মিডল অর্ডারের মধ্যমনি লিটন দাস!

এশিয়া কাপের শোক ভুলে বাংলাদেশ দলের মিশন এবার টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এশিয়া কাপের আগে-পরে দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এসেছে। এশিয়া কাপের আগেই অধিনায়কত্বের ভার তুলে দেয়া হয়েছে এই মুহূর্তে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাঁধে। পরিবর্তন এসেছিলো কোচিং প্যানেলেও।

টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার শ্রীধরন শ্রীরামকে। এশিয়া কাপের পরের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসছে মুশফিকুর রহিমের টি- টোয়েন্টি হতে অবসরে যাওয়ায়। তাছাড়া ইনজুরিজনিত কারণে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার যাদের এশিয়া কাপে দেখা যায়নি, টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের পাওয়া যাবে। সেরকমই একটি নাম লিটন কুমার দাস।

এই মুহুর্তে শ্রীরাম ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান মিলে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য গেম প্ল্যান সাজানোতে ব্যস্ত। এই মুহুর্তে বাংলাদেশ দলের জন্য সবচেয়ে আশাজাগানিয়া সংবাদ সম্ভবত লিটনের ফিরে আসার বিষয়টি। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির পুনর্বাসন প্রক্রিয়া কাটিয়ে ফিরছেন তিনি। এখন প্রশ্ন হলো তিনি কি ওপেনার হিসেবেই ফিরছেন নাকি অন্য কোন পজিশনে? এ নিয়ে বেশ জল্পনা- কল্পনা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে মুশফিকুর রহিম অবসর নিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে শূন্য হয়ে যাওয়া এই চার নম্বর পজিশনে দেখা যেতে পারে লিটনকে। যদিও তিনি তার ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে মাত্র দুবার চার নম্বরে খেলেছেন। এই বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেছেন, ‘আমরা তাকে (লিটনকে) চারে খেলানোর পরিকল্পনা করছি, যদিও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি।’

লিটন তার ৫৪ ম্যাচের টিটোয়েন্টি ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ে শীর্ষ তিনের মধ্যে ব্যাট করেছেন। এর মধ্যে তিনি ৪০ বারই ২১ গড়ে ৮১৯ রান করেছেন। তাছাড়া চার নম্বর পজিশনে তিনি এখন পর্যন্ত যে দুটি ম্যাচে খেলেছেন, তাতে মাত্র সাত রান করে চার নম্বরে পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয়েছেন। অর্থাৎ লিটন কুমার দাস ওপেনিং কিংবা টপ তিনের মধ্যে ব্যাট হাতে নামলেই সফলতার হারটা বেশি।

বাংলাদশ দলের চলমান ওপেনিং সংকট। এর মধ্যে লিটন ফিরলেও তাঁকে ওপেনিং পজিশন চোখ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে না! এর অন্যতম একটা কারণ হতে পারে মেকশিফট ওপেনার হিসেবে মেহেদী হাসান ও সাব্বির রহমানের দেখানো সম্ভাবনা। এশিয়া কাপের মঞ্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার সময় টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট তাদের দুই নিয়মিত ওপেনার – এনামুল হক বিজয় এবং নাইম শেখকে বাদ দিয়ে তাঁর পরিবর্তে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে পাঠিয়েছিল। সেই ম্যাচে নতুন সফল ওপেনিং জুটির সম্ভাবনা দেখিয়েছেন এই দু’জন। তাই হয়তো এক্ষুনি তাঁদের সরিয়ে না দিয়ে আরেকটু সুযোগ দিয়ে দেখতে চাচ্ছে বিসিবি। তাই লিটনের ওপেনিংয়ের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টের অন্য একজন সদস্য জানান যে তারা লিটনের সাথে টিটোয়েন্টিতে তার নতুন ব্যাটিং পজিশন নিয়ে শীঘ্রই কথা বলবেন। তিনি আরও বলেন, ‘সে (শ্রীরাম) এটাই চায়। কারণ ও দেখেছে লিটন কীভাবে ব্যাট করে। বলছিল যে লিটন এবং আফিফের মতো একজন ব্যাটসম্যান দলের চার এবং পাঁচ নম্বরে আসা দরকার। কারণ প্রথম ছয় ওভারের পরে বাউন্ডারি মারা কঠিন হয়ে যায় যেহেতু ফিল্ডাররা মাঠের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে এমন একজন খেলোয়াড় দরকার যে এসব মোকাবেলা করে খেলতে পারবে, পাওয়ার হিটিং করতে পারবে। এবং এইসব মিলিয়ে লিটন এবং আফিফ খুব ভাল পারবেন এই পজিশনে।’

তবে, একটা ব্যাপার ঠিক যে মিডল অর্ডারে সংকট বিশ্বকাপে একটু কমই হওয়ার কথা বাংলাদেশের। কারণ, ইনজুরি কাটিয়ে ইয়াসির আলী রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহানও আছেন ফেরার অপেক্ষায়। এবার লিটনকেও যদি সাথে চার-পাঁচে নামানো হয় – তাহলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যারিয়ারের শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link