আজ সকালেই বিমানবন্দরে এসে নেমেছেন। তারপর ভ্রমণ ক্লান্তি ব্যাপারটাকে একটা মিথে পরিণত করলেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চলে এলেন নিজ দল রংপুর রাইডার্সের নিজস্ব মাঠে। সেখানে আবার আজ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে রংপুর রাইডার্স এবং খুলনা টাইগার্স। সিকান্দার রাজা নেমে পড়লেন এই ম্যাচেও। শুধু নামলেনই না, লো স্কোরিং এই ম্যাচে দেখালেন কী করে ব্যাটিংটা করতে হয়।
রংপুরের মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি খুলনা টাইগার্স। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের উইকেট যেন একটা ধোঁয়াশা হয়ে উঠেছিল তামিম ইকবালদের জন্য। খুলনার তরুণ তুর্কী হাবিবুর রহমান সোহান অবশ্য একটা ঝড়ো শুরু এনে দিয়েছিলেন। তবে সোহান ১৬ রান করে ফিরে যাওয়ার পর আর কেউই তেমন রানের দেখা পাননি। শেষ পর্যন্ত খুলনা অল আউট হয়েছে মাত্র ৮৭ রানে।
অথচ কুয়াশায় ঢাকা মাঠে সিকান্দার রাজা এই পিচকেই বানিয়ে ফেললেন ব্যাটিং উইকেট। তিনি ব্যাট করতে নামার পর গ্যালারিতে থাকা কয়েকশ দর্শক যেন খানিকটা আনন্দ পেল। সিকান্দার রাজা যখন ব্যাট করছিলেন তখন এক সাংবাদিক বলছিলেন, ‘ওদের জন্য আসলে কোন অজুহাত নেই। এত শীত, বাজে উইকেট এসব কোন ব্যাপার না। সকালের ফ্লাইটে এসেই মাঠে নামল। এখন দিব্যি রান করছে।’
সত্যিই সিকান্দার রাজার জন্য কোন অজুহাত নেই। সকালে বাংলাদেশ পৌঁছে চাইলেই তিনি আজ বিশ্রাম নিতে পারতেন। তবে রান করাট কিংবা উইকেট নেয়াটা এখন নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই অলরাউন্ডারের জন্য। লো স্কোরিং ম্যাচেও ৩১ রানের ইনিংস খেলেছেন, ছিলেন অপরাজিত। তবে তাও যেন ক্ষুধা মিটলো না রাজার। নিজের পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করলেন ম্যাচ শেষ হবার পরেও।
মাঠের একটা পাশ থেকে বড় বড় শট খেলার অনুশীলন করলেন খানিকক্ষণ। চেষ্টা করছিলেন কী করে বলটাকে আরো বেশি দূরে পাঠানো যায়। সিকান্দার রাজা এরপর নিজের শট নিয়ে কথা বললেন শাহরিয়ার নাফিসের সাথে। শাহরিয়ার নাফিসও হাতের পজিশনটা দেখিয়ে দিলেন। এরপর আরো কয়েকটা বল জোরে মারার চেষ্টা।
ঠিক কী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল শাহরিয়ার নাফিসের সাথে এমন প্রশ্নের উত্তরে খেলা ৭১ কে রাজার এক কথার উত্তর, ‘পাওয়ার হিটিং।’ কী পরামর্শ দিলেন শাহরিয়ার নাফিস সেটা কী বলা যায়? এবার মুখে বিশাল একটা হাসি নিয়ে বললেন, ‘কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার নাফিস ভাই আমাকে বললেন। আমি সেগুলো আবার চেষ্টা করলাম। এইতো। এর চেয়ে বেশি বলা ঠিক হবে না।’
বোঝাই যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের ব্যাটের ধারটা আরেকটু বাড়াতে চান সিকান্দার রাজা। হয়ে উঠতে চান আরো অনেক বেশি ইমপ্যাক্টফুল। গত বছরটা দারুণ কেটেছে এই অলরাউন্ডারের। এবারের বিপিএলেও রংপুরের অন্যতম শক্তির জায়গা জিম্বাবুয়ের এই ক্রিকেটার।
তবে রাজার জন্য অপেক্ষা করছে আরো বড় মঞ্চ। এবারই প্রথম দল পেয়েছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)। এত বড় মঞ্চে নিশ্চয়ই নিজের ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে চাইবেন রাজা। কেননা আইপিএলে খেলাটা যে রাজার কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতই।