সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি মর্তুজা কিংবা মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ – বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুপারস্টারের অভাব নেই; একা ম্যাচ জেতানোর নজিরও আছে এই তারকাদের। তবে বাংলাদেশের প্রথম সুপারস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল; অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলকে প্রায় একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
ক্যালেন্ডার বদলে গিয়েছে অনেকবার, বদলেছে আশরাফুলের গল্পও। অনেক আগেই জাতীয় দলে ব্রাত্য হয়ে পড়া আশরাফুল সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটেও অনিয়মিত হয়ে পড়ছেন। তবে একেবারে বাইশ গজের বাইরে চলে যাননি তিনি; খেলছেন যুক্তরাজ্যের লিগে।
থর্নবেরি ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে নিজের জন্মদিনে খেলতে নেমেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। যুক্তরাজ্যের গ্রীষ্ম মৌসুমে এবারই প্রথম খেলতে নেমেছিল ঘরোয়া ক্লাবগুলো। আর থর্নবেরি ক্লাবের হয়ে খেলতে নেমেছিল এক ঝাঁক বিখ্যাত খেলোয়াড়। ম্যাচটাও শেষপর্যন্ত জিতে নিয়েছে দলটি।
বাংলাদেশের মোহাম্মদ আশরাফুলের পাশাপাশি ইংল্যান্ডের ক্রিস স্কোফিল্ড, পাকিস্তানের সাকলাইন মুস্তাক, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কির্ক এডওয়ার্ডসরা। এদিন শুধু খেলাই নয়, ছোটখাটো অনুষ্ঠানও হয়েছে। সবার কাছ থেকে শুভেচ্ছা পেয়েছেন বার্থডে বয় আশরাফুল।
এদিন ল্যাশিং ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল আশরাফুলের দল থর্নবেরি। শুরুতে ব্যাট করতে নামা ল্যাশিং থামে ১৭৫ রানে; ১৭৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামে থর্নবেরি। শেষপর্যন্ত ৪ উইকেট হারিয়ে সেই লক্ষ্য টপকে যায় তাঁরা।
থর্নবেরি ক্রিকেট ক্লাব মূলত ইংল্যান্ডের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত। স্থানীয় মানুষদের বিনোদনের জন্য কয়েকজন উৎসাহী মানুষ এটি পরিচালনা করে যাচ্ছেন। বিশ্ববিখ্যাত তারকা এবং বাংলাদেশের সাবেক কোচ গর্ডন গ্রিনিজ বর্তমানে এটির শুভেচ্ছাদূত হিসেবে নিয়োজিত।
ক্লাবটির নিজস্ব মাঠ, কোচ রয়েছে। বয়স, লিঙ্গ বা সামর্থ্য নির্বিশেষে সদস্যদের পারফর্মেন্সের উন্নতি করতে কোচরা সারা বছরই কাজ করতে থাকে। এছাড়া গ্রীষ্মের সময় বিভিন্ন দলের বিপক্ষে সদস্যদের নিয়মিত ম্যাচ খেলার সুযোগ প্রদান করে থর্নবেরি ক্লাব।
মাঠের বাইরেও বেশ সক্রিয় তারা। স্থানীয়দের মাঝে বৈচিত্র্যময় সামাজিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে ক্লাব কতৃপক্ষ। যা প্রায় প্রত্যেকের বিনোদন চাহিদা পূরণ করে। এছাড়া এখানে বার এবং ক্যাফে রয়েছে যা সারা বছর খোলা থাকে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটা আক্ষেপ হয়েই আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতানো এই তারকা একটা সময় হয়ে উঠেছিলেন লাল-সবুজের আশার ফুল। তবে ফিক্সিং কান্ডে জড়িয়ে নষ্ট করেছেন দারুণ এক ক্যারিয়ার, সেই সাথে ক্ষতিটা হয়েছে জাতীয় দলেরও।
ক্রিকেট খেলাটা আর মোহাম্মদ আশরাফুলের কাছে পেশা হওয়ার কথা নয়; খুব শীঘ্রই হয়তো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে অবসর নিবেন তিনি। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর থেকে আসলে বলার মত তেমন কিছু করতে পারেননি একসময়ের পোস্টার বয়। পারফরম্যান্স দিয়ে পুরনো আশরাফুলের স্মৃতি খুব একটা ফিরিয়ে আনতে পারেননি তিনি।
তবে ব্যাট বলের খেলাটা তাঁর কাছে নিশ্চয়ই নেশার মত; তাই তো দেশ-বিদেশে ঘুরে ঘুরে খেলছেন; পুরনো বন্ধুদের সাথে যেমন দেখা হচ্ছে তেমন পাচ্ছেন নতুন অভিজ্ঞতার স্বাদ।