২০২৪ থেকে ২০২৭ সময়কালে রাজস্ব-বন্টনের জন্য নতুন কাঠামো প্রস্তাব করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, আইসিসির বাৎসরিক আয়ের ৩৮.৫ শতাংশই নেবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সে হিসেবে ২৩ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার আয় করবে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট (বিসিসিআই)। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২৪৯২ কোটি টাকা!
আইসিসি’র এ রাজস্ব বন্টনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পাবে ৪.৪৬ শতাংশ। অর্থের অঙ্কে যা প্রায় ২ কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার আর বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৯০ কোটি টাকা।
বিসিসিআইয়ের পর সর্বোচ্চ আয় করবে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। আইসিসির বার্ষিক আয়ের ৬.৮৯ শতাংশ অর্থাৎ ৪ কোটি ১৩ লাখ মার্কিন ডলার পাবে তাঁরা।
আর ইংল্যান্ডের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) আয় করবে আইসিসির মোট আয়ের ৬.২৫ শতাংশ। সে হিসেবে অর্থের অঙ্কে অস্ট্রেলিয়ার আয় হবে ৩ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের আশেপাশে।
ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া পর ৫.৭৫ শতাংশ আয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। অর্থের অঙ্কে তাঁরা পেতে যাচ্ছে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড প্রায় ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার আর শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড আয় করবে ২ কোটি ৭১ লাখ।
অর্থপ্রাপ্তির দিক দিয়ে আটে থাকা বাংলাদেশের চেয়েও পিছনে থাকছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাঁরা পাবে মোট আয়ের ৪.৩৭ শতাংশ। অর্থের অঙ্কে যা প্রায় ২ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেও আফগানিস্তানের চেয়ে বেশি অর্থ পাবে আয়াল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তাঁরা পাবে ১ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা মোট আয়ের ৩.০১ শতাংশ।
আর পূর্ণ সদস্যদের সবচেয়ে কম ২.৮০ শতাংশ আয় করবে আফগানিস্তান। তাদের আয় হবে প্রায় ১ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার ডলার। পূর্ণ সদস্যদের মধ্যে থাকা আরেকটি দল জিম্বাবুয়ে আয় করবে প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
মূলত, আইসিসি’র এই ৬০ কোটি ডলারের ৮৮.৮১ শতাংশই বরাদ্দ থাকছে টেস্ট প্লেয়িং দল গুলোর জন্য। আর বাকি ১১.১৯ শতাংশ অর্থ পাবে সহযোগী দেশগুলো। অঙ্কের অর্থে যা প্রায় ৬ কোটি ৭১ লাখ ৬০ হাজারের কাছাকাছি।
আইসিসি’র এ রাজস্ব বন্টন মূলত ৪ টি মানদণ্ডে নির্ধারিত হয়েছে। সেগুলো হল- সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট ইতিহাস, আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোতে ছেলে ও মেয়েদের আসরে গত ১৬ বছরের পারফরম্যান্স, আইসিসির বাণিজ্যিক আয়ে অবদান এবং আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে নির্ধারিত অর্থ, যেটি সব দেশের জন্যই একই অর্থ বরাদ্দ থাকে।
প্রসঙ্গত, আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোতে পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে মূলত মানদণ্ড ধরা হয়েছে নকআউট পর্বের পারফরম্যান্সকে। সেখানে সবার ওপরে অস্ট্রেলিয়া (২১.৯ শতাংশ)।
আর তাদের পরে আছে ইংল্যান্ড (১৮.৫ শতাংশ) ও ভারত (১৭.৪ শতাংশ)। বাণিজ্যিক আয়ের দিক দিয়ে অবদান বেশি আবার ভারতের। আইসিসি’র বাণিজ্যিক আয়ের ৮৫.৩ শতাংশই আসে বিসিসিআই থেকে।
অবশ্য আইসিসি’র রাজস্ব বন্টনের ক্ষেত্রে এখনই এ অঙ্কগুলো চূড়ান্ত নয়। প্রস্তাবিত এই কাঠামো নিয়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মতামত জানানোর কথা সদস্য দেশগুলোর। এরপর ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিটি তা পাঠাবে আইসিসি বোর্ডের অনুমোদনের জন্য।
সবকিছু মিলিয়ে এখনো লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে এ রাজস্ব-বন্টন। তাছাড়া জানা গেছে, এই কাঠামো নিয়ে নাকি আপত্তি রয়েছে অনেক সদস্য দেশের। তাই, আগামী ৪ বছরের জন্য আইসিসি’র প্রস্তাবিত এ কাঠামোর রদবদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।