তারপরও কি বিশ্বকাপে থাকবেন রিয়াদ?

এ বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকেই ওয়ানডে দলে ব্রাত্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন বছর দুয়েক হতে চললো, টি-টোয়েন্টি দলেও আর বিবেচনা করা হচ্ছে না প্রায় এক বছর; মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তাই ফুলস্টপ পড়ে গেছে বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে।

তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট বাস্তবতায় শেষ বলে কিছু নেই। গত দুই সিরিজে দলে বিবেচিত না হওয়া রিয়াদ যে ভালোভাবেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় আছেন তা স্পষ্ট করেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

তবে রিয়াদের বিষয়টি হঠাৎই আবারো আলোচনায় আসার কারণটা ভিন্ন। সামনের মাসের আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি ক্যাম্প। তিন ফরম্যাটে বিবেচনা থাকা সকল ক্রিকেটারকেই ডাকা হয়েছে এই ক্যাম্পে।

সেখানে ২৬ ক্রিকেটার ডাক পেলেও ছিলেন না রিয়াদ। জানা গেছে, পবিত্র হজ পালনের জন্য আগামী ২২ জুন থেকে পাঁচ জুলাই পর্যন্ত ছুটি নিয়েছেন রিয়াদ।

১৪ জুন একমাত্র টেস্টের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে আগামী ৫ জুলাই। তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে রিয়াদকে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। তাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিশ্বকাপ স্বপ্নটা আরো ফিকে হয়ে গেল।

বিশ্বকাপের আগে টিম ম্যানেজমেন্টের কাউকে বাজিয়ে দেখার জন্য সর্বশেষ সিরিজ হয়তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটাই। কারণ এর পরপরই আছে এশিয়া কাপ। টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে যে এশিয়া কাপের স্কোয়াডই হবে বিশ্বকাপের স্কোয়াড।

এদিকে যে পজিশনের জন্য রিয়াদ আবারো বিশ্বকাপ স্কোয়াডের আলোচনায় এসছিলেন তা হলো সাত নম্বর পজিশন। এই পজিশনটাও রিয়াদের জন্য নতুন।

এর আগে দীর্ঘদিন বাংলাদেশের হয়ে ছয় নম্বরে খেলেছেন তিনি। তবে ইংল্যান্ড সিরিজের পরই কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে ছয় নম্বরের পরিকল্পনা সাজান নতুন করে। সেই পজিশনে খেলান মুশফিকুর রহিমকে।

নতুন দায়িত্বে দারুণ সফল মুশফিকও। দলের চাহিদা মেটানোর জন্য যেরকম ব্যাটিংটা করা দরকার ঠিক সেই ব্যাটিংটাই যেন করছেন মুশফিক। এক সিরিজ আগেই ছয় নম্বরে নেমে ওয়ানডেতে দেশের ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরিও করে ফেলেছেন। তাই বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় ছয় নম্বরে মুশফিকই থাকছেন তা নিশ্চিত।

সাত নম্বরের জন্য কাকে নেয়া হবে তা এখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। এই পজিশনের জন্য বিবেচনায় আছেন রিয়াদ ছাড়াও আরো তিন ক্রিকেটার।

মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ও ইয়াসির আলী রাব্বিদেরও ভালোভাবেই বিবেচনা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজেই হয়তো ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনার কিছুটা আঁচ পাওয়া যাবে যে এই পজিশনে বিশ্বকাপে কে খেলবেন।

এদিকে জানা গেছে, কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে সরাসরি কথা বলেছেন রিয়াদের সাথে। জানতে চেয়েছেন তাঁর পরিকল্পনা। সেখানে রিয়াদ জানিয়েছেন বিশ্বকাপ অবদি খেলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। আফগানিস্তান সিরিজে বিবেচিত না হলে তাই রিয়াদের জন্য বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ঢোকাটা কঠিনই হয়ে যাবে।

যদিও বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, আফগানিস্তান সিরিজে রিয়াদের না থাকাটা তাঁর বিশ্বকাপ স্কোয়াডে বিবেচিত হবার পথে বাঁধা হবে না। জালাল ইউনুস বলেন, ‘হজ পবিত্র জিনিস, আমাদের উচিত তাকে সাপোর্ট করা। এটা রিয়াদের বিশ্বকাপ সিলেকশনের ক্ষেত্রে কোনো বাঁধা হবে না।’

এর অর্থ হল, এখনও বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় ঠিকই আছেন রিয়াদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link