এনজো ফার্নান্দেজের গন্তব্য চূড়ান্ত?

বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল লিওনেল মেসির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। আর গোল্ডেন বুট জিতে নিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক হিসেবে গোল্ডেন গ্লাভস নিজের করে নিয়েছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আরো একটি পুরষ্কার বাকি ছিল; ‘ইয়ং ফুটবলার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ নামের সেই পুরষ্কার গ্রহণ করার জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল ২১ বছর বয়সী এক আর্জেন্টাইন তরুণকে।

কাতার বিশ্বকাপে সেরা উদীয়মান ফুটবলারের তকমা পাওয়া সেই তরুণের নাম নিশ্চয়ই জানা হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। বেনফিকার হয়ে খেলা এঞ্জো ফার্নান্দেজ-ই মর্যাদার এই অর্জন নিজের ঝুলিতে পুরেছিলেন। পুরো বিশ্বকাপ জুড়েই আলবিসেলেস্তাদের মাঝমাঠ সামলেছিলেন এনজো ফার্নান্দেজ। ৩৬ বছরের অপেক্ষার পর বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক তিনিও।

ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সের পর স্বাভাবিকভাবেই দলবদলের বাজারে হটকেক হয়ে উঠেছেন এঞ্জো ফার্নান্দেজ। সুযোগ বুঝে বেনফিকাও তাঁর ট্রান্সফার ফি অন্তত ১২০ মিলিয়ন পাউন্ড নির্ধারণ করেছিল। অবশ্য তবুও থেমে যায়নি চেলসি, পিএসজি, রিয়াল মাদ্রিদের মত ইউরোপীয় ক্লাবগুলোর। যেকোনো মূল্যে এই মিডফিল্ডারকে দলে ভেড়াতে চায় তাঁরা।

যদিও বেনফিকা থেকে এঞ্জো ফার্নান্দেজ নিয়ে আসার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। বেনফিকার দাবিকৃত অর্থ দিতে রাজি হয়েছে দলটি। সবমিলিয়ে প্রায় ১৩০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ফার্নান্দেজের সাথে চুক্তি করতে যাচ্ছে ব্লুজরা। এর মাঝে প্রথম দফায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং পরবর্তীতে আরো ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড দিবে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি।

সম্প্রতি চেলসির ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন গ্রাহাম পটার। ২০২২/২৩ মৌসুমের দ্বিতীয় অংশে স্কোয়াডকে আরো শক্তিশালী করতপ আগ্রহী এই কোচ। তাই শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডো ভালভাবে কাজে লাগাতে উন্মুখ হয়ে আছে চেলসি। আর দলের মিডফিল্ডকে শক্তিশালী করার জন্যই এঞ্জো ফার্নান্দেজকে যেকোনো মুল্যে পেতে চায় তাঁরা। নিজেদের উদ্দেশ্যে অনেকটাই সফল হয়েছে চেলসি, শেষমুহুর্তে কোন অঘটন না ঘটলে আর্জেন্টাইন তরুণকে লন্ডনেই দেখা যাবে।

চেলসি ছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল এবং পিএসজি এনজো ফার্নান্দেজকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে ২০২৩ এর শুরুতে দলগুলোর আগ্রহ তুলনামূলক কমে গিয়েছে। আপাতত রিয়াল মাদ্রিদের নজরে আছেন ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহ্যাম। আর অলরেডরা ইতোমধ্যে কডি গ্যাকপোকে নিজেদের করে নিয়েছে।

শেষপর্যন্ত যদি এঞ্জো ফার্নান্দেজ চেলসির নীল জার্সি গায়ে জড়ান তবে নিশ্চিতভাবেই দলবদলের রেকর্ড বইয়ে ঝড় উঠবে। সবচেয়ে দামী মিডফিল্ডার হবেন এই তারকা; এছাড়া ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল খেলোয়াড়দের তালিকায় লেখা হবে তাঁর নাম। এমন কীর্তি এই ফুটবলার নিজে তো বটেই তাঁর ভক্তরাও উপভোগ করবেন।

কিন্তু অর্থের ঝনঝনানি যেখানে বেশি সেখানে প্রত্যাশার পারদও উপরে উঠে তরতর করে। তাই এঞ্জো ফার্নান্দেজের জন্য রেকর্ড পরিমাণ অর্থ খরচ করলে চেলসিও বিশেষ দৃষ্টিতে দেখবে তাঁকে। প্রত্যাশার চাপ কাঁধে নিয়েই নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করতে হবে এই আর্জেন্টাইন তরুণকে।

কিলিয়ান এমবাপ্পে, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, গ্যারেথ বেল সহ অনেক ফুটবলারই নিজেদের দামী ট্যাগের বিনিময়ে উপহার দিয়েছেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। আবার ইডেন হ্যাজার্ড, পল পগবাদের মত ফ্লপ হওয়ার নজিরও নেহাৎ কম নয়। এনজো ফার্নান্দেজ কোন পক্ষে যাবেন সেটি তো সময়ই বলে দিবে, তবে বিশ্বকাপ জেতা এবং জেতানো একজনের কাছে নিশ্চয়ই হতাশার কিছু দেখতে চাইবে না কোন ফুটবলপ্রেমী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link