পরীক্ষার আড়ালে সিন্ডিকেট ভাঙার মিশন

জাতীয় দলের অন্দরমহলটা নাকি স্বাস্থ্যকর নয়। ক’দিন আগেই বোর্ড সভাপতির এমন মন্তব্যের পর নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছিল দেশের ক্রিকেটমহল। তবে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর নাকি পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করেছে।

যদিও, এর পাশাপাশি কোচ হয়ে চান্দিকা হাতুরুসিংহের আগমণও বড় একটা ভূমিকা রেখেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাতুরুসিংহে দলের মধ্যকার গ্রুপিং বা সিন্ডিকেটটা ভেঙে দিতে পেরেছেন বেশ সাফল্যের সাথেই। আর তারই প্রমাণ পাওয়া গেছে ওয়ানডে দলে।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তাইজুল ইসলাম। অধিনায়ক তামিম ইকবাল অনেকদিন ধরেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের পক্ষে ঢাল হয়ে ছিলেন। অন্যদিকে, তাঁর পছন্দেই গত ইংল্যান্ড সিরিজে ওয়ানডে দলে জায়গা হয় বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলের। তাইজুল সামর্থ্যের জানান দিলেও, পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্বার্থে তাঁর জায়গায় স্কোয়াডে ফিরেছেন নাসুম আহমেদ।

এখানে আসলে চান্দিকা হাতুুরুসিংহে ও বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন। প্রথমত, যেটা চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে ও সবাই বলছেনও। সেটা হল ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা টিম কম্বিনেশন খুঁজে বের করা।

মাস ছয়েক পর অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। একে তো ওয়ানডেই এখন অবধি বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট। আর এবার বিশ্বকাপটা ভারতে অনুষ্ঠিত হবে বলে, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ দলের সুযোগটা বেশি।

আর দ্বিতীয়ত, যেটা ঠিক চোখে দেখা না গেলেও স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে। হাতুরুসিংহে দলের মধ্যকার সিন্ডিকেটটা ভাঙতে চাচ্ছেন। তামিমের প্রিয়পাত্র তাইজুলের বাদ পড়াটা সেই বার্তাই দেয়। আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ‘বিশ্রাম’-এর আড়ালে স্কোয়াডের বাইরে রাখার অর্থ হল – নামের ভারে জাতীয় দলে টিকে থাকার দিন শেষ।

মাহমুদউল্লাহর জায়গায় নেয়া হয়েছে ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বিকে। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের জায়গায় ইয়াসিরকে পরীক্ষা করতে চায় নির্বাচকরা। সদ্য শেষ হওয়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মাত্র ৭১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দলের বিপদের সময় নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। পাশাপাশি তার স্ট্রাইক রেট ও বাজে ফিল্ডিংও উদ্বেগের বড় কারণ ছিল। ফলে বার্তাটা পরিস্কার, বাদ পড়তে পারেন যে কেউ।

আর এই মুহূর্তে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন আরও দুই সিনিয়র। একজন মুশফিকুর রহিম। আরেকজন স্বয়ং অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আয়ারল্যান্ড সিরিজেও তাঁরা আশাব্যঞ্জক পারফরম্যান্স দেখাতে না পারলে ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে তা বলা মুশকিল!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link