গজল গেয়ে ব্যাটিং করলেন মিরাজ

বেশ হেলেদুলে হেঁটে আসছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বেশ ফুরফুরে মেজাজ তাঁর। সেটা তার গলা ছেড়ে গজল গাওয়া শুনলেই আন্দাজ করে নেওয়া যায়। রোদের তীব্রতা ছাপিয়ে মিরাজ চনমনে। দূর থেকে হেঁটে এসে পাশের নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করতে থাকা হাসান মাহমুদের সাথে খুনশুটি করে বলেন, ‘সাব্বাস হাসান’। কারণটা স্পষ্ট, হাসানের ব্যাটে-বলে হয়নি।

হাসিখুশি মিরাজ দলের ভেতর একটু বাড়তি ইতিবাচক আবহাওয়ার সৃষ্টি করেন। সেটাই বলে দেওয়াই যায়। এসবকিছু বেশ দারুণ বিষয়। আর এই বিষয়গুলোই মিরাজকে আগামী দিনের নেতৃত্ব দেওয়া যোগ্য দাবিদার হিসেবে গড়ে তোলে।

তবে নেতৃত্ব দিতে চাইলেই তো আর নেতৃত্ব পাওয়া যায় না। প্রথমত একজন ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। সে কাজটা বেশ ভালভাবেই করছেন তিনি। তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে শুধুমাত্র বোলার মিরাজের সার্ভিসটাই পেয়েছে বাংলাদেশ।

তবে যতদিন গিয়েছে ব্যাটার মিরাজের সুফলও ভোগ করেছে টাইগাররা। তাইতো পরিচর্যা প্রয়োজন। মিরাজ নিজে সেটা জানেন বলেই তপ্ত গরমে ক্লান্তি তাকে ছুয়ে যায় না। সিলেট ক্যাম্পের শেষদিনে লম্বা সময় তিনি ব্যাটিং করেছেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সেন্টার পিচে।

এরপর ক্লান্তিহীন এক আয়েশি পদযাত্রা করে ইস্টার্ন গ্যালারি লাগোয়া নেটে এসেছেন আবারও ব্যাটিং অনুশীলন করতে। সেন্টার পিচে নেট বোলারদের বিপক্ষে ব্যাট করেছেন। এরপর সাইড নেটে এসে, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন নিজেকে। কল্পনায় ভেবে নিয়েছেন ম্যাচের ৩৫ তম ওভারে খেলতে নেমেছেন তিনি। তেমনটাই জানিয়ে দেন ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডরমটকে।

ফিল্ডিং সেটআপ বুঝিয়ে দিলেন ম্যাকডরমট। আবারও শুরু মিরাজের টানা ব্যাটিং। সাইড নেটেও বেশকিছু সময় পার করেছেন তিনি। থ্রোয়ারদের সাথে ম্যাকডরমটও বল ছুড়েছেন মিরাজকে। মিরাজ দেখেশুনে ইনিংসের হাল ধরবার মত করে ব্যাটিং করেছেন।

এই ক্যাম্পের মূল ভাবনাই ছিল ভিন্ন সব পরিস্থিতির সাথে খেলোয়াড়দের মানিয়ে নেওয়া। সেভাবেই কাজ করেছেন মিরাজও। ম্যাচের ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতে স্থির করেছেন নিজের মস্তিষ্ক। পরিস্থিতির চাহিদা বুঝে ব্যাট চালিয়ে কিংবা একটু রয়েসয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন মিরাজ।

ক্যাম্পের একেবারে শেষের দিকে মিরাজ ফিরে গেছেন আবারও সেন্টার উইকেটে। তিনি এবার খানিকটা পাওয়ার হিটিং অনুশীলন করলেন। থ্রোয়ারের ছোড়া বলগুলো সজোরে ব্যাট চালিয়ে সীমানা ছাড়া করবার অনুশীলন করেন মিরাজ। তৃতীয় দিনের প্রায় পুরোটা সময়জুড়ে মিরাজ নিজের ব্যাটিংয়ের খুটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছেন।

পুরো অনুশীলনের চিত্রনাট্য পর্যালোচনা করলে একটা জিনিস বেশ স্পষ্ট। মিরাজের উপর দলের অগাধ আস্থা। মিরাজের উপর ভীষণ দায়িত্ব। বল হাতে ভাল করবার একটা প্রত্যাশা মিরাজের কাছে সবাই করে। এবার যেন টিম ম্যানেজমেন্ট মিরাজের উপর ছেড়ে দিতে চাইছে দলের ব্যাটিং দূর্গ হাল ধরবার দায়িত্ব। শেষ অবধি মিরাজ প্রত্যাশার সবটুকু পূরণ করতে পারেন কি-না, সেটা সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link