অচেনা কন্ডিশন, চেনা মুস্তাফিজ

ক্রাইস্টচার্চে টস করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছেন নুরুল হাসান সোহান। তখনই খটকা মনে এসে বাধে। তাহলে কী নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই মাঠে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। টসের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়ক সোহানের কথায় ভয়টাই সত্যি হলো। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে সাকিবকে বিশ্রাম দিয়েছে বাংলাদেশ দল।

তবে সাকিবের এই বিশ্রামের কোন স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ দল থেকেও আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়নি কেন সাকিব খেলছেন না। তবে যতটুকু জানা যায় ভ্রমণ ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে পারেননি সাকিব। স্থানীয় সময় গতকাল সন্ধ্যায় দলের সাথে যুক্ত হতে পেরেছেন তিনি। ফলে বিশাল ভ্রমণ শেষে হয়তো নিজেকে ম্যাচ খেলার মত প্রস্তুত মনে করেননি অধিনায়ক।

ফলে ম্যাচের শুরুতেই মানসিক ভাবে খানিকটা পিছিয়ে পড়লো বাংলাদেশ। দলের সেরা ক্রিকেটার ও অধিনায়ককে ছাড়াই নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে মাঠে নামলেন সোহানরা। তবে মাঠে নামার পর সোহানদের মাঝে সেই ভয়টা খুব বেশি দেখা যায়নি। অন্তত ম্যাচের শুরুতেই শরীরি ভাষায় পিছিয়ে পড়েননি তাসকিন আহমেদরা।

বল হাতে ক্রাইস্টচার্চের উইকেটের সর্বোচ্চ ব্যবহারই করেছেন তাসকিন। নিজের গতি, বাউন্স ও নিয়ন্ত্রণ দিয়ে আঁটকে রাখার চেষ্টা করেছেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। তবে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা তো এই ওপেনিং জুটিই। ফলে কোনভাবেই উইকেটের দেখা মিলছিলো না। ভয়ংকর হয়ে উঠছিল বাবর-রিজওয়ান জুটি।

পেস স্বর্গে অবশ্য প্রথম উদযাপনের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনারের ঘূর্নিতেই নিজের উইকেট হারান পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। যদিও একপ্রান্ত আগলে রেখে পাকিস্তানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে বাংলাদেশের বোলাররাও নিয়ন্ত্রিত বোলিংটাই করে গিয়েছেন। মিরাজ দুই ওভার বোলিং করে খরচ করেছেন মাত্র ১২ রান। আরেক স্পিনার নাসুম আহমেদও চার ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২২ রান।

তবে আগুন ঝড়ানো বোলিং দেখা গিয়েছে তাসকিন আহমেদের কাছ থেকে। পেস বোলিং কন্ডিশনে এই পেসারের গতি কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা আরেকবার টের পেল পাকিস্তানের ব্যাটাররা। তাসকিন চার ওভার বোলিং করে খরচ করেছেন মাত্র ২৫ রান। তুলে নিয়েছেন দুটি উইকেটও।

তবে হতাশ করেছে বাকি দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ করে মুস্তাফিজের বোলিংটা ছিল একেবারের নির্বিষ। বিদেশের মাটিতে কিংবা পেস বোলিং কন্ডিশনে মাঠে নামলেই বারবার ফুটে উঠে ফিজের এমন দৈন দশা। আজও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। নিজের শেষ দুই ওভারে এই পেসার খরচ করেছেন ২৯ রান। এছাড়া চার ওভারে দিয়েছেন মোট ৪৮ রান, উইকেট পাননি একটিও।

মুস্তাফিজকে বোলিংয়ে আনার জন্যেও অবশ্য সমালোচিত হতে পারেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। প্রথম দুই ওভারেই বোঝা যাচ্ছিল আজ একেবারেই মুস্তাফিজের দিন ছিল না। তবুও ডেথ ওভারের জন্য রাখা হয়েছে ফিজের দুই ওভার। আর তাঁরই খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অন্য বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এর পরেও পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে ১৬৭ রান তুলতে পেরেছে।

এছাড়া আজ অন্য বোলরার প্রশংসা পেতেই পারেন। অধিনায়ক সোহানও নিজের কাজটা একেবারে মন্দ করেননি। ফিল্ডিংটাও আজ ভালো করেছে বাংলাদেশ দল। ইয়াসির আলি রাব্বি ও হাসান মাহমুদ অসাধারণ দুটি ক্যাচও নিয়েছেন। এবার বাকিটা নির্ভর করছে ব্যাটসম্যানদের উপর।

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link