বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দূর আকাশের তারা হলেও কাতার বিশ্বকাপের পুরোটা জুড়েই আলোচনায় ছিল বাংলাদেশ। লাতিনের দুই দেশ ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাকে নিয়ে এদেশীয় সমর্থকদের আবেগ ছুঁয়ে গেছে গোটা বিশ্ববাসীকে।
জানা গেছে সেই সুবাদেই এক দশক পর দ্বিতীয়বারের মতো প্রীতি ম্যাচে অংশ নিতে বাংলাদেশে আসছেন মেসি-এমি মার্টিনেজরা। সেই খবরের রেশ না কাটতেই এলো আরো এক সুখবর, দুই ফুটবলার তপু বর্মণ এবং মাহমুদুল হাসান কিরণ ডাক পেয়েছেন আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের ক্লাব থেকে।
অতীতে শেখ মোহাম্মদ আসলাম, মোনেম মুন্না, আলফাজ আহমেদরা দাপিয়ে খেলেছেন কলকাতার মাঠে। তারও আগে কাজী সালাউদ্দিনের ফুটবলশৈলীতে মুগ্ধ হয়েছে হংকংবাসী। এরপর বড় এক বিরতি দিয়ে দুই মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম এবং জামাল ভূঁইয়া গায়ে জড়িয়েছেন কলকাতার ক্লাবগুলোর জার্সি।
বাংলাদেশের ফুটবলারদের সামর্থ্য বিবেচনায় কলকাতার ক্লাবগুলোই সর্বোচ্চ যাত্রা এমনটাই ছিল সবার ধারণা। স্বয়ং লিওনেল মেসির দেশ থেকে অফার আসবে বাংলাদেশি ফুটবলারের কাছে সে তো কল্পনাতীত ব্যাপার। হোক না তৃতীয় বিভাগের দল, গুণেমানে সোল দে মায়ো বাংলাদেশের যেকোনো ক্লাবের থেকে গুণেমানে বেশ এগিয়ে।
মূলত আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল সোল দে মায়ো বসুন্ধরা কিংসের দুই ফুটবলার তপু বর্মণ এবং মাহমুদুল হাসান কিরণকে দলে ভেড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ দলের ডিফেন্সের মূল রক্ষাকর্তা তপু বর্মণ গত মৌসুম প্রায় পুরোটাই বাইরে কাটিয়েছেন ইনজুরির কারণে।
কেবল রক্ষণ সামলাতে নয়, সেটপিস থেকে হেডে গোল করতে দারুণ পটু এই সেন্টারব্যাক। তপু বলেন, ‘গত বছরের শেষ দিকে আর্জেন্টাইন ক্লাবটি আমার সাথে যোগাযোগ করে। তাঁদের লিগ শুরু হবে মার্চ মাস থেকে। তাঁরা আমাকে প্রাক মৌসুমে প্রস্তুতির সময় থেকেই চায়।’
গত কয়েক মৌসুমে আফ্রিকান ফুটবলারদের বদলে লাতিনের ফুটবলার দলে ভেড়ানোতেই বেশি মনোযোগী হচ্ছে বাংলাদেশি ক্লাবগুলো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার তৃতীয় এবং চতুর্থ বিভাগে খেলা ফুটবলাররাই বাংলাদেশে আসেন। ফলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা অনুসরণ করেন লাতিনের দেশগুলোর স্কাউটরা। তপুর ধারণা সেখান থেকেই কোনো স্কাউটের মাধ্যমে তাঁর খেলা মনে ধরেছে ক্লাবটির।
এছাড়া আর্জেন্টিনার ক্লাবটি থেকে বেশ ভালো অংকের পারিশ্রমিকের অফার পেয়েছেন তিনি। বর্তমানের চাইতে তো বেশিই, তপুর ভাষ্যমতে অংকটা মাসপ্রতি প্রায় ১২-১৩ হাজার ডলারের আশেপাশেই। তবে এত দুর্দান্ত অফার পেয়েও যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত নন তপু।
কারণটা নিশ্চিতভাবেই বর্তমান ক্লাবের সাথে চুক্তি, প্রথম বাংলাদেশি ক্লাব হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মূলপর্বে খেলার সুযোগ রয়েছে বসুন্ধরা কিংসের সামনে। তাকে ঘিরেই রক্ষণভাগটা সাজান কিংস কোচ অস্কার ব্রুজোন। সেই কারণেই ক্লাবকে বিপদে ফেলে আর্জেন্টিনায় যাবার ব্যাপারে সন্দিহান তপু। জানিয়েছেন ক্লাব থেকে অনুমতি পেলেই কেবল সোল দে মায়োর সাথে কথাবার্তা এগোবেন তিনি।
অন্যদিকে রাইটব্যাক মাহমুদুল হাসান কিরণের ক্যারিয়ার সবেমাত্র শুরু। গত মৌসুমে রহমতগঞ্জের হয়ে আলো ছড়িয়ে এবারে নাম লিখিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসে। যদিও তারকাখচিত কিংসের হয়ে নতুন মৌসুমে মাঠে নামার তেমন সুযোগ পাননি। তরুণ এই ফুলব্যাকের সামনে তাই বড় সুযোগ। এখন দেখার বিষয় তপু এবং কিরণ আর্জেন্টিনাতে যাবার ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেন।