সহস্র প্রতিপক্ষের বিরল কীর্তি

আচ্ছা বলুন তো, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারের বিপক্ষে খেলা খেলোয়াড়টি কে? অদ্ভুত একটা প্রশ্ন। সে কথা মেনে নিতে দ্বিধা নেই। খানিকটা অবাক হওয়ারই কথা। এই প্রশ্নের একটা সহজ উত্তর আছে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পদযাত্রা প্রায় দেড়শো বছর। বিশাল লম্বা একটা সময় পাড়ি দিয়েছে ক্রিকেট। বাংলাদেশও এই ক্রিকেটের দুনিয়াতে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে। প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পদচারণা। লম্বা একটা সময় তো বটেই। কত উত্থান-পতন!

একটা মজার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া যাক। আচ্ছা বলুন তো, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারের বিপক্ষে খেলা খেলোয়াড়টি কে? অদ্ভুত একটা প্রশ্ন। সে কথা মেনে নিতে দ্বিধা নেই। খানিকটা অবাক হওয়ারই কথা। এই প্রশ্নের একটা সহজ উত্তর আছে। সেটা কিংবদন্তি খেলোয়াড় শচীন টেন্ডুলকার।

এর পেছনে অবশ্য যুক্তি সঙ্গত কারণও রয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট ঠিক যতগুলো বছর হয় টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে, তাঁর থেকেও বেশি সময় ধরে শচীন টেন্ডুলকারের বিচরণ ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সেই ১৯৮৯ সালে তিনি তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে, বিশ্ব ক্রিকেটে তাঁর আগমন। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে তিনি খেলে গেছেন ভারতের জার্সি গায়ে।

৬৬৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি এই সময়ে। তিন ফরম্যাটের মধ্যে কেবল টি-টোয়েন্টিতে তাঁর বিচরণ ছিল স্বল্প সময়ের জন্য। যা কিছু কীর্তি তিনি গড়েছেন তাঁর সবটা জায়গা জুড়ে রয়েছে টেস্ট আর ওয়ানডে। এখন অবধি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় তিনি। তবে প্রতিপক্ষ বিচারে তিনি রয়েছে তিন নম্বরে। ৮৪৮ প্রতিপক্ষে ক্রিকেটারের বিপক্ষে খেলেছেন শচীন।

এখন হয়ত খানিকটা স্তম্ভিত হওয়ারই কথা। এত বিপুল পরিমাণ ম্যাচ খেলেও প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারের তালিকায় শচীন রয়েছেন তিন নম্বরে! বিস্ময়ের বিস্তৃত ভূবনে স্বাগতম। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশি খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিম। মুশফিকের ক্যারিয়ারও বেশ লম্বা। ২০০৫ থেকে এখন অবধি তিনি খেলে যাচ্ছেন। প্রায় ১৮ বছর হতে চলেছে তাঁর ক্যারিয়ারের। ৪৩২ ম্যাচ খেলেছেন তিনি সব ফরম্যাট মিলিয়ে। ম্যাচের বিবেচনায় শচীনের থেকে ঢের পিছিয়ে মুশফিক।

তবে তিনি এগিয়ে রয়েছে প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারের মানদণ্ডে। মুশফিক এখন অবধি ৮৮৯ জন ভিন্ন প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারের বিপক্ষে ক্রিকেট ময়দানে নেমেছেন। ব্যাট করেছেন, উইকেটের পেছনে দস্তানা হাতেও দাঁড়িয়েছেন অধিকাংশ সময়ে। আর প্রথম অবস্থানে আছেন তাঁরই দীর্ঘদিনের সতীর্থ। ২০০৩ সাল থেকে একসাথে পথচলা তাদের।

সেই অনূর্ধ্ব-১৫ দল থেকে মুশফিকের সঙ্গী সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর বিচরণ শুরু মুশফিকের আরও বছর তিনেক পরে। তাইতো মুশফিকের থেকে ম্যাচ খেলেছেন কম। ম্যাচ সংখ্যায় পিছিয়ে থাকলেও সাকিব এগিয়ে আছেন প্রতিপক্ষ ক্রিকেটার বিবেচনায়।

৪১১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৯০৫ জন ভিন্ন প্রতিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছেন সাকিব। এই ভিন্ন সব প্রতিপক্ষকে পেছনে ফেলে তিনি রয়েছেন অলরাউন্ডারদের তালিকায় সবার উপরে। অলরাউন্ডার র‍্যাংকিংয়ে রীতিমত একচ্ছত্র আধিপত্য তাঁর। সাকিবের ক্যারিয়ার ঠিক কতটুকু বিস্তৃতি লাভ করবে সেটা হয়ত সময়ই বলে দেবে।

তবে, সাকিব নিশ্চয়ই ৯০৫ সংখ্যাটাকে ১০০০ করতে চাইবেন। হয়ত পারবেন কিংবা না। তবে, একটা ব্যাপার ঠিক যে – শিঘ্রই হয়তো কেউ সাকিবকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...