বাতাসে ভাসছে গুঞ্জন আর গুজব, নানামুখী কথাবার্তায় ভারী হয়ে উঠেছিল পরিবেশ – গত কয়েকদিন থেকে এমনই বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গন। কি হবে বাংলাদেশ দলের, কেমন কাটবে আগামী কয়েক মাস সেসব নিয়ে চলছিল হিসেব নিকেশ। আর সবকিছুর কেন্দ্রে ছিলেন তামিম ইকবাল।
অবশেষে সব জল্পনা কল্পনার সমাপ্তি ঘটেছে, নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় আলোচনা সভা শেষে তামিম ইকবাল জানিয়ে দিয়েছেন আজ থেকে তিনি ‘সাবেক’ অধিনায়ক, ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সেই সাথে নিশ্চিত করেছেন এশিয়া কাপে খেলা হবে না তাঁর।
পিঠের ইনজুরির কারণে তামিম ইকবালকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল ধোঁয়াশা; ফিট হয়ে দলের সাথে যুক্ত হতে পারবেন কি না কিংবা অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাবেন কি না সেটা নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল। তাই তো লন্ডনে চিকিৎসা শেষ করে দেশে ফিরতেই বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বসেছেন এই ওপেনার, আর এরপর সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দিলেন নিজের সিদ্ধান্ত।
দলীয় স্বার্থের কথা ভেবেই অধিনায়ক পদ ছাড়লেন তামিম ইকবাল। একই সাথে পুরোপুরি ফিট না থাকায় অংশ নেবেন না এশিয়া কাপে। তবে সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি; বিশ্বকাপও খেলতে চান। অবশ্য পুরোপুরি ফিট হয়ে ওঠাই তামিমের প্রথম লক্ষ্য। তামিম বরাবরই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেন, এবারও এর ব্যতিক্রম হল না।
তাই তো নতুন অধিনায়ক নির্বাচন করতে হবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। ধারণা করা যাচ্ছে, আগামী চার পাঁচদিনের মধ্যেই জানা যাবে কে হবেন টাইগারদের কাণ্ডারি। সম্ভাব্য নামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন সাকিব আল হাসান, তবে তিনি কেবল এশিয়া কাপের নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী নন তেমন। দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্ব পেলে হয়তো নেতৃত্বের প্রস্তাব বিবেচনা করবেন তিনি।
সাকিব রাজি না হলে লিটন দাসই টস করতে নামবেন আসন্ন এশিয়া কাপে। তামিমের অনুপস্থিতিতে ভারত, আফগানিস্তানের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করেছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। যদিও বড় মঞ্চে এখনো ক্যাপ্টেন্সি করা হয়নি তাঁর, এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে দেখা যায় না তাঁকে।
আবার নতুন একজন ওপেনারও প্রয়োজন হবে তামিম ইকবালের শূণ্যতা পূরণের জন্য। এশিয়া কাপের দলে তাই জায়গা পেতে পারেন আরেক তামিম। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী তানজিদ হাসান তামিমকে নেয়া হতে পারে দলে, এছাড়া নাইম শেখ, সৌম্য সরকারও পেতে পারেন এশিয়া কাপে টাইগারদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ।
আপাতত দুই সপ্তাহের বিশ্রামে থাকবেন তামিম ইকবাল। এরপর ব্যাটিং শুরু করবেন নেটে, যদিও পুরোপুরি অনুশীলন শুরু করতে পারবেন চলতি মাসের শেষভাগে।
কিউইদের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে ফিরে আসতে চান তামিম ইকবাল। সেই লক্ষ্যে নিজেকে তৈরি করবেন তিনি; অবসর, অধিনায়কত্বের বিতর্ক ছাপিয়ে স্মরণীয় প্রত্যাবর্তনই করতে চাইবেন ড্যাশিং ওপেনার।