ম্যাচের আগে সমান সমান লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল; কেউ কেউ তো আরো এক কাঠি সরেস, ভেবেছিলেন অস্থিতিশীল বাংলাদেশ বুঝি পেরে উঠবে না আফগানিস্তানের সাথে। কিন্তু বাইশ গজে ঠিকই টাইগাররা বুঝিয়ে দিয়েছে নিজেদের শক্তি; হিংস্র আঘাতে রীতিমতো লন্ডভন্ড করে দিয়েছে আফগান শিবির।
টসে জিতে এদিন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আফগানিস্তানকে ব্যাটিং পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন, শুরুটা অবশ্য ভালোই করেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান।
বাংলাদেশের পেসারদের সামলে সাবলীল গতিতেই রান তুলতে থাকেন তাঁরা। তবে সেখানে বাঁধা হয়ে যান স্বয়ং সাকিব, ইব্রাহিমকে আউট করে প্রথম আঘাত হানেন তিনি।
অভিজ্ঞ রহমত শাহ দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিতে চাইলেও সফল হতে পারেননি টাইগার কাপ্তানের জন্য, ৮৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পরেই আস্তে আস্তে খোলসে ঢুকে পড়ে আফগানরা। একের পর এক ডট খেলে শেষমেশ বিদায় নেন হাসমতউল্লাহ শহীদিও; কয়েক বল পরে একই পরিণতি বরণ করেন গুরবাজ।
সমর্থকদের শেষ ভরসা হিসেবে ছিলেন নাজিব,নবী জুটি। কিন্তু তাঁরাও পারেননি দলকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিতে, ১২৬ রান তুলতেই ছয় ব্যাটার ফিরে যান সাজ ঘরে – কার্যত তখনই ২০০ পেরুনোর আশা শেষ হয়ে যায় দলটির।
যদিও লোয়ার অর্ডারে রশিদ, মুজিবদের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে না পারায় এর কাছাকাছিও করতে পারেনি আফগানিস্তান, ১৫৬ রানেই অলআউট হয়েছে।
মামুলি টার্গেট তাড়া করতে নেমে অহেতুক তাড়াহুড়ো করে বসেন তানজিদ হাসান তামিম। ফলাফল, বিশ্বকাপ অভিষেকে রান আউট। লিটন দাসও পারেননি প্রস্তুত ম্যাচের ফর্ম মূল পর্বে টেনে আনতে, আউট হয়েছেন ১৩ রানে। তিন নামা মেহেদি মিরাজ অবশ্য আরো একবার দেখান ব্যাটিং সামর্থ্য; মুজিব, ফারুকীকে সামলান স্বাচ্ছন্দ্যেই।
শান্তকে সঙ্গে নিয়ে এই অলরাউন্ডারের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে আর কোন উইকেট হারিয়ে দলীয় শতরান ছুঁয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সেই সাথে ফিফটি তুলে নেন তিনি। খানিক পরে যদিও ছন্দপতন ঘটে, নাভিন উল হকের বল তুলে মারতে গিয়ে মিড অন ক্যাচ দেন এই ডানহাতি, ব্যক্তিগত ৫৭ রানেই ফিরতে হয় তাঁকে।
অন্য প্রান্তে অবিচল শান্তও পেয়ে যান বিশ্বকাপ অভিষেকে হাফসেঞ্চুরির স্বাদ। ১৪ রান করে সাকিব আউট হলেও তিনি খেলেছেন শেষপর্যন্ত। চলতি বছর রান মেশিন হয়ে ওঠা এই তারকা — রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন। — বল আর সাত উইকেট হাতে রেখে উদ্বোধনী ম্যাচে বড় জয় পায় টিম টাইগার্স।
২০১৫ এবং ২০১৯ সালের পর টানা তৃতীয়বার নিজেদের প্রথম ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলো বাংলাদেশ। এবার লক্ষ্য নতুন ইতিহাস গড়ার, আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেয়া ইতিহাস গড়ার জ্বালানি ইতোমধ্যে পেয়ে গিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।