পেছনের পায়ে ভর করে পয়েন্টের দিকে একটা পাঞ্চ করলেন। একেবারে ব্যাটের মাঝখান দিয়ে খেলা লিটনের শট ফেরায় কে। মোহাম্মদ সিরাজের ব্যাক অব লেন্থে করা বলটা চলে গেল সীমানার বাইরে। চার মেরে আবার সিরাজের পিঠ চাপড়ে দিলেন লিটন। যেন চট্টগ্রাম টেস্টের লড়াইটা আরো টেনে নিয়ে যেতে চাইছেন তিনি।
লিটনের কাছে চার খেয়ে আবার উপহাসের সান্ত্বনা। নিশ্চয়ই পেসার সিরাজ খুব ভাল ভাবে নেননি সেটা। তাইতো পরের বলে সিরাজের ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা। এবার মারলেন বাউন্সার। তবে সিরাজে বাউন্সারের কঠিন জবাব প্রস্তুত ছিল লিটনের ব্যাটে। ডিপ স্কয়ারের উপর দিয়ে এবার লিটনের সহজ ছয়। টেস্ট ম্যাচ ছাপিয়ে খানিকক্ষণের জন্য তাঁদের লড়াইটাই বড় হয়ে উঠলো।
আজকের লড়াইয়ে সিরাজ না পারলেও চট্টগ্রাম টেস্টে ঠিকই জিতেছিলেন সিরাজ। লিটনকে উস্কে দিয়েছিলেন এই পেসার। মাথা গরম করে সিরাজের কাছেই নিজের উইকেটও হারিয়েছিলেন লিটন। তবে এই টেস্টে সিরাজকে পরপর দুই বাউন্ডারি মারলেন লিটন। সিরাজের সাথে ব্যাট বলের লড়াইয়ে জিতলেও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি এই ব্যাটার।
চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসেই ছিলেন ব্যর্থ। আর ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসেও আজ তাঁর আউট ছিল হতাশার। চা বিরতির খানিক আগেই নিজের উইকেট দিয়ে এসে দলকে বিপাকে ফেলেছেন। লিটন আজ করতে পেরেছেন মাত্র ২৫ রান। অথচ মিরপুরের উইকেটে লিটনের কাছ থেকে বড় ইনিংস ভীষণ দরকার ছিল বাংলাদেশের।
ওদিকে লিটনের কাছে পিটুনি খাওয়ার পর আজ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি ভারতের পেসার মোহাম্মদ সিরাজও। সারাদিনে ৯ ওভার বল করে খরচ করেছেন ৩৯ রান। উইকেট নিতে পারেননি একটিও। তবে ভারতের আরেক পেসার উমেশ যাদব তুলে নিয়েছেন চার উইকেট। স্পিনার রবিচন্দন অশ্বিনও পেয়েছেন চার উইকেট।
ওদিকে ঢাকা টেস্টে প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। উইকেটে কিছুটা স্পিন ধরলেও স্কোরবোর্ডে আরো কিছু রান যোগ করে নেয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। চট্টগ্রামের মত এখানেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ অল আউট হয়ে গিয়েছে মাত্র ২২৭ রানেই।
একমাত্র মুমিনুল হক ছাড়া বাংলাদেশের আর কোন ব্যাটার অর্ধশতকের দেখাও পাননি। তিন নাম্বারে ফিরে মুমিনুল খেলেন ৮৪ রানের ইনিংস। তবে আরেক প্রান্তে তাঁকে সঙ্গ দেয়ার জন্য কেউই ছিলেন না।
ওদিকে দিনের শেষে আট ওভার ব্যাট করতে হয়েছে ভারতকে। ভারেতের দুই ওপেনার অপরাজিত থাকলেও শেষবেলায় কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয়েছে লোকেশ রাহুল ও শুভনম গিলকে। তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান দুজনই কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন ভারতের ব্যাটারদের।
ফলে বাংলাদেশের পুজি মাত্র ২২৭ রান হলে আগামীকাল হয়তো ভারতের কঠিন পরীক্ষাই নিবে বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে মিরপুরের উইকেটে সাকিব, তাইজুল, মিরাজও হয়ে উঠতে পারেন ভয়াবহ। বোলাররা উইকেটের সঠিক ব্যবহার করতে পারলেও এই রানও পাহাড়সম হয়ে উঠতে পারে কোহলিদের জন্য।