পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও ব্ল্যাকমেইলিং প্লট: দ্য পগবা অ্যাফেয়ার

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন বারবার মাঠের বাইরের বিভিন্ন ঘটনার কারণে খবরের শিরোনাম হতেন ফরাসি মিডফিল্ডার পল পগবা। তাঁর পারফরম্যান্সের তুলনায় এসব ঘটনার জন্য সমালোচনার শিকারও হতেন বেশি। সম্প্রতি স্বরূপে ফেরার জন্য পুনরায় তাঁর পুরনো ঠিকানা জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছিলেন পগবা; কিন্তু পুরোনো সেই অভ্যাস তাঁর পিছু ছাড়েনি।

আবারো মাঠের বাইরের ইস্যুতে খবরের হট টপিক বনে গিয়েছেন পল পগবা। সঙ্ঘবদ্ধ এক চক্র তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করছে এমন অভিযোগ জানানোর পরেই পগবাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে ফ্রান্সের পুলিশ পগবার অভিযোগ তদন্ত করা শুরু করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত, পল পগবার ভাই ম্যাথিয়াস পগবার মাধ্যমে। ম্যাথিয়াস একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেন যেখানে বলা হয় যে, তিনি তাঁর ভাই সম্পর্কে এমন কিছু জানেন যা পুরো বিশ্বের জানা উচিত। এছাড়া ম্যাথিয়াস দাবি করেন যে এই তথ্য প্রকাশ হলে ফ্রান্স এবং জুভেন্টাসের ড্রেসিংরুমে পল পগবার জায়গা হবে না এবং সেই সাথে তাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করবে সবাই।

যদিও সেই বিশেষ তথ্য প্রকাশ করেননি ম্যাথিয়াস পগবা। তবে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে জাদু করেছে পল পগবা, এমন অবিশ্বাস্য এক দাবি করেছেন তিনি। ম্যাথিয়াস বলেন, ‘কিলিয়ান, আমি যা বলছি সেটা তোমার ভালোর জন্য বলছি। যা শুনেছো সব সত্যি; জাদুকরের কথা সত্যি।’

ম্যাথিয়াস পগবা নিজেও একজন পেশাদার ফুটবলার। ছোট ভাই পল পগবার মত বিখ্যাত হতে না পারলেও ইতালি, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন স্তরের লিগে খেলেছেন তিনি। গত বছর ফ্রান্সের চতুর্থ টায়ারের দল বেলফোর্টের হয়ে বারো ম্যাচ খেলেছিলেন ম্যাথিয়াস। মাঝে মাঝে ফুটবল বিশ্লেষক হিসেবে টিভিতেও দেখা যায় তাকে।

অবশ্য পল পগবার পক্ষ থেকে ম্যাথিয়াসের করা এসব অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করা হয়েছে। ফরাসি এই ফুটবলারের মা এবং এজেন্টের স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতিতে ম্যাথিয়াসের ভিডিওকে বিস্ময়কর কিছু নয় এবং ব্ল্যাকমেইলের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পল পগবার পক্ষ থেকে দেয়া এই বিবৃতিতে বলা হয়, হুমকি এবং চাঁদাবাজির অংশ হিসেবে এসব করা হচ্ছে।

কিছুদিন আগেই পল পগবা নিজেকে হুমকির শিকার দাবি করেন। তিনি বলেন যে তাঁর বাল্যকালের বন্ধু এবং অস্ত্রধারী দুইজন ছদ্মবেশী লোক তাকে হুমকি দিয়েছে। এবং একই সাথে ১৩ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছে। এছাড়া কাছের এক ব্যক্তি পল পগবার ক্রেডিট কার্ড থেকে ২ লক্ষ ইউরো তুলে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আগস্টের শুরুতে পল পগবার করা অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়। আর্থিকভাবে সহায়তা না করার জন্য একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্ত পল পগবাকে হুমকি দেয় বলে জানা গিয়েছে। শুধু একবারই নয়, ম্যানচেস্টার এবং তুরিনে কয়েকবারই হুমকির শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই মিডফিল্ডার। এবং অভিযুক্তদের মাঝে নিজের ভাই ম্যাথিয়াসকে চিনতে পেরেছেন এমনটাই দাবি পল পগবার।

কাতার বিশ্বকাপের বাকি মাত্র তিন মাস, এবারের বিশ্বকাপ ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের জন্য শিরোপা ধরে রাখার মিশন। এমন অবস্থায় পল পগবার এমন বিতর্কিত ঘটনায় দলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে; অনেকটা ২০১৬ সালে করিম বেনজেমার ব্ল্যাকমেইল কাণ্ডের মতই।

সেই সাথে ফ্রান্সের তরুণ ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পের সাথে পল পগবার সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। অবশ্য ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট আশা করছেন এমন ঘটনা জাতীয় দলো পল পগবার সুযোগ পাওয়াকে বিতর্কিত করবে না। ম্যাথিয়াস পগবার অভিযোগগুলো এখন শুধুই গুজব, তদন্ত শেষ হলে মূলত বোঝা যাবে পুরো ঘটনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link