মাদ্রিদে তখন তারারা মেলা। ক্রিশ্চিয়ানো ও করিম বেনজেমা ছিলেন আগেই। ঠিক তখনই যোগ হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। গোড়াপত্তন হল ‘বিবিসি’ – রিয়ালের স্মরণকালের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ।
তবে, সেই সবই এখন অতীত। রোনালদো আর বেনজেমা চলে গেছেন সৌদি আরবে। বেল তো বুটজোড়াই তুলে রেখেছেন। তবে, বেল আজও প্রাসঙ্গিক।
রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই তারকা জানিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আর বেনজেমার কারণেই তিনি লস ব্লাঙ্কোসে যোগ দিয়েছিলেন। দ্য টাইমস ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্মৃতিচারণা করেছেন নেই যুগলবন্দীর।
মাদ্রিদ ক্যারিয়ারে কখনই কারো সাথে কোন ধরনের বিরোধ হয়নি বলেও স্বীকার করেছেন বেল। রোনালদো-বেল জুটি মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চারটি শিরোপা জয় করেছেন।
এর মাধ্যমে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরে মাদ্রিদ নিজেদের আলাদা একটি জায়গা করে নিয়েছিল। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বেল জানিয়েছেন ম্যাচ শেষে রোনালদের আশেপাশে থাকাটা কঠিন হয়ে যেত।
বিশেষ করে সেই ম্যাচটিতে যদি তিনি গোল করতে না পারতেন তবে দল জিতলেও মেজাজ ঠিক রাখতে পারতেন না রোনালদো। এই ওয়েলসম্যান অবশ্য রোনালদোর সাথে কোন ধরনের বিরোধের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন।
বর্তমানে সব ধরনের ফুটবল থেকে বেল অবসর নিলেও রোনালদো সৌদি পেশাদার লিগে আল নাসেরতে খেলছেন। দ্য টাইমসে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বেল বিস্তারিত স্মরণ করেন রিয়াল মাদ্রিদের সেই সময়টা।
তিনি বলেন, ‘রোনালদো কিংবা রিয়াল মাদ্রিদে অন্য কারো সাথে একদিনের জন্যও আমার কোন সমস্যা হয়নি। আমার মনে হয়না কোন বিষয় নিয়ে কারো সাথে কখনো দ্বিমত করেছি। এমনকি দলের কঠিন সময়েও ড্রেসিং রুমে আমরা ভাল সময় কাটিয়েছি। মাঠে কিছুটা কঠিন সময় বাদে মাদ্রিদে বাকিটা সময় আমি দারুণ উপভোগ করেছি। আমার কোন ধরনের অনুশোচনা নেই। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি।’
রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মোট পাঁচ মৌসুমের জন্য এই ভয়ঙ্কর ত্রয়ীকে দেখতে পেরেছে। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের ইতিহাসে এটি অন্যতম স্মরণীয় সময় ছিল।
যেখানে তারা চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ, তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ, একটি সুপারকোপা ডি এস্পানা, একটি কোপা দেল রে এবং একটি লা লিগাসহ মোট ১৩টি ট্রফি জিতেছে।
বেল আরো বলেন, ‘মাদ্রিদে যোগ দেবার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল ক্রিশ্চিয়ানো ও বেনজেমা। তাদের পাশাপাশি লুকা মড্রিচ, জাবি আলোনসো ও পরবর্তীতে টনি ক্রুসদের মত খেলোয়াড়দের সাথে একই ক্লাবে খেলা ছিল সৌভাগ্যের। আমি কখনই গ্যালাকটিকো হতে চাইনি, শুধুমাত্র খেলতে চেয়েছি এবং পরে অন্ধকারে হারিয়ে যেতে চেয়েছি।’
৩৩ বছর বয়সী বেল ফুটবল ছেড়ে তার সারাজীবনের ভালবাসা গলফ খেলার প্রতি মনোযোগী হয়েছেন। সম্প্রতি বিএমডব্লিউ পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপ সেলেব্রিটি প্রো-অ্যাম লাইন-আপে খেলেছেন বেল। পেশাদার গলফার হিসেবে আত্মপ্রকাশে এটা প্রথম ধাপ ছিল। যদিও, তারপরও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন সেই বিবিসির জন্যই।
সব মিলিয়ে এই ত্রয়ী ২৯৩ ম্যাচে ২০১টি ম্যাচ জিতেছিল – জয়ের হার ৭১.৭ শতাংশ। এছাড়া দলের ৭৮৪টি গোলের মধ্যে ৪৪২টি তারা করেছিল। তিনজনই ১৩টি শিরোপা মিশনে গোল করে অবদান রেখেছিলেন ৷ এবং তাদের সর্বমোট ১৭১টি অ্যাসিস্ট রয়েছে। ২০১৮ সালে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পর বিবিসির পতন ঘটে।