সাত নম্বর পজিশনের জন্য লড়াইটা এখন নেমে এসেছে দু’জনের মধ্যে। সেই দু’জন হলেন সৌম্য সরকার ও শেখ মেহেদী হাসান। তবে, এখানে পরস্পর বিরোধী অবস্থানে আছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরসিংহে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক প্যানেলের পছন্দ শেখ মেহেদী হাসান। ইমার্জিং এশিয়া কাপে বোলিং, ব্যাটিং দুটোই ভালো করেছেন তিনি। যদিও প্রধান কোচ চান্দিকার পছন্দ সৌম্য সরকারকে। ইমার্জিং এশিয়া কাপে খুব একটা খারাপ খেলেননি তিনি।
যদিও, সৌম্যর ইমপ্যাক্ট ছিল কম। তবে, বেশি ভালো ছিল মেহেদীর পারফরম্যান্স। ব্যাটিং-বোলিং কিংবা ফিল্ডিং – তিন বিভাগেই দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। পরিস্থিতি বুঝে ভয়ডরহীন ব্যাটিং করেছেন।
অন্যদিকে, সৌম্য রান পেলেও রান তোলার ধরণটা ছিল দৃষ্টিকটু। তিনি নিজের স্বর্ণালী সময়কে হারিয়ে খুঁজছেন ইদানিং। ঘরোয়া ক্রিকেটেও রানে নেই। বাদ পড়েছিলেন মোহামেডান দলের একাদশ থেকেও।
তবে, বরাবরই হাতুরুসিংহের প্রিয়পাত্র তিনি। তাই তো, যার এখন জাতীয় দলের ধারের কাছেও থাকার কথা নয়, সেই সৌম্য সরকার আছেন বিশ্বকাপের আলোচনায়।
২০১৫ সালে খুব সামান্য অভিজ্ঞতা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে যান সৌম্য। আলোচিত হন। এরপর থেকে থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ফরম্যাটের বিশ্বকাপেই সৌম্যকে বাদ দেয়নি বাংলাদেশ।
অথচ, কেবল ২০১৫-১৬ মৌসুম ছাড়া বাকি সময় তিনি ছিলেন চরম অধারাবাহিক। এবারও হয়তো অফ ফর্মে থাকা সত্ত্বেও অন্তত স্ট্যান্ড বাই হিসেবে হলেও ভারতের বিমান ধরবেন এই ব্যাটার।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১২ ম্যাচ খেলে ১১ ইনিংসে সৌম্য করেন ২৯৩ রান। ২৬.৬৩ গড়ে তোলা এই রানে ছিল একটা সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পেতে এই রানটা আসলে কোনোভাবে যথেষ্ট না।
ইমার্জিং এশিয়া কাপ দিয়েও তাঁর পায়ের নিচের মাটি শক্ত হয়নি। তার ওপর বিগত বছর গুলোতে আন্তর্জাতিক রেকর্ডও কোনো আশার কথা শোনাতে পারে না। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে কোনো ফরম্যাটেই ঠিকঠাক জ্বলে উঠতে পারেননি। বারবার সুযোগ পেয়েছেন।
সেই সুযোগ তিনি হেলায় হারিয়েছেন, নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছেন কমই। আর বিশ্বকাপের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময়ও খুব বেশি হাতে নেই। এই অবস্থায় হাতুরুসিংহের চাপে পড়ে কি ঝুঁকি নিবেন নির্বাচকরা?
এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের জন্য ২০-২২ জনের একটা পুল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সৌম্য এবং মেহেদী – দুজনেরই থাকার কথা। তবে, তাঁদের মধ্যে শেষ হাসি হাসবে কে – সেটা সময়ই বলে দেবে।