ব্যাটিং, বোলিং, বয়স কিংবা ডাক – কোনো না কোনো বিষয়ে সবসময়ই আলোচনায় থাকেন আফগান তারকা রশিদ খান। মূলত লেগ স্পিন দিয়েই ক্যারিয়ার শুরু। অল্প বয়সেই সেরা লেগ স্পিনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বর্তমান বিশ্বের সেরা স্পিনারদের একজন তিনি। লেগ স্পিনাররা সাধারণর বোলিং দিয়েই আলোচনায় থাকেন। তবে এদিক থেকেই ভিন্ন চিত্র রশিদ খানের। লেগ স্পিন ম্যাজিকে ক্রিকেট বিশ্বে দাপট দেখাচ্ছেন লম্বা সময় ধরেই। তবে সেই তালিকায় যোগ হয়েছে ব্যাটিংও। প্রায়ই রশিদের ব্যাটে দেখা মিলছে দুর্দান্ত কিছু শট, ক্যামিও।
রশিদের ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ আসলে ডাকের প্রসঙ্গ না আনাটা অন্যায় হবে। ঝড়ো ইনিংসের যেমন দেখা মিলছে, তেমনি প্রায়ই তিনি আউট হচ্ছেন শূন্য রানে! আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ডাকের রেকর্ডে উপরের দিকেই আছেন তিনি। এবারের আসরেও তৃতীয় সর্বোচ্চ ডাকে নাম লিখিয়েছেন এই লেগ স্পিন তারকা। বয়স নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, ট্রল – সেটা ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আছে। তবে এসব বিষয় ছাপিয়ে স্রেফ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট বিবেচনায় নিলেও রশিদ এখন বিশ্বের সেরা স্পিনার।
ইকনমিক বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেটও নিচ্ছেন নিয়মিত। রশিদ খান খেলছেন মানেই যেন প্রতিপক্ষের জন্য চার ওভার ঘাটতি। এই আফগান তারকার বল দেখে শুনে খেলতে পারলেই যেন বেঁচে যান ব্যাটাররা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) নিয়মিত মুখদের একজন রশিদ খান। প্রতি আসরেই বল হাতে নিজের সেরাটা দিচ্ছেন। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় উপরের দিকেই তিনি থাকেন। ব্যতিক্রম নয় এবারের আসরেও।
আইপিএলের পঞ্চদশ আসরেও বল হাতে উড়ন্ত ফর্মে আছেন রশিদ। লেগ স্পিন ম্যাজিকে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিচ্ছেন এই আসরেও। প্রথমবারের মত আইপিএলে অংশ নিয়েছে গুজরাট টাইটান্স। আর প্রথম আসরেই গুজরাটের হয়ে খেলছেন রশিদ। রশিদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সবার আগে প্লে অফ নিশ্চিত করে টাইটান্সরা।
লখনৌ সুপার জায়েন্টসের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক স্পেলে দলকে প্লে অফে পৌঁছে দেন রশিদ। মাত্র ২৪ রানের বিনিময়ে শিকার করেন চার উইকেট। দীপক হুডা, ক্রুনাল পান্ডিয়া, জেসন হোল্ডার, আবেশ খানের উইকেট শিকার করেন তিনি।
১২ ম্যাচে ২১ গড় আর ৬.৭৯ ইকনমিতে শিকার করেছেন ১৫ উইকেট। কিপটে বোলিংয়ের পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে ব্রেক থ্রু এনে দিচ্ছেন এই আফগান তারকা। অবশ্য রশিদের কাছ থেকে এমন বোলিংটা হরহামেশাই দেখা মিলে। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় সেরা দশেই আছেন তিনি। শীর্ষে থাকা যুজবেন্দ্র চাহালের চেয়ে পিছিয়ে আছেন সাত উইকেটে।
আইপিএলের এবারের আসরে প্রথম দল হিসেবে প্লে অফে পা দিয়েছে গুজরাট টাইটান্স। দলের সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করেছেন রশিদ খান। এই আফগান তারকার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ব্যাকফুটেই ছিল প্রতিপক্ষরা। ব্যাট হাতে দলকে জিতিয়েছেন একাধিক ম্যাচে। বোলিংয়ের পাশাপাশি এবার ব্যাট হাতেও কয়েক ম্যাচে করেছেন ঝড়ো ফিনিশ।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বল হাতে রশিদ এখন অপ্রতিরোধ্য প্রায়। আইপিএল, বিগব্যাশ থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেন তিনি। রশিদকে দলে ভেড়াতে রীতিমতো যুদ্ধ করেন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষরা। বিশ্বের বড় বড় তারকা ব্যাটাররাও রশিদের ম্যাজিকেল বোলিংয়ে অসহায়ত্ব দেখান। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই তারকা দিনে দিনে হয়ে উঠছেন বোলিং অলরাউন্ডার। আইপিএলের মঞ্চে ইতিমধ্যেই তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন সেরাদের কাতারে।