলাম। এই দুটি দলই দারুণ সম্ভাবনাময়। আমি বিশ্বাস করি, এরা হয়ত দ্রুতই অনেক বড় কিছু করে ফেলতে পারে। আমি দেখেছি, বিশ্বকাপের আগে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে সিরিজে হারিয়ে এসেছে বাংলাদেশ।’