কেকেআর, নট ডান ইয়েট!

প্রায় একপেশে হয়ে ওঠা এক ম্যাচে হঠাতই রঙ বদল। আর তাতেই আবারো শেষ বলের রোমাঞ্চে গড়িয়েছে কলকাতা-হায়দ্রাবাদ ম্যাচটি। শেষ ৪ ওভারে ৩৪ রানের লক্ষ্যে হায়দ্রাবাদের জন্য আপাতদৃষ্টিতে ম্যাচটা সহজই ছিল। কিন্তু তীরে এসে তরী ডুবিয়েছে হায়দ্রাবাদের ব্যাটাররা। শেষদিকে কলকাতার বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং শেষ পর্যন্ত তাদের কপালে পরাজয় জুটেছে ৫ রানে।

অবশ্য ম্যাচের শুরুর গল্পটা লিখেছিল হায়দ্রাবাদের বোলারই। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে এ দিন শুরুতেই হায়দ্রাবাদের বোলারদের বোলিং তোপের মুখে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

আগের ম্যাচে ৮১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা রহমানুল্লাহ গুরুবাজ এ দিন ফিরে যান শূন্য রানে। ইনজুরি থেকে ফিরে এসে জেসন রয়ও নিজের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হন। ১৯ বলে ২০ রান করে ফিরে যান এ ব্যাটার।

তার আগে ভেঙ্কটেশ আইয়ারও এ দিন টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন। মাত্র ৭ রানেই ফিরে যান এ বাঁহাতি ব্যাটার। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানো কলকাতাকে এরপর টেনে তুলেন অধিনায়ক নিতিশ রানা আর রিঙ্কু সিং। এ দুই ব্যাটারের ৬১ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে কেকেআর।

তবে দুই ব্যাটারই ব্যক্তিগত ফিফটির পথে হেটেও মাঠ ছেড়ে ফিফটি না পূরণের আক্ষেপে। নিতিশ রানা ৩ চার আর ৩ ছক্কায় খেলেন ৩১ বলে ৪২ রানের ইনিংস। আর রিঙ্কু সিং করেন ৪৬ রান। তবে এ দুই ব্যাটারের কেউ-ই ফিফটি পূরণ করতে না পারলেও শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পেয়ে যায় কলকাতা।

রিঙ্কু, নিতিশের পর ১৫ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলেন আন্দ্রে রাসেল। আর এতেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৯১ রানের সংগ্রহ পায় কলকাতা নাইট রাইডার্স।

১৭২ রানের লক্ষ্যে গতি ঠিক রেখে ব্যাটিং করতে শুরু করে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। তবে একদিক দিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় কিছুটা বিপত্তিতে পড়ে হায়দ্রাবাদ। ৫৩ রানের মাঝেই তাঁরা হারিয়ে ফেলে ৩ টপ অর্ডার ব্যাটারের উইকেট।

অবশ্য মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ১১ বলে ১৮, রাহুল ত্রিপাঠির ৯ বলে ২০— এমন ছোট দুটি ইনিংসই হায়দ্রাবাদকে ম্যাচে এগিয়ে দিয়েছিল। এর সঙ্গে হেনরিখ ক্লাসেনের ২০ বলে ৩৬ রানের ইনিংসে এক প্রকার ম্যাচ থেকে ছিটকেই যায় কলকাতা নাইট রাইডার্স।

তবে হায়দ্রাবাদের হয়ে এ দিন কোনো ব্যাটারদের ইনিংস বড় করতে না পারার ব্যর্থতায় পরে কাল হয়ে দাঁড়ায়। হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক মন্থর গতিতে লক্ষ্যের পথেই ছুটেছিলেন। তবে তিনিও ৪০ বলে ব্যক্তিগত ৪১ রানে ধরা দিলে ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে আসে কলকাতা। শেষ দুই ওভারে ২১ রানের সমীকরণের সামনে দাঁড়ায় হায়দ্রাবাদ। আর এর পরেই জমে ওঠে ম্যাচ।

শেষ ওভারে সেই রোমাঞ্চ আরো বাড়িয়ে দেয়, যখন জয়ের জন্য হায়দ্রাবাদের প্রয়োজন ছিল ৯ রান। কিন্তু দিনটা যেন ছিল কেকেআরেরই। বরুণ চক্রবর্তীর সে ওভারে মাত্র ৩ রান নিতে সক্ষম হয় হায়দ্রাবাদ। ফলত, টানটান উত্তেজনার এ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৫ রানের জয় তুলে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স।

দুর্দান্ত এ জয়ে শেষ চারে খেলার আশা এখনো জিইয়ে রাখলো কেকেআর। অপর দিকে আর ৯ ম্যাচের ৬ টিতেই হেরে পয়েন্ট টেবিলের ৯ নম্বরে থাকতে হচ্ছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link