বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাইশ গজের ময়দানে পুত্রের আবির্ভাব। ক্রিকেট ইতিহাস এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছে অনেকবার। এমনকি পিতা-পুত্রের যুগলবন্দীও দেখা গেছে বহুবার। সেই শত বছর আগে ডব্লিউ জি গ্রেস তাঁর পুত্রের সঙ্গে একই সাথে খেলেছিলেন বেশ কিছু ম্যাচ। এরপর ১৯৯৬ সালে একবার জিম্বাবুইয়ান পেসার হিথ স্ট্রিক আর তাঁর বাবা ড্যানিশ স্ট্রিক এক সঙ্গে খেলেছিলেন প্রথম শ্রেণির ম্যাচ।
আমাদের দেশের রকিবুল হাসানও তাঁর পুত্রকে নিয়ে একসাথে ওপেনিং করেছিলেন। ঢাকা লিগের ম্যাচে, সূর্য তরুণের হয়ে। আবার বাবা লালা অমরনাথের বিপক্ষে একবার একটি ম্যাচ খেলেছিলেন পুত্র মহিন্দর অমরনাথ। অবশ্য, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন নজির নেই একটিও। তবে বাবার পর ক্রিকেটে এসেছেন পুত্র, এমনকি কেউ কেউ অর্জনে পিতাকেও ছাপিয়ে গেছেন। এমন কিছুর সাক্ষী বেশ ক’বার হয়েছে ক্রিকেট।
এই যেমন ইংল্যান্ডের সাবেক পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের গল্পটা। বাবা ক্রিস ব্রড ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছিলেন ২৫ টা টেস্ট। কিন্তু ক্রিসপুত্র স্টুয়ার্ট পরবর্তীতে ছাপিয়ে গেছেন বাবাকেও। ইংল্যান্ডের হয়ে ১৬৭ টেস্টে নিয়েছেন ৬০৪ উইকেট।
তবে বাবা ক্রিস ব্রড ক্রিকেট ছাড়লেও তিনি বর্তমানে ম্যাচ অফিশিয়ালের দায়িত্ব পালন করেন। ম্যাচ রেফারি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তিনিই প্রদান করে থাকেন। তো সেই ধারাবাহিকতায় ক্রিকেট আইন একবার ইংলিশ এই বাবা আর পুত্রকে বিপরীত মেরুতে দাঁড় করিয়েছিল। বাবা ক্রিস ব্রডের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড!
বেশিদিন আগের কথা না। ২০২০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্টে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। সেই ম্যাচের রেফারি আবার ছিলেন তাঁরই বাবা ক্রিজ ব্রড। তবে সে কারণে কোনো ছাড়ই পাননি পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। বাবা-ছেলের সম্পর্কটা দূরে ঠেলে দিয়ে সে সময় ক্রিস ব্রড করেছিলেন ন্যায় বিচার। ছেলে স্টুয়ার্ট ব্রডকে তিনি জরিমানা করেছিলেন ম্যাচ ফি’র ১৫ শতাংশ। এতে একটা রেকর্ডও হয়ে যায় তখন। ক্রিকেট ইতিহাসে বাবার কাছে জরিমানা গোনা স্টুয়ার্টই প্রথম খেলোয়াড়।
মূলত ঐ টেস্টের চতুর্থ দিন সকালে ৪৬তম ওভারে ইয়াসির শাহ উইকেটের পিছনে ধরা পড়তেই অশোভনীয় ভাষায় গালি দিয়েছিলেন স্টুয়ার্ট। পরবর্তীতে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্টুয়ার্ট নিজের অপরাধ স্বীকার করে শাস্তি মেনে নেন। যে কারণে আনুষ্ঠানিক শুনানির আর প্রয়োজন হয়নি। তবে বাবার কাছে এমন শাস্তি পেয়ে পুত্র স্টুয়ার্ট পরে নিজেও মজা নিয়েছিলেন একটি টুইট বার্তায়। সে সময় তিনি মজা করে লিখেছিলেন, বাবাকে বড় দিনের কার্ড ও উপহারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে!