এবারের ডিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। এই ওপেনার ব্যাট হাতে নামা মানেই অবিশ্বাস্য সব ইনিংস। তবে এনামুল হক বিজয় আসলে ঠিক কী ভয়ংকর ফর্মে আছেন তা বোঝানো গেল না। নয় ম্যাচে দুইটা সেঞ্চুরির সাথে আছে পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরিও। এরমধ্যে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৮৪ রানের ইনিংস।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে এবার যেন চলছে বিজয়েরই রাজত্ব। তাঁর এমন ব্যাটিং তোপেই এখন পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে আছে প্রাইম ব্যাংক। এরমধ্যেই আবার খুঁজে পাওয়া গেল বোলার বিজয়কেও। শেষ ম্যাচে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে বোলিং করতে দেখা যায় তাঁকে। স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথমবারের মত বোলিং করতে এসে তুলে নিয়েছেন এক উইকেটও।
বিজয় এখন ব্যাট, বল যাই ধরছেন তাতেই যেন ম্যাজিক হচ্ছে। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটে লিগে নয় ম্যাচ খেলার পর তাঁর ঝুলিতে জমা হলো ৭২৮ রান। ব্যাটিং করেছেন ৮০.৮৮ গড়ে। ওদিকে ব্যাটিং করেছেন প্রায় ১০০ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইকরেটে। সবমিলিয়ে এনামুল হক বিজয় এবারের ডিপিএলে ধারাবাহিকতার শীর্ষে ও যথেষ্ট বিধ্বংসীও ব্যাটে।
ডিপিএলে যে মানের উইকেটে খেলা হয় তাতে ব্যাটসম্যানদের জন্য রান করা কঠিন। তবুও এমন অবিশ্বাস্য সব ইনিংস খেলে যাচ্ছেন বিজয়। বলা হচ্ছে ঢাকা লিগে এর আগে কোন ব্যাটসম্যান নাকি এভাবে রাজত্ব করতে পারেননি। এক মৌসুমি এতগুলো দারুণ ইনিংসও আসেনি কারো ব্যাট থেকেই।
ওদিকে একসময় জাতীয় দলের হয়ে ওপেন করা বিজয় এখন আর সুযোগ পান না। তবে বিজয়ের এমন পারফর্মেন্সের পরেও কী তাঁকে বাইরে রাখা যায়? এমন প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেট পাড়ায়। ডিপিএলের সেরা ব্যাটসম্যানকে কেন জাতীয় দলে নিয়ে আসা হবেনা এমন প্রশ্নও আসছে।
বিজয়কে নিয়ে নিজেদের ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকও। বিজয়ের ব্যাটিং এর দারুণ প্রশংসাও করেছিলেন তিনি। বিজয়কে নিয়ে তিনি বলেন,’ বিজয় খুব ভালো সময় কাটাচ্ছে। এই প্রিমিয়ার লিগটায় ও আউটস্ট্যান্ডিং। প্রত্যেক খেলোয়াড়ই বিবেচনায় থাকার মত। সেই সঙ্গে এটাও দেখতে হয় কোন জায়গায় কখন কোন খেলোয়াড়কে নিতে হবে। বা তার জায়গায় কে কে আছে, কে কে খেলছে।’
এখানে আব্দুর রাজ্জাকের একটি কথা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচক কোন জায়গায়, কোন খেলোয়াড়কে লাগবে সেট বিবেচনায় রাখার কথা বলেছেন। আসলে এখানেই মূলত পিছিয়ে যাচ্ছেন বিজয়। কেনন ডিপিএলে এমন দারুণ ইনিংস গুলো বিজয় খেলছেন ওপেনার হিসেবেই। কিন্তু বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে কী ওপেনিং পজিশনে কোন জায়গা ফাকা আছে?
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ফলে অধিনায়ককে নিশ্চয়ই বাদ দেয়া সম্ভব না। এছাড়ে আরেক প্রান্তে আছেন লিটন কুমার দাস। গত এক বছরে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে ভালো ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানটার নাম লিটন। ফলে তাঁকে নিয়ে নিশ্চয়ই প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই।
এখন প্রশ্নটা হচ্ছে বিজয়কে যদি জাতীয় দলে ফেরাতে হয় তাহলে তিনি কার জায়গায় ফিরবেন? ওপেনার বিজয়কে নিশ্চয়ই অন্য কোন পজিশনের জন্যও চিন্তা করবে না দল। এছাড়া ডিপিএলের মান নিয়েও আছে প্রশ্ন। ফলে ডিপিএলের এই ফর্ম বিজয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কতটুকু নিয়ে আসতে পারবেন সেটা নিয়েও ভাবনার জায়গা আছে। তাই বিজয়ের ব্যাটে এত রানও আসলে ভরসা দিতে পারছেনা জাতীয় দলে ফেরার।