মার্টিনেজদের ঠেকাতে বদলে যাচ্ছে ফিফার নিয়ম

রোমাঞ্চকর এক বিশ্বকাপ ফাইনালই মঞ্চায়িত হয়েছিল কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের মঞ্চে। ১২০ মিনিটের খেলা সমতায় শেষ হবার পর শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা।

স্নায়ুশক্তির পরীক্ষা নেয়া সেই টাইব্রেকারে লড়াইটা মূলত ছিল দুই গোলরক্ষক হুগো লরিস আর এমিলিয়ানো মার্টিনেজের মধ্যে। নিজের নার্ভ ধরে রেখে আর প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের স্লেজিং করে নিজের কাজে শতভাগ সফল এমি।

তবে টাইব্রেকার চলাকালীন এমির আচরণ নিয়ে এরপরই শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। পেনাল্টি কিক নেবার সময় ফরাসি খেলোয়াড়দের মনসংযোগ নষ্ট করার আলোচনা হয় গোলরক্ষক এর আচরণের পরিসীমা নিয়ে।

ওই জের ধরে এবার পেনাল্টি কিক নেবার সময় খেলোয়াড়দের আচরণের ধারা গুলোতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ফিফা। কোনো গোলরক্ষক যেন পেনাল্টি নেবার সময় কারো মনসংযোগে অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ব্যাঘাত ঘটাতে না পারেন সে দলের জন্য নতুন নিয়মের প্রবর্তন ঘটতে যাচ্ছে।

লুসাইল স্টেডিয়ামে ১৬ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। তিনটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে ফাইনালের নায়ক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। মাইন্ডগেমে ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের ভড়কে দেবার কৌশলে পুরোপুরি সফল আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।

ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় স্পট কিক নিতে আসা কোম্যানকে চাপে ফেলতে কাল বিলম্ব করতে থাকেন মার্টিনেজ। বারবার রেফারির সাথে কথা বলে কোম্যানকে অপেক্ষায় রাখেন তিনি। তার তাতেই মনযোগে ব্যাঘাত ঘটে কোম্যানের। লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি।

তৃতীয় স্পট কিক নিতে আসা অরেলিয়ে চুয়ামেনির ক্ষেত্রেও একই কাজ করেন মার্টিনেজ। অনবরত চুয়ামেনিকে স্লেজিং করতে থাকেন তিনি। আর সেই স্লেজিংয়ের ফলেই কিনা তৃতীয় শটটিতেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ফ্রান্স। বিশ্বকাপ শিরোপা হাতছাড়া হয় তাঁদের।

তবে শুধু মার্টিনেজ নয়। পেনাল্টি কিক বা টাইব্রেকারের সময় অনেক গোলরক্ষকই এমন মাইন্ডগেমের আশ্রয় নিয়ে থাকেন। কিক নিতে আসা ফুটবলারদের মনসংযোগ নষ্ট করাই যার মূল উদ্দেশ্য। তাই এ ঘটনা ঠেকাতে বদলে যাচ্ছে পেনাল্টির নিয়ম।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্যা মিরর জানাচ্ছে, আগামী মার্চেই লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবর্তন আনা হবে পেনাল্টির নিয়মে।

মিররের প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, সেই সভায় গোলরক্ষকদের আচরণ নিয়েও আলোচনা হবে। গোলরক্ষকরা যেন স্পট কিক নিতে আসা ফুটবলারদের স্লেজিং করে মনযোগে ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে সেটি নিশ্চিতের দিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। স্লেজিং বা ইচ্ছাকৃত ভাবে মনসংযোগে ব্যাঘাত ঘটানোর প্রচেষ্টা করলে নিষিদ্ধ হতে পারেন সেই গোলরক্ষক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link