আগের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও পুঁচকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের আগে পা মাটিতেই ছিল রোহিত শর্মার দলের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট অনিশ্চয়তার আরেক নাম তাই তো আগে থেকেই সাবধানী ছিল ভারত। তবে মাঠের বাইরে নেদারল্যান্ডসকে সমীহের চোখে দেখলেও মাঠের খেলায় ডাচদের এক প্রকার উড়িয়েই দিল আকাশী নীলেরা। বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৫৬ রানে হারাল ভারত।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এদিন টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তবে চার মেরে রানের খাতা খোলা লোকেশ রাহুল তৃতীয় ওভারেই ১২ বলে ৯ রান নিয়ে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ভারতীয় দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি জুটি গড়েন। তবে শুরুর রানের গতি অনেকটা কম ছিল। পাওয়ারপ্লের শেষে ভারতের রান এক উইকেট হারিয়ে ৩২।
শুরুতে শান্ত থাকা এই দুই ব্যাটার আক্রমণাত্মক হতে থাকেন। মাঝখানে অতিরিক্ত শট খেলতে গিয়ে রোহিত শর্মা ক্যাচ তুলে দিলেও তা হাতে জমাতে পারেনি নেদারল্যান্ডসের ফিল্ডাররা। ক্যাচ মিসের সুযোগে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন ভারতীয় অধিনায়ক। অর্ধশতক পূরণের পর পরই দলীয় ৮৪ রানে ফ্রেড ক্লাসেনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। রোহিত শর্মা ৩৯ বলে ৫৩ রান করেন।
এরপর বিরাট কোহলির সাথে যোগ দিয়ে দলের রানকে দ্রুত গতিতে বাড়াতে থাকেন সুরিয়াকুমার যাদব। এই দুজনে ডাচ বোলারদের তুলোধুনো করে শেষ আট ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৯৫ রান তুলে নেন। এই দুই ডানহাতি ব্যাটারের উপর ভর করে ১৭৯ রানের পাহাড়ে পৌঁছায় ভারতীয় দল। বিরাট কোহলি সর্বোচ্চ ৪৪ বলে ৬২ রান করেন। এছাড়া সুরিয়াকুমার যাদব ২৫ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন। নেদারল্যান্ডসের ভ্যান ম্যাকেরেন ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে এক উইকেট তুলে নেন।
১৮০ রানের জবাবে নেদারল্যান্ডস ব্যাট করতে নামলে প্রথম ওভারেই মেই ডেন ও তৃতীয় ওভারে ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংকে তুলে নেন ভারতীয় বোলার ভূবনেশ্বর কুমার। এরপর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আরেক ওপেনার ম্যাক্স ওডোইডকে ফেরান পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র এক ওভারের সুযোগ পাওয়া অক্ষর প্যাটেল। শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারানো নেদারল্যান্ডসের ব্যাটিং লাইন ভারতের বোলারদের সামনে খাবি খেতে থাকে। দশম ওভারে অলরাউন্ডার বাস ডি লিড আউট হলে দশ ওভার শেষে নেদারল্যান্ডসের স্কোর দাঁড়ায় ৫১ রান তিন উইকেট হারিয়ে।
শেষ দশ ওভারে ১২৯ রানের প্রয়োজন থাকলেও তাঁরা রানের গতি বাড়াতে না পারায় ও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। কলিন অ্যাকেরম্যান ২১ বলে ১৭, শারিজ আহমাদ ১১ বলে ১৬, ভ্যান ম্যাকেরেন ৬ বলে ১৪ করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানে থেমে যায় কমলা জার্সিধারীরা। টিম প্রিঙ্গল নেদারল্যান্ডসের হয়ে সর্বোচ্চ ২০ রান করেন। ভারতের ভূবনেশ্বর কুমার, আর্শদ্বীপ সিং, অক্ষর প্যাটেল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন সকলেই দুইটি করে উইকেট নেন।
শেষ দিকে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য ম্যাচ সেরা হন ভারতের সুরিয়াকুমার যাদব। এই জয়ে দুই ম্যাচে দুটিতেই জেতায় গ্রুপের শীর্ষে উঠে আসে ভারত। অন্যদিকে দুই ম্যাচে দুই হারে সবার শেষে নেদারল্যান্ডস।