দুই ওভারে লাগবে ১০ রান। হাতে আছে চারটা উইকেট। জিততে হলে এতটাই সহজ ছিল মালয়েশিয়ার লক্ষ্য। ১৯ তম ওভারে পাঁচ রান উঠে। শেষ ওভারে লাগবে মোটে পাঁচ রান।
স্ট্রাইকে তখন হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলা ভিরানদীপ সিং। ম্যাচ তখন বাংলাদেশ দলের নাগালের প্রায় বাইরে। বোলিংয়ে তখন আফিফ হোসেন ধ্রুব। প্রথম তিনটা বল ডট। চাপে মালয়েশিয়া। চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট ভিরানদীপ সিং।
শেষ দুই বলে আর পাঁচ রান করার চাপ নিতে পারেনি মালয়েশিয়া দল। বাংলাদেশ দল জিতেছে মাত্র দুই রানে। ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের চূড়ান্ত লজ্জা একদম শরীর ঘেষে চলে গেছে। ঠিক তেমনি, মালয়েশিয়ার জাহাজ একদম তীরে চলে গেলেও ছুঁতে পারল না নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা সাফল্য।
এশিয়ান গেমসের বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে মোটেও দুর্বল বলার সুযোগ নেই। একাদশে থাকা সাতজন ক্রিকেটার খেলেছেন আন্তর্জাতিক ময়দানে। এর মধ্যে আবার আছেন আফিফ হোসেন ধ্রুবর মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও। সেই আফিফ হোসেনই শেষ অবধি বাঁচালেন বাংলাদেশ দলকে।
ব্যাটিংয়ে ১৪ বলে ২১ রান করার পর বল হাকে চার ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। দু’দলের মধ্যে ম্যাচে সামান্য যা একটু পার্থক্য সেটা গড়ে দিয়েছেন আফিফই।
প্রতিপক্ষ আনকোড়া মালয়েশিয়া বলেই হয়তো ব্যাটাররা হালকা মেজাজেই শুরু করেছিলেন ম্যাচটা। তাতেই বিপদ। তিন রান তুলতে না তুলতেই সাজঘরে প্রথম তিন ব্যাটার। দুই ওপেনারের ডাক। তিন নম্বরে নামা জাকিরও এক রান তুলেই আউট।
ঘোরতর এই বিপদে একপ্রান্ত আগলে রেখে অধিনায়ক সাইফ হাসান করেন ৫২ বলে ৫০ রান। আফিফের ঝড়ো ক্যামিও, শাহাদাত হোসেন দিপুর ২১ ও জাকের আলীর ১৪ রানের ইনিংসে লড়াই করার পুঁজি পায় বাংলাদেশ দল। নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে করে ১১৬ রান।
হ্যাঁ, টি-টোয়েন্টির বিবেচনায় এটাকে লড়াই করার জন্য যথেষ্ট কোনো ভাবেই বলা যায় না। তবে, হাঙজুর উইকেট বেশ স্লো। তার ওপর প্রতিপক্ষ বিবেচনা করে আশা দেখছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একটা সময় ম্যাচে ভালভাবে ফিরেও এসেছিল যখন মালয়েশিয়া ১৮ রান তুলতেই তিন ব্যাটারকে হারায়। এরপর ম্যাচের ধারায় ফিরলেও আবারও ধস নামে মালয়েশিয়ার ব্যাটিংয়ে। ৭২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় তাঁরা। তবে, ভিরানদীপ ৩৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলার পথে আগলে রাখেন এক প্রান্ত।
শেষ ওভারে তিনি আউট হওয়ার পরই লজ্জা থেকে বাঁচে অধিনায়ক সাইফ হাসানের দল। অভিজ্ঞতার অভাবে হারে মালয়েশিয়া। তিন উইকেট নেন রিপন মণ্ডল। মালয়েশিয়ানদের কান্নায় শেষ হয় কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ। ম্যাচ না জিতলেও হৃদয় ঠিকই জিতে নিয়েছে মালয়েশিয়া দল।
এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটা একটা ওয়েক আপ কলও বটে। কারণ, পারফরম্যান্সের এই হাল হলে পদকের স্বপ্ন অপূর্ণই থাকবে।