স্বঘোষিত ‘স্পেশাল ওয়ান’ তিনি। কোচ হিসেবে সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন নেই তেমন একটা। কোচিং ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতেছেন। কিন্তু ক্যারিয়ার জুড়েই মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ইস্যুতেই বেশি আলোচনায় এসেছেন হোসে মরিনহো। অনাকাঙ্ক্ষিত বিভিন্ন বিষয়ে খবরের শিরোনামে আসা মরিনহোর জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ক্রেমোনেসের বিপক্ষে রোমার ২-১ গোলে হারের ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানোয় লাল কার্ড দেখেন মরিনহো।
রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে চতুর্থ রেফারির সাথে তর্কে জড়ান মরিনহো। ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। লিগের এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ডাগ আউটে মরিনহোর এক ম্যাচের জন্য নিষেধাজ্ঞা রোমার জন বিরাট ক্ষতি। পরের ম্যাচটিই আবার ছিল জুভেন্টাসের বিপক্ষে। এমন সময় লাল কার্ড দেখায় নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি মরিনহো। এমন কি চতুর্থ রেফারির বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকিও দেন তিনি।
মরিনহো বলেন, ‘আমি আবেগপ্রবণ, কিন্তু পাগল নই। আমি যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাই, তাতে প্রথমে কিছু ঘটতে হবে। আমি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারি সেটা বুঝতে হবে। পিকিনিনি (রেফারি) আমাকে একটি লাল কার্ড দিয়েছেন, কারণ দুর্ভাগ্যবশত চতুর্থ রেফারি আমাকে কী বলেছেন তা বোঝার ক্ষমতা তার নেই।’
লাল কার্ডই শুধু নয়,মরিনহোর এমন আচরণে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ১০ হাজার ইউরো জরিমানাও করা হয় মরিনহোকে। এই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার করা হলেও খারিজ হয়ে যায় সেই আপিল। ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ম্যাচ শেষে কোনো অনুমতি ছাড়াই রেফারিদের ড্রেসিংরুমে গিয়ে যে ধরণের আচরণ করেছেন মরিনহো তা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।’
আপিল খারিজ হওয়ায় মোটেই খুশি হতে পারেননি মরিনহো। আপিল খারিজের সিদ্ধান্ত আসার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর এক ধরণের প্রতিবাদ জানান মরিনহো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে নিজের বিখ্যাত ‘হাতকড়া পড়ানো’ ভঙ্গিমায় ছবি শেয়ার করেন মরিনহো। এর আগে ইন্টার মিলানে থাকাকালীন মাঠের মধ্যে বা ডাগ আউটে এই ভঙ্গিমায় দেখা যায় মরিনহোকে।
মরিনহোর এমন শাস্তি মেনে নেননি রোমার সমর্থকরাও। রোমার অফিসিয়াল ফ্যান ক্লাব থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে রোমার পরবর্তী ম্যাচ দেখতে যে সকল দর্শক মাঠে যাবেন তাদেরকে একটি করে সাদা রুমাল নিয়ে যাবার আহবান জানানো হয়েছে। ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার সাথে সাথে সেই সাদা রুমাল উড়িয়ে সিরি এ কর্তৃপক্ষের মরিনহোকে দেয়া শাস্তির প্রতিবাদ জানানো হবে। এই সাদা রুমাল উড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর প্রচলন অবশ্য খুব পরিচিত স্প্যানিশ ফুটবলে।
এদিকে চতুর্থ রেফারির বিরুদ্ধে মরিনহোর অসদাচরণের অভিযোগে সত্যতা মিলেছে। মরিনহোর সাথে বাজে আচরণের প্রমাণ মেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্তও হতে যাচ্ছেন চতুর্থ রেফারি মার্কো সেররা।