নাসিমের আগুনে পুড়ে ছারখার ঢাকা

নিজেদের যেন হারিয়ে খুঁজছে ঢাকা ডমিনেটর্স। অন্যদিকে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়ান্সের টার্গেট ম্যাচ জিতে প্লে-অফের টিকিট পাকাপোক্ত করা। দীর্ঘ একটা সময় পরে ঢাকায় ফিরেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। এদিন দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি ঢাকা ও কুমিল্লা। আর সেই লড়াইয়ে শেষ হাসিটা হেসেছে গেল বারের চ্যাম্পিয়নরা।

টস জিতে প্রথম বোলিং করবার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেন। দারুণ প্রতিভাবান কুমিল্লার ব্যাটিং অর্ডার। সেই ব্যাটিং লাইনআপকে শুরু থেকেই চেপে ধরার পরিকল্পনাই হয়ত ছিল ডমিনেটর্সদের। আর পরিকল্পনা মতো সে কাজটা শুরু করেন ঢাকার পেসার আল-আমিন হোসেন। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে দূর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ডান-হাতি এই পেসার। ঠিক সেখানেই কুমিল্লার রানের গতি স্লথ হয়ে যায়।

তবে তখনও বাইশ গজে ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা লিটন কুমার দাস। যদিও তিনি খুব একটা হাতখুলে খেলার সুযোগ পাননি। যথারীতি ব্যাটারদের জন্যে বৈরি আচরণই উপহার দিয়েছে মিরপুরের উইকেট। সেই উইকেটে দাঁড়িয়ে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ হয়নি কোন ব্যাটারের। ২০ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন কুমার দাস। এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকেও আসে ২২ বলে ২৮।

বড় ইনিংস হয়ত কুমিল্লার কোন ব্যাটার উপহার দিতে পারেননি। তবে প্রায় প্রতিটা ব্যাটারের ব্যাটেই রান এসেছে। জনসন চার্লস দারুণ কিছু শট খেলে নিজেকে সাবলীল প্রমাণ করছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউটে কাঁটা পড়েন চার্লস। যার দায়ভার সম্পূর্ণ মোসাদ্দেক হোসেনের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া যায়। চার্লস ওমনভাবে আউট না হলে বড় সংগ্রহের দিকেই এগোতে পারত কুমিল্লা।

কিন্তু তা আর হয়নি। যদিও মাঝপথে খুশদীল শাহ নিজের বিধ্বংসী রুপটা অব্যাহত রেখেছিলেন। যদিও তিনি লম্বা সময় থাকতে পারেননি বাইশ গজে। ৩০ রানের ছোট্ট একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি মাত্র ১৭ বলে। ছোট ছোট আরও বেশকিছু ইনিংস খেলেন জাকির আলি ও আবু হায়দার রনিরা। যার বদৌলতে ১৬৪ রানের পুঁজি পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

১৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামে পয়েন্ট টেবিলের একেবারে তলানিতে থাকা ঢাকা ডমিনেটর্স। তবে ধুকতে থাকা দলটা এদিনও সুবিধা করতে পারেনি। কুমিল্লার নতুন সংযোজন নাসিম শাহ প্রথম আঘাত হানেন ঢাকার দূর্বল ব্যাটিং দূর্গে। এরপর যেন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেই পারেনি ঢাকার কোন ব্যাটার। বলার মত কোন ইনিংস নেই ঢাকার স্কোরশিটে। নিতান্ত এক সাদামাটা চিত্র।

এমনকি দলের কাণ্ডারি নাসির হোসেনও ছিলেন ব্যাট হাতে মলিন। তিনিও দ্রুত ফিরে গেলে জয়ের আশা ক্ষীণ হতে শুরু করে ঢাকার। দলের হাল ধরার মত বলিষ্ঠ কাঁধের যে বড্ড অভাব! অন্যদিকে নাসিম শাহ গতির ঝড় তুলে লণ্ডভণ্ড করেছেন সবকিছু। কুমিল্লার বাকি বোলারদেরও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া ঢাকা আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। শেষ অবধি ১০৪ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। ৬০ রানের বিশাল এক জয় নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কুমিল্লা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link