তিন ছক্কা ও ওভাররেটেড ওয়েড

ম্যাচের পর ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটাচ্ছেন। একাদশে সুযোগ মিলছে না। দলে আরও দু’জন উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে টপকে একাদশে সুযোগ মেলানোটা বড্ড কঠিন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) পঞ্চদশ আসরে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে প্রথমবারের মত খেলার সুযোগ পেয়েছেন আফগান তারকা রহমানুল্লাহ গুরবাজ। হার্ড হিটার হিসেবে খ্যাত এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার অল্প সময়েই বেশ নাম কামিয়েছেন। প্রথমবারের মত আইপিএলে পেলেও এখন অবধি অভিষেক হয়নি এই আফগান তারকার।

গুজরাট ডাগ আউটে গুরবাজের সাথেই ছিলেন আরেক উইকেটরক্ষক ব্যাটার। প্রথম পাঁচ ম্যাচে বেঞ্চে বসেই কাটিয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহাও। এই দু’জনই একাদশের বাইরে থাকার সবচেয়ে বড় কারণ ম্যাথু ওয়েড। গুজরাটের হয়ে প্রথম ম্যাচ থেকেই তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ। তবে শুরু থেকেই ছিলেন ব্যর্থ।

শাহীন শাহ আফ্রিদিকে পর পর তিন ছক্কা। ব্যাস টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে উঠালেন ম্যাথু ওয়েড। অফ ফর্ম আর অধারাবাহিকতায় সমালোচনার মুখে থাকা ওয়েড এক ইনিংসেই বনে যান অজিদের জয়ের নায়ক। সেখান থেকে উঠে আসেন আইপিএলের মঞ্চে। ২.৪০ কোটি রুপিতে আইপিএলের মেগা নিলাম থেকে তাঁকে দলে ভেড়ায় গুজরাট টাইটান্স।

আইপিএলে অবশ্য এবারই তিনি প্রথম না। ২০১১ সালে প্রথমবারের মত খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। দিল্লী ডেয়ারডেভিলসের হয়ে তিন ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ২২ রান। এরপর দশ মৌসুম আইপিএলে অবিক্রীত থাকলেন। জাতীয় দলের জার্সি গায়েও পারফরম্যান্সটা যাচ্ছেতাই। কিন্তু সেমিফাইনালের সেই টানা তিন ছক্কায় ১৭ বলে ৪১ রানের ক্যামিওতে বদলে যায় সব। ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে আবার সুযোগ পেলেন আইপিএলে। পুরনো ব্যর্থতা পেছনে ফেলে আইপিএলের মঞ্চে ভাল কিছু করার প্রত্যয় নিশ্চয়ই ছিল।

কিন্তু এবারের আসরেও ব্যর্থ ওয়েড। প্রথম ম্যাচ থেকেই ছিলেন একাদশে। প্রথম পাঁচ ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে হতশ্রী ব্যাটিংয়ের পর বাদ পড়েন দল থেকে। এরপর ছয় ম্যাচ বাদে আবার সুযোগ পান গেল ম্যাচে লখনৌ সুপার জায়েন্টসের বিপক্ষে। কিন্তু ওয়েডের ব্যাটে রানের দেখা নেই। ছয় ম্যাচে ১৩ গড়ে করেছেন মাত্র ৬৮ রান। এই ছয় ম্যাচে মারতে পারেননি একটি ছক্কাও!

এখন পর্যন্ত অভিষেকের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন গুরবাজ। তবে পাঁচ ম্যাচ ব্যর্থতার পর ওয়েডকে হটিয়ে একাদশে জায়গা করে নেন সাহা। এরপরই ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রূপে দেখা মিলে এই ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটারের। নিজের সামর্থ্যটা আরও একবার টিম ম্যানেজমেন্টের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন সাহা।

২০২১ সালে খেলেছেন ২২ টি-টোয়েন্টি। এই ২২ ম্যাচে মাত্র ১৮ গড়ে করেছেন ৩০২ রান। কখনো ওপেনিংয়ে, কখনো মিডল অর্ডারে আবার কখনো তিনি খেলেছেন ফিনিশার ভূমিকায়। কিন্তু কোথাও তিনি সফল হতে পারেননি। স্রেফ কিপিং কোটায় খেলে গেছেন ম্যাচের পর ম্যাচ।

নামের পাশেই অস্ট্রেলিয়ান ট্যাগ থাকায় আইপিএলে দল পেতে খুব একটা অসুবিধেও হয়নি ওয়েডের। এক ইনিংসেই পেয়ে গেছেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ। ১২ ম্যাচে ৯ জয় নিয়ে পয়েন্টস টেবিলের শীর্ষে আছে গুজরাট। দল সেরা অবস্থানে থাকলে ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত আছে ওয়েডের। দলের সফলতায় ভাটা পড়ে গেছে ওয়েডের চরম ব্যর্থতা।

ওয়েড থাকায় একাদশে জায়গা মেলাতে রীতিমতো যুদ্ধই করতে হয়েছে সাহাকে! অপরদিকে, সম্ভাবনাময় আফগান তারকা গুরবাজ এখনও অপেক্ষায় একটি সুযোগের। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ম্যাথু ওয়েড যে গড়পড়তা মানের সেটার ছাপ তিনি এখন নিয়মিতই রাখছেন আইপিএলের মঞ্চে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link