বিশ্বকাপ জেতার পর কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের বিদ্রুপাত্মক আচরণ। এরপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। বিশ্ব ফুটবলের সাবেক ও বর্তমান ফুটবলারদের সমালোচনায় বিদ্ধ হন এমি।
তাঁকে নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন স্বয়ং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টও। এমনকি মার্টিনেজের আচরণের প্রতি নিন্দা জানিয়ে আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনে (এএফএ) চিঠি পাঠিয়েছিল ফ্রেঞ্চ ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ)।
চতুর্দিকে এত সমালোচনার স্রোতের মাঝেও নীরব ছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তবে এবার সেই ঘটনা নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন আর্জেন্টাইন এ গোলরক্ষক। ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে ‘বিদ্রূপাত্মক আচরণের’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পিছনে অন্যতম ভূমিকা ছিল গোলরক্ষক মার্টিনেজের। ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে এক প্রকার রক্ষণের ত্রাতা হয়ে ছিলেন তিনি।
অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচের শেষ মুহূর্তে কোলো মুয়ানির শট অবিশ্বাস্য সেভ করেন তিনি। আর এরপর পেনাল্টি শ্যুটআউটে গিয়ে তো তাঁর বীরত্বেই বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। এমন নৈপুণ্যে বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে।
তবে বিশ্বকাপ জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েই কিনা ভুল করে বসেন মার্টিনেজ। প্রথমত একটা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন। যদিও এটা তাঁর চিরায়ত উদযাপনের ধরন বলেই অনেকের কাছে পার পেয়ে যান।
কিন্তু, ট্রফি নিয়ে আর্জেন্টিনায় ফেরার পর আরেকবার এমবাপ্পেকে সামনে টেনে আনেন তিনি। বুয়েনস আয়ার্সে ছাদখোলা বাসে একটি পুতুল হাতে দেখা যায় মার্টিনেজকে। সেই পুতুলের মুখে ছিল এমবাপ্পের মুখের ছবি।
আর এর পরে ভীষণভাবে সমালোচিত হতে থাকেন তিনি। তবে প্রায় দুই মাস পর এটি নিয়ে ফরাসি এক পত্রিকায় ব্যাখ্যা দিয়েছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে আঘাত করতে চাইনি। ক্যারিয়ারজুড়ে আমি ফরাসিদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। কখনো একটুও সমস্যা হয়নি। আপনারা অলিভার জিরুডকে জিজ্ঞেস করতে পারেন আমি কেমন মানুষ। ওর সাথে আমি আর্সেনালে খেলেছি। আমি সত্যিই ফরাসি সংস্কৃতি এবং মানসিকতাকে পছন্দ করি।’
আর্জেন্টিনায় ছাদখোলা বাসে এমবাপ্পের ছবি সম্বলিত পুতুল নিয়ে উদ্যাপনের বিষয়ে এমি মার্টিনেজ বলেন, ‘তখন আমি বাসের উপরে ছিলাম। আমাদের দিকে প্রচুর পুতুল ছুড়ে মারছিল। অন্তত একশোটার মতো পুতুল এসেছে আমাদের কাছে। এর মধ্যে এমবাপ্পের মুখ লাগানো একটা পুতুল আমার পায়ের কাছে এসে পড়ে। এরপর আমি তুলে নিই সেটা। মাত্র দুই তিন সেকেন্ড ছিল আমার কাছে। এরপর আমি ফেলে দিই। ঘটনা এতটুকুই। এমবাপ্পেকে অসম্মান করার মতো কিছু করিনি আমি। আর ও ফাইনালে আমার জালে ৪ বার বল পাঠিয়েছে। তাঁকে নিয়ে বিদ্রুপ করার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি যথেষ্ট সম্মান করি তাঁকে।’
তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আমি ফাইনালের পর এমবাপ্পেকে বলেছিলাম, তুমি তো একাই হারিয়ে দিচ্ছিলে আমাদের। দুর্দান্ত খেলেছো। আর মেসি ফুটবল ছেড়ে দিলে, আমার কাছে এমবাপ্পেই সেরা থাকবে। ভবিষ্যতে ও অনেক ব্যালন ডি অর জিতবে।’