গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে যারা

এবারের বিশ্বকাপের বাকি আছে মোটে আট ম্যাচ। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে তাই ভীষণভাবে জমে উঠেছে সর্বোচ্চ গোলদাতা তথা গোল্ডেন বুটের লড়াই। ২০১৮ বিশ্বকাপে ছয় গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেন। এবার দেখার বিষয় কাতার বিশ্বকাপে কেনের জুতোয় পা গলানোর দৌড়ে এগিয়ে আছেন কারা। 

  • গনসালো রামোস – পর্তুগাল

সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচ দিয়েই রীতিমতো তারকা বনে গেছেন পর্তুগালের তরুণ স্ট্রাইকার গনসালো রামোস। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ খেলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর গোলসংখ্যা যেখানে মোটে এক, সেখানে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করেছেন রামোস। সুইসদের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় এক ম্যাচ কাটিয়ে চলে এসেছেন গোল্ডেন বুটের দৌড়ে। কোয়ার্টারে মরক্কোর বিপক্ষেও চাইবেন গোলের ধারাটা অব্যাহত রাখতে।

  • রিচার্লিসন – ব্রাজিল

বিশ্বকাপ শুরুর আগে ব্রাজিল দলের সবচেয়ে দুর্বলতম সদস্য ভাবা হচ্ছিল রিচার্লিসনকে। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হতেই যেন অন্যরূপে ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড, সার্বিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করে গোলের খাতা খোলেন তিনি। এরপর সময় যত গড়িয়েছে রিচার্লিসন তত ধারালো হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গোলটি তো ছিল চোখধাঁধানো। বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট জয়ের বড় দাবিদার তিনি।

  • অলিভার জিরুড – ফ্রান্স

বিশ্বকাপের আগে করিম বেনজেমা ইনজুরিতে না পড়তে হয়তো ফ্রান্সের একাদশেই থাকা হতো না অলভার জিরুডের। তাছাড়া আগের বিশ্বকাপে সব ম্যাচে একাদশে থেকেও গোল না করার সুঃসহ স্মৃতি তো আছেই। সবমিলিয়ে জিরুড বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন বেশ চাপে থেকে। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত তিন গোল হয়ে গেছে তাঁর, থিয়েরি অরিকে ছাপিয়ে ফ্রান্সের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন জিরুড। 

  • বুকায়ো সাকা – ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাদের একজন বুকায়ো সাকা। আর্সেনালের হয়ে দারুণ এক মৌসুম শুরুর পর বিশ্বকাপেও আছেন চেনা ছন্দে। ইতোমধ্যেই করে ফেলেছেন তিন গোল, নিজ দেশ ইংল্যান্ডে তাঁকে তুলনা করা হচ্ছে কিলিয়ান এমবাপ্পের সাথে। শেষ চারে উঠার লড়াইয়ে এই দুজনের লড়াই উত্তাপ ছড়াবে ভীষণ। 

  • মার্কাস রাশফোর্ড – ইংল্যান্ড

গ্যারেথ সাউথগেটের প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি। তাতে কি আর মার্কাস রাশফোর্ডের গোল করা থেমে থাকে! বদলি হিসেবে নেমে এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপে করে ফেলেছেন তিন গোল। কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে অগ্নিপরীক্ষার ম্যাচে সাউথগেটের সুপার সাব রাশফোর্ডই।

  • কোডি গাকপো – নেদারল্যান্ডস 

এবারের বিশ্বকাপের সেরা তরুণ ফুটবলারদের মাঝে উপরের দিকেই থাকবে কোডি গাকপোর নাম। ইতোমধ্যেই দলবদলের বাজারে বড় দলগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই গোল করে বিরল এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন এই ডাচ তারকা।

দ্বিতীয় রাউন্ডে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গোল না পেলেও আক্রমণভাগে ছিলেন দারুণ সপ্রতিভ। কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও গোলের জন্য গাকপোর দিকে তাকিয়ে থাকবে ডাচরা। 

  • লিওনেল মেসি – আর্জেন্টিনা

নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ রাঙিয়ে তোলার জন্য চেষ্টার কমতি রাখছেন না লিওনেল মেসি। সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়া আর্জেন্টিনাকে টেনে তুলেছেন। দ্বিতীয় রাউন্ডেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ এক গোল করে দলকে গিয়ে দিয়েছিলেন মেসিই। জাতীয় দলের হয়ে সেটা ছিল মেসির ৯৪তম গোল। 

  • কিলিয়ান এমবাপ্পে – ফ্রান্স

কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য এবারের বিশ্বকাপটা অমরত্বপ্রাপ্তির। আগের বিশ্বকাপটা যেখান থেকে শেষ করেছিলেন এবার যেন সেখান থেকেই শুরু করেছেন কাতার বিশ্বকাপ। প্রথম ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জোড়া দিয়ে শুরু, এরপর ডেনমার্কের বিপক্ষেও গোল পেয়েছেন।

মাঝে তিউনিশিয়ার ম্যাচে বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে পোল্যান্ডের জালে বল পাঠিয়েছে আরো দুবার। সবমিলিয়ে পাঁচ গোল নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে সবার চাইতে এগিয়ে আছেন এমবাপ্পে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link