সেমিফাইনালের স্বপ্ন নিয়ে নেমেছিলেন খেলতে। আশা ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়। কিন্তু, সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সেটা তো হলই না। বরং বাংলাদেশ নূন্যতম লড়াইটা করতেও ব্যর্থ হল। বোলারদের ওপর একাই যেন ঝড় তুললেন রাইলি রুশো। আর ব্যাটসম্যানরা সেই পাহাড় সমান রানের চাপে ভেঙে পড়লেন।
ম্যাচ শেষে সাকিব অবশ্য দাবি করলেন টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এরকম হতেই পারে। বললেন, ‘টি-টোয়েন্টির ম্যাচগুলোতে এমন হয়, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আসলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খুবই এক্সাইটিং, এন্টারটেইনিং একটা ফরম্যাট। আবার এখানে একই সাথে একরকম কঠিন ফলাফলগুলোও হজম করতে হবে।’
তবে, বাংলাদেশের ব্যাটিং মানসিকতায় প্রচণ্ড হতাশ সাকিব। তিনি বললেন, ‘এখানে আমাদের বড় রান করার সুযোগ ছিল। এমন না যে আমরা ম্যাচ জিতে ফেলতাম হয়তো। কিন্তু, আমরা কাছাকাছি যেতে পারতাম। সেদিক থেকে আমি হতাশ।’
যদিও, সাকিব সতীর্থদের ব্যাটিংয়ে যতই হতাশা প্রকাশ করুন না কেন, তিনি নিজেও একই দোষে দুষ্ট। এদিন চার বলে মাত্র এক রান করেন তিনি। এনরিচ নরকিয়ার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন।
বিরাট স্কোর দেখে ভেঙে পড়া নতুন কিছু নয় বাংলাদেশের জন্য। কেন বার বার এমন হয়? সাকিব মনে করেন, এখানে বাংলাদেশের ঘাটতিটা বিশ্বাসে। তিনি বলেন, ‘এটার একটা বড় কারণ হতে পারে বিশ্বাস। আমরা কোনো ভাবেই বিশ্বাস করতে পারি না যে আমরা বড় রান তাড়া করে জিততে পারব। আরেকটা ব্যাপার হল, আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটেও এরকম বড় রান তাড়া করে কখনও জিতি না। তাই এই জায়গায় একটা ঘাটতি আমাদের আছেই। বাকিরা যেখানে নিয়মিত ১৮০-২০০ রান তাড়া করে, আমরা পারি না, ঘাটতি তো আছেই।’
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস আজ যেন ছিল আত্মহত্যার মিছিল। এক সৌম্য সরকার বাদে কারও মধ্যেই যেন জয়ের ক্ষুধা ছিল না। ব্যাটিং ধসও সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব বলেন, ‘যখন দুই-তিনটা উইকেট দ্রুত পড়ে যায়, তখন আসলে রিকভার করার খুব বেশি সুযোগ থাকে না। টি-টোয়েন্টিতে মোমেন্টাম খুব বড় ব্যাপার। ফলে এখানে ডাউনফল আসবেই।’
সব মিলিয়ে সাকিব ভেঙে পড়েননি। টি-টোয়েন্টির এই কঠিন বাস্তবতা তিনি মেনে নিয়েছেন। একই সাথে উন্নতিরও সুযোগ দেখছেন। বললেন, ‘উন্নতি করতে হবে। যদিও, বারবার উন্নতি করার কথা বলতে ভাল লাগে না। কিন্তু, টি-টোয়েন্টিটাই আসলে এমন। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ দেখলেও খেয়াল করবেন অস্ট্রেলিয়া কলাপ্স করেছে। তবে, আমি নিজেও বিশ্বাস করি যে আরও ভাল পারফর্ম করা উচিৎ ছিল।’
সাকিবের বিশ্বাস বাংলাদেশের পক্ষে আরও ভাল করা সম্ভব। এবার এই বিশ্বাসটা দলের সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেই হয়!