আর্শদ্বীপ হয়ে উঠেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম পেস ভরসা। শোনা যায় এই বোলার নাকি এক ওভারের ছয়টি বলই ভিন্ন ভিন্নভাবে ডেলিভারি দিতে সক্ষম। এশিয়া কাপের হতাশা আর্শদ্বীপ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে বনে গেছেন ভরসা। আর্শদ্বীপের হতাশা থেকে ভরসা হয়ে ওঠার গল্পটা খুব একটা সহজ ছিল না যদিও। ভক্ত-সমর্থকরা এখন আর্শদ্বীপে মুগ্ধ, সাবেকরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কেউ কেউ আর্শদ্বীপকে ক্রিকেটের কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামের সাথে তুলনাও করে ফেলেন।
সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা জন্টি রোডস মনে করেন আর্শদ্বীপ সিং একজন ক্রিকেটার হিসেবে দুর্দান্তভাবে পরিণত উঠেছেন। দুর্দান্ত সম্ভাবনার দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছেন এই বোলার। তবে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার জানান ‘দ্য গ্রেট ওয়াসিম আকরাম’ এর সাথে তুলনা করাটা আর্শদ্বীপ সিংকে চাপে ফেলবে। তেইশ বছর বয়সী এই পেসারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ-২০২২ এর অভিজ্ঞতা ভালো ছিল। যদিও ইংল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে পরাজয়ের মাধ্যমে তার দলের বিশ্বকাপ যাত্রার ইতি ঘটেছিল।
বলকে উভয় দিকে সুইং করার ক্ষমতাসম্পন্ন তরুণ আর্শদ্বীপ ভারতের শীর্ষস্থানীয় উইকেট শিকারী ছিল এই টুর্নামেন্টে। ছয়টি ম্যাচ থেকে ৭.৮০ ইকোনমিতে দশটি উইকেটের মালিক তিনি। আর্শদ্বীপের অসাধারণ এই বোলিং শৈলির জন্য তাঁকে ওয়াসিম আকরামের সাথে তুলনার প্রসঙ্গে জন্টি রোডস বলেন, ‘আমি মনে করি সুইংয়ের সুলতান গ্রেট ওয়াসিম আকরামের সাথে তুলনা করাটা তাঁকে অনেক চাপের মধ্যে ফেলছে।’
জন্টি রোডস অবশ্য আর্শদ্বীপকে বেশ কাছ থেকে দেখেছেন। কারণ সাবেক এই প্রোটিয়াক্রিকেটার আইপিএলের পাঞ্জাব কিংসের ফিল্ডিং কোচ হিসাবে কাজ করেছিলেন। আড় আর্শদ্বীপ নিজেও পাঞ্জাব কিংসের হয়ে আইপিএলে খেলেন। তাই সরাসরি আর্শদ্বীপের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে তাঁর। তিনি তখনই টের পেয়েছিলেন এই তরুণটির জন্য প্রচুর সম্ভাবনা অপেক্ষা করছে। আর্শদ্বীপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সে বলকে দারুণ সুইং করে এবং ডেথ ওভারে সে বেশ কার্যকর। সে পাওয়ারপ্লেতেও দুর্দান্ত। নিজের ওপর সে ভাল নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে এবং আর্শদ্বীপ ওয়াসিম আকরামের মতো কার্যকরভাবে উইকেটের চারপাশে বল করতে পারে।’
কিন্তু তাই বলে তাঁকে ওয়াসিম আকরামের সাথে তুলনা করাটা তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য হানিকারক হবে। কারণ এতে আর্শদ্বীপের স্বকীয়তা নষ্ট হবে। তিনি জানান, ‘ আর্শদ্বীপ এমন একজন যার অসাধারণ ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি বর্তমান খেলোয়াড়দের সাথে আগে যারা খেলতেন তাদের সাথে তুলনা করতে শুরু করেন, এটি তাদের অপ্রয়োজনীয় চাপের মধ্যে রাখে। সে ওয়াসিম আকরাম নয়, সেরা আরশদীপ সিং হতে চায়।’
নিউজিল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের জন্য শুভমান গিল, উমরান মালিক, ইশান কিশান এবং সঞ্জু স্যামসনকে দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সিনিয়র কজন খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রোডস বলেন, ‘আপনি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের সিরিজের জন্য নির্বাচিত টি–টোয়েন্টি স্কোয়াডের দিকে তাকান। যা আপনাকে কিছু দক্ষ খেলোয়াড়ের ইঙ্গিত দেয়। সিনিয়র খেলোয়াড়দরা ছাড়াও এটি কিন্তু একটি শক্তিশালী লাইন আপ।’ সবমিলিয়ে জন্টি রোডস ভারতীয় ক্রিকেটে আর্শদ্বীপের মতো তরুণদের জন্য দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন। অন্য কারোর ছায়ায় না রেখে এই তরুণদের তাঁদের মতো খেলতে দিতে হবে। তারুণ্যে ভর করে দলটি অনেক দূর এগিয়ে যাবে এই আশাও রাখছেন তিনি। কারণ আর্শদ্বীপের মতো তরুণরাই তো আগামীর পতাকা বইবে।