এশিয়া কাপ নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছেই। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলের এশিয়া কাপে রাজি নয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ভারত চায় এশিয়া কাপ হোক নিরপেক্ষে কোনো ভেন্যুতে, হাইব্রিড মডেলের মতো ভিন্ন দুটি দেশে নয়।
বিসিসিআই-এর এমন ভাবনায় এবার এশিয়া কাপের আয়োজক দেশের মর্যাদাও হারাতে পারে পাকিস্তান। গুঞ্জন উঠেছে, এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি) নাকি আসন্ন এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
আর তাতে শ্রীলঙ্কা পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে ভারতসহ, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান বোর্ডের। এ নিয়ে লঙ্কান বোর্ডের এক অফিশিয়াল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘জরুরি নোটিশের ভিত্তিতে এশিয়া কাপ আয়োজনের একটা গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। এখন শুধু অপেক্ষা এসিসি’র চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের।’
আইপিএল ফাইনালের জন্য গত রবিবার আহমেদাবাদে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিসিসিআই। আর সেখানেই অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেন বিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জয় শাহ্। যিনি আবার এসিসির সভাপতি হিসেবেও রয়েছেন।
তো সেই আলোচনায়, জয় শাহ হাইব্রিড মডেল নিয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেন। আর সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট আয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে এসিসি’র নির্বাহী বোর্ডের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের পর তা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আগেই জানিয়েছিল, পাকিস্তানে গিয়ে তাদের খেলতে কোনো আপত্তি নেই। তবে হাইব্রিড মডেলের ব্যাপারে ভারতের সাথেই সুর মিলিয়েছে এ তিন দেশের বোর্ড। তাই পাকিস্তানে এশিয়া কাপ আয়োজনের ক্ষেত্রে আবার নতুন করে অচলাবস্থা শুরু হচ্ছে।
যদিও তাঁরা আগেই জানিয়েছিল যে, পাকিস্তানে এশিয়া কাপ না হলে পাকিস্তান নিরপেক্ষ ভেন্যুতে এশিয়া কাপ বয়কট করবে। এমনকি পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি এসিসি থেকেও সরে আসার হুমকি দিয়েছিলেন।
তবে, সে সব হুমকিতে অবশ্য ফলপ্রসূ কিছু আসেনি। উল্টো পাকিস্তান নিজেদের মাটিতে এশিয়া কাপের কয়েকটা ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে কিনা, সেটাই এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কারণ এখন পর্যন্ত এবারের এশিয়া কাপে অংশ্রহণকারী ৬ দেশের মধ্যে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান- এই তিন দেশই ভারতের পক্ষে মত দিয়েছে। এ ছাড়া আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড ও অ্যাসোসিয়েশন অব নেপাল ক্রিকেটও জয় শাহ্র আয়োজিত আলোচনা সভায় নিরপেক্ষ ভেন্যুতে এশিয়া কাপ আয়োজনের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে।
এশিয়া কাপের ভাগ্য এখন যেভাবে ঝুলছে, তাতে এখন পাকিস্তান বাদে শ্রীলঙ্কার মাটিতেই এশিয়া কাপ হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো। বিসিসিআই-এর এক সদস্য তো অনানুষ্ঠানিক সেই আলোচনায় বলেই বসেন, ‘হয় কলম্বো নয়তো কোথাও নয়।’ শুধু এসিসি নয়, আইসিসিতেও বেশ দাপট বিসিসিআইয়ের।
তাই বিসিসিআইয়ের আপত্তিতে যে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ হবে না, তা এক প্রকার নিশ্চিতই। সে হিসেবে এই মহূর্তে শ্রীলঙ্কাতেই এশিয়া কাপ আয়োজনের সম্ভাবনা বেশি। যদিও এখনো কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়। অচিরেই এ ব্যাপারে এসিসির নির্বাহী বোর্ড সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
এ দিকে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আইসিসির চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিওফ অ্যালারডাইস পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন। মূলত এই সফরে ২০২৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভারতে যাওয়া, না যাওয়া নিয়ে আলোচনা হবে। এর পাশাপাশি আইসিসি থেকে প্রাপ্য আয়ের ভাগ নিয়ে কথা বলবে পিসিবি।