বিপিএল থেকে জাতীয় দলের দুয়ার

হাতে একদম সময় নেই।

বিপিএল শেষ হতে না হতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু। এর পরপরই তাদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ফলে আফগানিস্তান সিরিজের জন্য আলাদা করে ক্যাম্প হওয়ার কথা না। সরাসরি দল উঠে যাবে হোটেলে।

এখন কথা হলো বিপিএল থেকে কী জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে পারবেন দু একজন খেলোয়াড়?

জাতীয় দলের একজন উচ্চ পর্যায়ের সূত্র বললেন, তিন-চার জন খেলোয়াড় টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা করে নিতে পারেন। অন্তত তেমন করেই এবারের আসর দেখছেন তারা। আমরা একটু চোখ বুলিয়ে নেই যে, কারা আসতে পারেন এই তালিকায়।

  • মুনিম শাহরিয়ার

সপ্তাহ তিনেক আগেও মুনিম শাহরিয়ারের নাম জাতীয় দলের জন্য বললে কেউ বিশ্বাস করতেন না।

কিন্তু মুনিম নিজেকে দাবিদার করেই রেখেছিলেন। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে একেবারে অ-বাংলাদেশি সূলভ পাওয়ার হিটিং দিয়ে মন কেড়েছিলেন। এরপর বিপিএলে দল পাচ্ছিলেন না। যদিবা বরিশাল তাকে দলে নিলো, ম্যাচ পাচ্ছিলেন না। ম্যাচ পেতেই শুরু করলেন তাণ্ডব। তিনটি দানবীয় ইনিংস দিয়ে মুনিম বুঝিয়ে দিলেন তিনি থাকতে এসেছেন।

মুনিমের ফুটওয়ার্ক নেই, টেকনিক অত্যন্ত দুর্বল; এসব তাঁকে নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু বুঝতে হবে যে, আমরা তাকে ভুলেও টেস্টের জন্য বিবেচনা করতে বলছি না। তাকে খেলাতে হবে টি-টোয়েন্টি। যেখানে পাওয়ার প্লের সর্বোচ্চ ব্যবহার করার মত ক্ষমতা তার আছে।

সাইফ হাসান ও নাঈম শেখ সম্ভবত এই সিরিজে বাদ পড়ছেন। সে ক্ষেত্রে মুনিম শাহরিয়ার অনায়াসে জাতীয় দলে ঢুকে যেতে পারেন।

  • মাহমুদুল হাসান জয়

জয় ইতিমধ্যে টেস্টে ওপেনার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। এবারের বিপিএল দিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন, শর্টার ফরম্যাটেও ইনিংস শুরু করতে তৈরি তিনি। ফলে কেবল টি-টোয়েন্টি নয়, ওয়ানডে দলেও দেখা যেতে পারে জয়কে।

সারাজীবন মূলত ব্যাট করেছেন মিডল অর্ডারে। কিন্তু সম্প্রতি উত্থান হয়েছে তার ওপেনার হিসেবে। ব্রেকটা পেয়েছেন টেস্টে। সেখানে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে দারুন পারফরম্যান্স করেছেন। এরপর বিপিএলে কুমিল্লার হয়ে দারুন ধারাবাহিক। সেই সাথে ভালো স্ট্রাইক রেটে রান করছেন। ফলে দুই ওপেনারের একজন হিসেবে বিবেচনায় চলে আসতে পারেন জয়।

  • নাহিদুল ইসলাম

জাতীয় দলে স্পিনারের খুব অভাব নেই। নাসুম আহমেদ, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান আছেন। তারপরও নাহিদুল নিজেকে খুব যোগ্য হিসেবে দাবি তুলেছেন।

ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেকদিন ধরেই ভালো খেলতে থাকা নাহিদুল এবার বিপিএলে কুমিল্লার অন্যতম বড় ভরসা। পাওয়ার প্লেতে রান আটকে রাখতে পারেন, সময় মত ব্রেক থ্রু দিতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, টি-টোয়েন্টির মত ছোট ফরম্যাটেও জুটি করে বোলিং করে যেতে পারেন। এই ক্ষমতার জন্য তাকে জাতীয় দলে বিবেচনা করে ফেললে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

  • মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী

সাইফউদ্দিনের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ অবশ্যই একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার খোজ করবে। আর এই জায়গাটা নেওয়ার জন্য খুব ভালোভাবে দাবি তুলেছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।

যদিও ব্যাটিংয়ে মৃত্যুঞ্জয় সেভাবে এখনও সবার সামনে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। কিন্তু লম্বা ইনজুরি থেকে ফেরার পর দূরন্ত বোলিং করছেন তিনি। এই বিপিএলে মূলত ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট হিসেবে বল করেছেন। সেই ভূমিকাটা দারুন পালন করেছেন। প্রায় ম্যাচেই অল্প রান ডিফেন্ড করে ফেলেছেন।

উইকেট নেওয়াতেও খুব একটা পিছিয়ে নেই মৃত্যুঞ্জয়। হ্যাটট্রিক করেছেন একটি, চার উইকেট নিয়েছেন দুটি ম্যাচে।

  • অনরারি মেনশন: এনামুল হক বিজয়

বিজয়ের জন্য জাতীয় দল নতুন কিছু নয়। তবে টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৫ সালে। মূলত অভিযোগ ছিলো যে, বল তুলনায় রান করতে পারছেন না। এই বিপিএলে সেই অভিযোগের কিছুটা জবাব দিয়েছেন।

দারুন রানে আছেন বিজয়। রান করছেন খুব দ্রুত। ফলে বিজয়কে আবার দলে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link